

নুর মোহাম্মদ, কক্সবাজার প্রতিনিধি :মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের সশস্ত্র সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি-আরসার প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনিকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
মঙ্গলবার বিকালে বাংলাদেশে অবৈধ অনুপ্রবেশ ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগে দুটি মামলায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তাকে নারায়ণগঞ্জ জেলা আদালতে হাজির করা হয়। তার সঙ্গে আরও পাঁচ সহযোগী ছিলেন।
বিচারক তাদের ছয়জনের প্রত্যেকের ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন বলে আদালত পুলিশের পরিদর্শক কাইউম খান জানান।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মঈনুদ্দিন কাদিরের আদালতে তোলা হয় তাদের। এদের মধ্যে ছয়জনের বিরুদ্ধে দুটি মামলায় পাঁচ দিন করে মোট ১০ দিন করে রিমান্ড আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত পাঁচ দিন করে দুই মামলায় মোট ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন মঞ্জুর করেছেন।
জুনুনি ছাড়া বাকি পাঁচ আসামি হলেন- আরসার সদস্য মোস্তাক আহাম্মদ (৬৬), মনিরুজ্জামান (২৪), সলিমুল্লাহ (২৭), মো. আসমত উল্লাহ (২৪) ও মো. হাসান (৪৩)।
রোব ও সোমবার গভীর রাতে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের ভূমি পল্লি এবং ময়মনসিংহ শহরের নতুন বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরসার প্রধান জুনুনিসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে র্যাব-১১ এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল এ এইচ এম সাজ্জাদ হোসেন জানান।
এর মধ্যে ছয়জনকে রিমান্ডে দিয়েছে আদালত। গ্রেপ্তার বাকি চারজনের মধ্যে তিনজন নারী এবং একজন শিশু। তাদেরকে একই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
র্যাব সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অবৈধ অনুপ্রবেশ, নাশকতা ও সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার অভিযোগে দুটি মামলা করেছে। আসামিদের থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান র্যাব কর্মকর্তা।
সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনূর আলম বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের কাছ থেকে নগদ ২১ লাখ ৩৯ হাজার ১০০ টাকা, একটি চাকু, স্টিলের ধারালো চেইন ও চারটি হাতঘড়ি জব্দ হিসেবে দেখিয়েছে র্যাব।
রোববার গভীর রাতে ময়মনসিংহ নগরীর নতুন বাজার মোড়ের গার্ডেন সিটি ভবনের ১০ তলার ‘এ’ ব্লকে অভিযান চালায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। সেখান থেকে কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করার কথা জানায় স্থানীয়রা।
কিন্তু গ্রেপ্তারদের পরিচয় সম্পর্কে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী স্থানীয় সাংবাদিকদের কিছু জানায়নি।
যদিও স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেছিলেন, অভিযানের পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা আটক ব্যক্তিদের আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মি বা আরসার সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছেন।
ময়মনসিংহের অভিযানের বিষয়ে পুলিশ অবগত ছিল না বলে জানিয়েছিলেন কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি শফিকুল ইসলাম খান। তিনি সোমবার বলেছিলেন, “বিষয়টি নিয়ে তখন আমাদের কিছু জানানো হয়নি। এখন ঢাকা থেকে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। হয়ত মামলা হবে।”
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওসি শফিকুল বলেন, র্যাব ঢাকা থেকে থানায় যোগাযোগ করেছে। তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। হয়ত মামলা হয়ে যাবে। মামলার পর বিস্তারিত বলা যাবে।
২০২২ সালের নভেম্বরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার তমব্রু সীমান্তে মাদকবিরোধী অভিযান চলাকালে হামলায় সামরিক গোয়েন্দা সংস্থার (ডিজিএফআই) এক কর্মকর্তা নিহত হন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি ছিলেন আরসা প্রধান জুনুনি।