জোয়ারের পানিতে ভাসছে ভোলা: ২০ গ্রাম প্লাবিত, হাজারো মানুষ পানিবন্দি
মোঃ সামিরুজ্জামান, ভোলা প্রতিনিধি: বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপ এবং অমাবস্যার সম্মিলিত প্রভাবে ভোলার মেঘনা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে জেলার উপকূলীয় অঞ্চলের বিস্তীর্ণ জনপদ প্লাবিত হয়েছে, বিশেষ করে বাঁধের বাইরের অন্তত ২০টি গ্রাম এখন পানির নিচে। আকস্মিক এই বন্যায় হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।
জোয়ারের পানিতে রাস্তাঘাট, বাড়িঘর, ফসলি জমি এবং মাছের ঘের তলিয়ে গেছে। ভোলা-লক্ষ্মীপুর রুটের ফেরিঘাট প্লাবিত হওয়ায় যানবাহন চলাচল ব্যাহত হচ্ছে, ফলে উভয় পাড়ে আটকে পড়া যাত্রীরা সীমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন।
সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ভোলা সদর, চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলার বাঁধের বাইরের গ্রামগুলো। সরেজমিনে সদরের রাজাপুর ও ইলিশা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, বসতঘর ও বাড়ির আঙিনায় কোথাও হাঁটু পানি, আবার কোথাও কোমর সমান পানি। বহু বাড়ির রান্নাঘর ডুবে যাওয়ায় চুলা জ্বালানো সম্ভব হচ্ছে না। এতে দুর্গত এলাকাগুলোতে মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে। আকস্মিক এই বন্যায় সবকিছু ভেসে যাওয়ায় পানিবন্দি মানুষ মারাত্মক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।
রাজাপুর ইউনিয়নের পানিবন্দি বাসিন্দা আমেনা বেগম ও রোকসানা বেগম বলেন, “সকাল থেকে বৃষ্টি আর বাতাস ছিল, দুপুরে নদীতে প্রচণ্ড ঢেউ ওঠে। এরপরই হঠাৎ করে লোকালয়ে জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে। এখন আমরা সবাই গৃহবন্দি। চরম দুর্ভোগে আছি।”
এ বিষয়ে ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান জানান, “মেঘনার পানি তজুমদ্দিন পয়েন্টে বিপদসীমার ১৪৭ সেন্টিমিটার এবং দৌলতখান পয়েন্টে ৭৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা এই মৌসুমে সর্বোচ্চ। এর ফলে বাঁধের বাইরের কিছু নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। তবে জোয়ারের পানি নেমে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।”
এদিকে, ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে দ্রুত ত্রাণ ও সহায়তা পৌঁছানোর দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করছেন পানিবন্দি মানুষ।