

সোহেল খান দূর্জয়,নেত্রকোনা : নেত্রকোনা সদর উপজেলার নরেন্দ্র নগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিলকিস আরা বেগমের বিরুদ্ধে একাধিক অনিয়ম ও দায়িত্বে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের সাম্প্রতিক পরিদর্শনে এসব অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার চিত্র উঠে এসেছে। সংশ্লিষ্ট দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠিয়ে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে।
জানা গেছে, গত ৮ মে ২০২৫ তারিখে বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. আসাদুজ্জামান। পরিদর্শন প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বিদ্যালয়ে ২০২৫ শিক্ষাবর্ষে শ্রেণি রুটিন এখনো তৈরি হয়নি। শিশু জরিপ, প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির রেজিস্টার, ছুটির তালিকা, কাব স্কাউট, স্লিপ এবং জমি-সম্পর্কিত কোনো রেকর্ড প্রধান শিক্ষকের কাছে পাওয়া যায়নি।
এছাড়া, বিদ্যালয়ে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষক থাকা সত্ত্বেও প্রাক-প্রাথমিক শ্রেণির পাঠদান করানো হচ্ছে একজন প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকের মাধ্যমে। শ্রেণিকক্ষগুলো অত্যন্ত নোংরা এবং ওয়াসব্লক দীর্ঘদিন ধরে তালাবদ্ধ ও ব্যবহারের অনুপযোগী। এমনকি জাতীয় পতাকা উত্তোলনের জন্য কোনো পতাকা স্ট্যান্ডও নেই।
সবচেয়ে গুরুতর বিষয় হলো, প্রধান শিক্ষক বিলকিস আরা বেগম পরিদর্শনের দিন বিদ্যালয়ে উপস্থিত হন সকাল ১০টা ৫৪ মিনিটে। এলাকাবাসী ও অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষকের নিয়মিত উপস্থিতি এবং কার্যক্রম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই অসন্তোষ বিরাজ করছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “পরিদর্শনে যেসব অনিয়ম পাওয়া গেছে তা লিখিতভাবে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে জানানো হয়েছে। বিভাগীয় ব্যবস্থার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।”এ সংক্রান্ত চিঠি ইতোমধ্যেই জেলা শিক্ষা অফিসারের দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। চিঠির স্মারক নম্বর: ৩৮.০১.৭২৭৪.০০০.০০০.৩১.০০০১.২৫. ৭২১ এবং তারিখ ১৬ জুন ২০২৫।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ শহীদুল আজম বলেন, “প্রধান শিক্ষককে সাত কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। ব্যাখ্যা পাওয়ার পর বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য চূড়ান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হবে।”এ ঘটনায় শিক্ষা মহলে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন, একজন দায়িত্বশীল প্রধান শিক্ষক কীভাবে এ ধরনের গাফিলতির পরিচয় দিতে পারেন। প্রধান শিক্ষক বিলকিস আরা বেগম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।