ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা, নেত্রকোণায় হু হু করে বাড়ছে নদীর পানি

Share the post
সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা : নেত্রকোণায় বৃষ্টি আর ঢলের পানিতে প্রধান তিনটি নদীর পানি হু হু করে বেড়েই চলেছে। এর মধ্যে উব্ধাখালি নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়াও কংশ ও ধনু নদীর পানিও আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। এতে করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, বৃষ্টি আর ঢলের পানিতে জেলার প্রধান তিনটি নদী উব্ধাখালি, কংশ ও হাওরাঞ্চলের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ধনুর পানি হু হু করে বাড়ছে। সারোয়ার জাহান আরও জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ উব্ধাখালি নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে বয়ে চলেছে। সেখানে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কংশের পানি বেড়ে জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার ও  ধনু নদীর পানি খালিয়াজুরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। এর আগে, বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি উপচে লোকালয়ে ঢুকে দুই দফা বন্যায় জেলার অন্তত ৬টি উপজেলার দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। এখনও ক্ষতিগ্রস্তরা সেই বন্যার ক্ষয়ক্ষতিই কাটিয়ে উঠতে পারেননি।
আরোও জানা গেছে, টানা বৃষ্টিতে ভারতের মেঘালয়ে ভয়াবহ বন্যায় ১৪ জন মারা গেছেন। ভারতের পার্বত্য অঙ্গরাজ্য মেঘালয়ে উৎপত্তি সোমেশ্বরী নদীর। সেই সোমেশ্বরী নদীর পানির তোড়ে ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে মেঘালয়ের বহু গ্রাম। জানা গেছে, আকস্মিক এই বন্যায় নিখোঁজ হয়েছে অন্তত ১২০ জন। তাদের মধ্যে ২৩ জন ভারতীয় সেনাও আছেন। প্রবল পানির চাপে  ফারাক্কার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় বাংলাদেশেও সোমেশ্বরী,কংশ ও ধনু নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। ভারতের উজান থেকে ধেয়ে আসা ঢলে নেত্রকোনার সোমেশ্বরী ও উদ্ধাখালী নদীর পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। প্রবাহিত হচ্ছে প্রবল স্রোত। ইতোমধ্যে ধনু নদীর পাশে হাওর অঞ্চলের বসতবাড়ি এবং ফসলি জমিতে পানি উঠতে শুরু করেছে। কংশ নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলের অনেক ঘর-বাড়িতেও পানি উঠেছে। এদিকে সোমেশ্বরী, কংশ, ধনু ও উদ্ধাখালী নদীর ভয়ঙ্কর রূপ দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন নদীর পাড়ের মানুষরা। ধনু নদীর সংলগ্ন চাকুয়া,লেপসিয়া, জগন্নাথপুর, মেন্দীপুর, পাঁচহাট, এবং মোহনগঞ্জ উপজেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা রয়েছে। উদ্ধাখালী, সোমেশ্বরী,কংশ ধনু নদীর পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে সতর্কতা জারি করা হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড থেকে। নদী তীরবর্তী মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের আশঙ্কা, দেশের উত্তর পূর্বাঞ্চলে নদীর পানি বিপদসীমার ৫০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা এবং স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে, যে কোনো সময় ভয়ঙ্কর বন্যা দেখা দিতে পারে। সোমেশ্বরী, উদ্ধাখালী, কংশ ও ধনু নদীর অববাহিকার জেলার ১০টি উপজেলায় আগাম বন্যার খবর জানানোর কাজ করছে প্রশাসন। এতে স্থানীয়দের যত দ্রুত সম্ভব নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার আহ্বানও জানানো হচ্ছে। এদিকে পূর্বধলা উপজেলার ১১নং গোহালাকন্দা ইউনিয়নেরও শ্যামগঞ্জ বাজারের পাশে অনেক বাসা বাড়ি, দোকান পাট ও ভূমি অফিস সহ সংলগ্ন আশ পাশের ৫০ থেকে ৭০টি পরিবার ঘরবন্দি হয়ে মানবেতর জীবন যাপন করতেছে। এছাড়াও পূর্বধলা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।
নেত্রকোনা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সারোয়ার জাহান জানান, বৃষ্টি আর ঢলের পানিতে জেলার প্রধান তিনটি নদী উব্ধাখালি, কংশ ও হাওরাঞ্চলের মাঝ দিয়ে বয়ে চলা ধনুর পানি হু হু করে বাড়ছে। সারোয়ার জাহান আরও জানান, বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ উব্ধাখালি নদীর কলমাকান্দা পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার কাছাকাছি দিয়ে বয়ে চলেছে। সেখানে বিপৎসীমার ১০ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া কংশের পানি বেড়ে জারিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার ও  ধনু নদীর পানি খালিয়াজুরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ১ দশমিক ১২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বইছে। এর আগে, বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে নদীর পানি উপচে লোকালয়ে ঢুকে দুই দফা বন্যায় জেলার অন্তত ৬টি উপজেলার দেড় শতাধিক গ্রাম প্লাবিত হয়। এখনও ক্ষতিগ্রস্তরা সেই বন্যার ক্ষয়ক্ষতিই কাটিয়ে উঠতে পারেননি। এখন আবার নতুন করে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি ঘটে চলেছে। তবে বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা এবং উপজেলা প্রশাসন প্রস্তুত রয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

ময়মনসিংহের জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের বাসভবনে ১৮ লাখ টাকা ব্যয়ে মুছে ফেলা হয়েছে

Share the post

Share the post হৃদয় আহমেদ ভালুকা, ময়মনসিংহ: রক্তাক্ত জুলাই আগষ্ট চেতনার গ্রাফিতি। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করার পর বিপ্লবী চেতনা ধরে রাখতে শিক্ষার্থীরা ময়মনসিংহ নগরীর বাসা বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি বেসরকারি অফিস ও আদালতসহ জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবনের দেয়াল জুড়ে জুলাই-আগষ্ট চেতনার গ্রাফিতি অঙ্কন করেছি। বিপ্লবী শিক্ষার্থীদের আঁকা সেই রক্তাক্ত জুলাই আগষ্ট […]

ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয় এর উদ্যোগে গাজায় চলমান গণহত্যার প্রতিবাদে অবস্থান কর্মসূচি ও বিক্ষোভ মিছিল

Share the post

Share the postনিউজ রিপোর্ট:৮ এপ্রিল ২০২৫, মঙ্গলবার – ময়মনসিংহ মহানগরের অধীনস্থ ময়মনসিংহ মহাবিদ্যালয় ছাত্রদল গাজায় চলমান ইতিহাসের নৃশংসতম গণহত্যার প্রতিবাদে একটি অবস্থান কর্মসূচি এবং বিক্ষোভ মিছিল আয়োজন করে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তারা বিশ্বের প্রতি আহ্বান জানায়, গাজায় হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে এবং মানবাধিকারের প্রতি সম্মান দেখাতে।   মহাবিদ্যালয়ের ছাত্রদল সদস্যরা সকাল ১১ টার দিকে মিছিলটি শুরু […]