পাবিপ্রবির ছাত্রী হলে প্রভোস্টের স্বাক্ষর পেতে ভোগান্তি
মনিরুল ইসলাম,পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি : পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (পাবিপ্রবি) সেমিস্টার ফাইনালের ফর্ম ফিল আপের সময় হল প্রভোস্টদের স্বাক্ষর নিতে হয়। ছাত্র হলের প্রভোস্টদের স্বাক্ষর নিতে ছাত্রদের ভোগান্তিতে পড়তে না হলেও ছাত্রী হলের প্রভোস্টের স্বাক্ষর পেতে প্রতি সেমিস্টারেই ছাত্রীদের বেশ বেগ পোহাতে হয়। শুধু হল প্রভোস্টই না, স্বাক্ষর নিতে যাওয়ার সময় হলের স্টাফদের অসধাচারণেরও। বারবার এসব বিষয়ে ছাত্রীরা অভিযোগ জানিয়ে আসলেও এর কোন সমাধান মিলছেনা বলে তারা জানান। তবে হল প্রভোস্টের দাবি, স্বাক্ষর পেতে ছাত্রীদের কোন ভোগান্তি পোহাতে হয়না।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সেমিস্টার ফাইনালের সময় ছাত্রী হলের প্রভোস্টের স্বাক্ষর পেতে হলে প্রথমে ফর্ম ফিলাপের কাগজ হল অফিসে রেখে যেতে হয়। এরপরের দিন একটা নির্দিষ্ট সময়ে হলে এসে ঐ ফর্ম নিয়ে যেতে হয়। কোন ছাত্রীর যদি জরুরি ভিত্তিতে স্বাক্ষর প্রয়োজন হয় সেটা বিবেচনা করেন না হল প্রভোস্ট। শুধু স্বাক্ষর পেতেই ভোগান্তি নয় ফর্ম ফিল আপের কাগজ জমা দিতে এলে হলের মহিলা স্টাফরা ছাত্রীদের সাথে অসদাচরণ করেন, কোন প্রয়োজন হলে সে ব্যাপারে তারা ছাত্রীদের সহযোগিতা করেন না। হলের স্টাফদের কাছে কোন প্রয়োজনীয় জিনিস চাইলে এমনকি একটি কলম চাইলেও তারা বিরক্তি প্রকাশ করেন। এক্ষেত্রে হলের আবাসিক ছাত্রীদের চেয়ে অনাবাসিক ছাত্রীদের বেশি ভোগান্তির সম্মুখীন হতে হয়।
ছাত্রীদের অভিযোগ, সেমিস্টার ফাইনালের আগে এমনিতেই পড়াশোনার চাপ থাকে। শহরের কোন মেস থেকে ক্যাম্পাসে হল প্রভোস্টের স্বাক্ষরের জন্য আসা যাওয়া করতে দিন শেষ হয়ে যায়। এর সাথে ব্যাংকে লাইন ধরে টাকা জমা দেওয়ার বিষয় আছে। এভাবে ফর্ম ফিল আপ নিয়েই দুইদিন শেষ হয়ে যায়। অনেকের ফর্ম ফিল আপের তারিখ পড়ে পরীক্ষার অল্প আগে। ফলে ঐ সময় হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর এবং ব্যাংকে টাকা জমা দিতে অনেক সময় চলে যায়, ফলে পরীক্ষার আগে পড়ার সময় পাওয়া যায়না।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী বলেন, ‘সকালে ব্যাংকে টাকা জমা দিয়ে হল প্রভোস্টের স্বাক্ষর নিয়ে ফর্মটা বিভাগে জমা দিলেই কাজ শেষ। এতে এক বেলাতেই সব কাজ হয়ে যায়। কিন্তু আমাদের একদিন ফর্ম জমা দিয়ে যেতে হয় আরেকদিন ফর্ম নিয়ে যেতে হয়। এতে করে দুইদিন নষ্ট হয়। এর সাথে স্টাফদের অসদাচারণ তো আছেই।’
আরেক ছাত্রী বলেন, ‘কোন ইমার্জেন্সি আছে, হল প্রভোস্টকে বা সহকারী হল প্রভোস্টকে বললাম স্বাক্ষর দিয়ে দিতে কিন্তু না সেটা দিতে পারবেনা। স্বাক্ষরের জন্য কোন সহকারী হল প্রভোস্টের বিভাগেও যাওয়া যায়না। যদি যাওয়া হয় কেন সেখানে গিয়েছি সেটার জন্য জবাবদিতিতা করতে হয়। অথচ ছাত্র হলের স্বাক্ষর প্রয়োজন হলে, হল প্রভোস্টরা যেখানেই থাকুক উনাদের কাছে গেলে স্বাক্ষর দিয়ে দেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রী হলের প্রভোস্ট ড. জিন্নাত রেহানা বলেন, ‘আগে নিয়ম ছিলো সকালে ফর্ম দিলে দুপুরে আর দুপুরে ফর্ম দিলে পরের দিন ফর্ম ফেরত পাবে। কিন্তু আমি আসার পরে এ নিয়ম পরিবর্তন করার চেষ্টা করেছি। যেদিন যে ফর্ম এসেছে সেটা স্বাক্ষর করে দেয়ার চেষ্টা করেছি। আর আমরা যারা হলের দায়িত্বে আছি তারা ক্লাসের ফাঁকে এসব দায়িত্ব পালন করি। আর সহকারী হল প্রভোস্ট যারা আছেন তারাও স্বাক্ষর করে থাকেন। হয়তো অনেকগুলো ফর্মের মধ্যে কিছু এরকম অনিয়ম হয়।’