রাজশাহী থেকে হাবিব জুয়েল : সম্প্রতি রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান মাদক ও সন্ত্রাস বিস্তার প্রতিরোধে সাংবাদিকদের সাথে মত বিনিময় করেছেন। সেই সাথে মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থানে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহন করেছেন। যা শিক্ষা নগরী রাজশাহীবাসীর জন্য আশীর্বাদ স্বরুপ। তবে ছাত্র জনতার আন্দোলনের মুখে পুলিশসহ সংশ্লিষ্ট প্রশাসন স্থবির থাকায় রাজশাহী মহানগরীর এলাকায় এলাকায় মাদকের দূর্গ গড়ে উঠেছে। বিশেষ করে রাজশাহী মহানগরীর রাজপাড়া থানার লক্ষিপুর আইডি বাগানপাড়া এখন মাদকের ওপেন হাউস। হাত বাড়ালেই সেখানে পাওয়া যাচ্ছে হেরোইন, ইয়াবা, গাঁজা, ফেন্সিডিলসহ মরনঘাতি ক্রিস্টাল ম্যাথ।
সরেজমিন অনুসন্ধানে গিয়ে দেখা যায়, রাজশাহী মহানগরীর আইডি বাগানপাড়ায় প্রকাশ্যে মাদক বিক্রি করছে ওই এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী লাকি, বুলবুলি, বুলবুলির ছেলে নাহিদ, স্বপন, স্বপনের মা – সুফিয়া, স্বপনের ভাই রতন ও জলি । এ ভাবেই দিনরাত ২৪ ঘন্টা লক্ষিপুর আইডিবাগান পাড়া ও রেল লাইনের ধারে রমরমা মাদক ব্যবসা চলছে। বাড়ির সামনেই যেন মাদকের হাট বসেছে এমনই অভিযোগ খোঁদ এলাকাবাসীর। এ বিষয়ে রাজশাহী মহানগরীর লক্ষিপুর আইডি বাগানপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও রাজশাহী বরেন্দ্র কলেজের শিক্ষিকা নাজনিন সুলতানা বলেন – প্রতিদিন চিহ্নিত মাদক কারবারিদের কাছে হেরোইন, গাঁজা, ফেনসিডিল, ট্যপান্টাডল টেবলেটসহ রাজশাহী নগরীর বিভিন্ন এলাকা থেকে যুবকরা এসে প্রকাশ্যে ক্রয় করে নিয়ে যাচ্ছে। দিন রাত ২৪ ঘন্টা মাদক কারবারিরা সক্রিয় ভাবে মাদক বিক্রি করছে এই এলাকায়। এলাকাবাসীদের মধ্যে কেউ কেউ তাদের মাদক কারবারে বাধা দিলে পড়তে হয় মাদক কারবারিদের হামলা, মামলাসহ হুমকির মুখে। এছাড়াও রাজশাহী মহানগর ডিবির কন্সটেবল মাহাফুজ প্রকাশ্য দিবালোকে সকাল সন্ধ্যা এসে মাদক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে মাসোহারা নিয়ে যান। আমার বাড়ি ৩য় তলা থেকে আমি স্পষ্ট দেখতে পাই কারা মাদম বিক্রি করছে আর কারা আশ্রয় দিচ্ছে।
এই শিক্ষিকা আরোও বলেন -স্থানীয় থানা সক্রিয় থাকলেও একমাত্র রাজশাহী মহানগর ডিবির কন্সটেবল মাহাফুজের কারনেই এই এলাকায় মাদকের ব্যবসা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। তিনি গত ২৫ তারিখ বিকালে এসেও মাদকের টাকা তুলতে এসেছিলেন। রক্ষক যদি ভক্ষক হয় তাহলে আপনার আমার কি করার আছে? রাজশাহী লক্ষিপুর আইডি বাগানপাড়ার আরেক বাসিন্দা ও রাজশাহী জেলা জজ কোর্টের এডভোকেট জামিল জানান – আমাদের এই এলাকার সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে মহিলা পুরুষসহ ৮ থেকে ১০ জন মাদক কারবারি রয়েছে। দীর্ঘদিন যাবত মাদক ব্যবসা করলেও তাদের কাউকে কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করলেও ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়েছে রাজশাহী মহানগরীর চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার আসামী ও মাদকের গডফাদার রুবেল। রুবেল, লক্ষিপুর আইডি বাগাপাড়ার রেললাইন এলাকার রাব্বুল শেখের ছেলে। আর এই গডফাদার রুবেলের অন্যতম হাতিয়ার রাজশাহী মহানগর ডিবির কন্সটেবল মাহাফুজ। অথচ এই বছরেই হেরোইন বিক্রির ঘটনায় অডিও রেকর্ড ফাঁস হয় রাজশাহী মহানগর ডিবির কন্সটেবল মাহফুজের। অথচ ডিবির কন্সটেবল মাহফুজ বহাল তবিয়তে ডিবিতেই চাকুরী করছে? আমাদ প্রশ্ন যে পুলিশ সদস্যের হেরোইন বিক্রির অডিও ভাইরাল হয় সে কিভাবে বহাল তবিয়তে কর্মস্থলে থাকে। তবে স্থানীয় ছাত্র জনতা দাবি তুলেছে অচিরেই যদি লক্ষিপুরের এই আইডি বাগানের মাদক ব্যবসায়ী ও তাদের মদদদাতা পুলিশ কন্সটেবল মাহাফুজের যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন না করা হয় তবে বাধ্য হয়ে অত্র এলাকাকে মাদকমুক্ত করার লক্ষ্যে এলাকাবাসী মানববন্ধনসহ বৃহত্তর কর্মসূচি ঘোষনা করবে।
মাদক ব্যবসায়ীদের গডফাদার রুবেল যাদের দিয়ে ব্যবসা করান তাদের তালিকা নিম্নে দেওয়া হলো –

লাকি – মৃত জনি – হিরোইন ওই ইয়াবা।

বুলবুলি – পিতা – মাহাবুর – গাঁজা চুয়ানি বাংলা মদ।

বুলবুলির ছেলে নাহিদ – গাঁজা, চুয়ানি, বাংলা মদ।

স্বপন – পিতা – দুলু – গাঁজা ব্যবসায়ী।

স্বপনের মা – সুফিয়া – হিরোইন, ইয়াবা, গাঁজা।

স্বপনের ভাই রতন – হিরোইন ও ইয়াবা।

জলি – স্বামী রফিক – হিরোইন, ইয়াবা, গাঁজা।
সার্বিক বিষয়ে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন জানিয়েছেন – মাদকের বিরুদ্ধে আমরা জিরো টলারেন্স। মাদক কারবারি যেই হোক তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।