সাংবাদিকের কাজে বাধা ও মোবাইল কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে।
আলিফুল ইসলাম আলিফ – সোহরাওয়ার্দী কলেজ প্রতিবেদক,
রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও নগর বার্তার ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান গতকাল রাত ১০টা ৩০মিনিটের দিকে তার পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে হেনস্তার শিকার ও তার মোবাইল কেড়ে নিয়ে ভিডিও ফুটেজ ডিলেট করার অভিযোগ অত্র কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসানের বিরুদ্ধে।
গতকাল ১৮ই মার্চ সন্ধ্যায় রাজধানীর সরকারি শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজের এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে বিহঙ্গ পরিবহনের বাস হেলপারের দুর্ব্যবহারের জেরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিহঙ্গ পরিবহনের ছয়টি বাস আটক করে। পরক্ষণে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠলে কিছুক্ষণ পর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তানজিলসহ বেশ কিছু নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী কলেজে এসে বাসগুলো ছেড়ে দেওয়ার জন্য আলোচনায় বসে। উক্ত আলোচনাকে ঘিরে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতণ্ডা ও ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনা ঘটে। এই উত্তপ্ত সময়ের ফুটেজ সংগ্রহ করছিলেন সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির সদস্য ও নগর বার্তার প্রতিনিধি মাহবুবুর রহমান। এমন সময় মাহবুবুর রহমানের মোবাইল কেড়ে নিয়ে উক্ত মোবাইলের ফুটেজ ডিলেট করে এবং তাকে আর ভিডিও করলে থাপড় দিবে বলে হুমকি দেয় সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান।
এই ঘটনার পর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। সোহরাওয়ার্দী কলেজ সাংবাদিক সমিতির এক সদস্য বলেন,
“একজন সাংবাদিকের প্রতি এমন আচরণ নিন্দনীয়। এটি স্বাধীন সাংবাদিকতা ও শিক্ষার্থীদের তথ্য জানার অধিকারকে খর্ব করে। আমরা এর সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষীদের শাস্তি চাই।”
সাংবাদিকদের নিরাপত্তা এবং শিক্ষার্থীদের গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এই নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।শিক্ষার্থীদের দাবি, সাংবাদিকদের নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা বন্ধ করতে হবে এবং এই ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
উক্ত বিষয়টি নিয়ে ঘটনা স্থলে থাকা দৈনিক মানবকন্ঠের রিপোর্টার ফেরদৌস ইসলাম সাগর তার ফেসবুকে এর প্রতিবাদ করে লিখেন- সাংবাদিকের ফুটেজ ডিলিট করতে বাধ্য করা অন্যায়। তাহলে তো ভাই আপনিও ফ্যাসিস্ট তাহার কি দোষ ছিল। তখন যারা তেলবাজি করেছে তারাও তাদের জায়গা থেকে ঠিক করেছে।
এ প্রসঙ্গে ভুক্তভোগী সাংবাদিক মাহবুবুর রহমান বলেন,
“আমি আমার পেশাগত দায়িত্ব পালন করছিলাম। তখন হঠাৎ সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসান আমার কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেন এবং সব ভিডিও মুছে ফেলেন। এমনকি আর ভিডিও করলে থাপড় দিবে হবে বলেও হুমকি দেন।”
এ বিষয়ে ছাত্রদলের অভিযুক্ত সাংগঠনিক সম্পাদক কামরুল হাসানকে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন- আপনারা আগামীকাল আসেন সাংবাদিক সমিতির রুমে বসে শুনেন ঘটনাটা কি হয়ছে, ঘটনা শুনলে বিশ্লেষণ করা যায় তখন কোনটা হয়ছে কোনটা রটায়ছে সেটা বের করা যায়। মাহবুবের হাত থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়া এবং ফুটেজ ডিলেট করা এরকম কিছুই হয়নি। আপনারা আসেন সামনাসামনি কথা বলি।
সোহরাওয়ার্দী কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিনের কাছে উক্ত বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ব্যাপারে আমি অবগত নই। আপনার কাছ থেকেই প্রথম জানতে পারলাম।
তিনি বলেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু ছোটভাই ঘটনাস্থলে আসছিল কথা হচ্ছিল তবে ফুটেজ ডিলিট করবার বিষয়ে আমি কিছু জানি না। তবে ঘটনার সত্যতা পেলে অবশ্যই সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নিব।