অটোভ্যান চালক রাজু হত্যা মূল ঘাতকসহ তিনজন গ্রেফতার, অটোভ্যান উদ্ধার
ইয়াসিন আরাফাত ,চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার পারিলা গ্রামে অটোভ্যান চালক রাজু আহম্মেদ (২১) হত্যা মামলায় চাঞ্চল্যকর মোড় নিয়েছে। ভয়াবহ এ হত্যাকাণ্ডের ৪ দিন পর মূল ঘাতকসহ তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। একইসঙ্গে উদ্ধার করা হয়েছে নিহতের ভ্যানটিও। নিহত রাজু নাচোল পৌরসভার শ্রীরামপুর এলাকার বাসিন্দা ছিলেন।
শনিবার (২৮ জুন) বেলা ১১টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এ.এন.এম. ওয়াসিম ফিরোজ এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, গত ২২ জুন বিকেলে প্রতিদিনের মতো ভাড়ায় চালানোর উদ্দেশ্যে ভ্যান নিয়ে বের হন তিনি। রাত ১০টার পরও বাড়ি না ফেরায় পরিবারের উদ্বেগ বাড়তে থাকে। মোবাইল ফোনে যোগাযোগের একপর্যায়ে রাজু জানায়, “আমি কিছুক্ষণের মধ্যেই বাড়ি ফিরছি।” এরপর থেকেই সে নিখোঁজ। পরদিন সকালে পারিলা-টু-মিরকাডাঙ্গা ইটবিছানো রাস্তার পাশে জনৈক ডা. কুদ্দুস আলীর আমবাগানের পাশ থেকে গলা কাটা অবস্থায় রাজুর লাশ উদ্ধার হয়। রাজুর মা সুলতানা বেগম ছেলের মরদেহ শনাক্ত করে নাচোল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। হত্যার ঘটনা উদঘাটনে গোয়েন্দা শাখা ও নাচোল থানা যৌথভাবে অভিযান শুরু করে। গোপন তথ্যের ভিত্তিতে গত ২৬ জুন ভোরে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ থানার উত্তর সিংঙ্গেরগাড়ী (তেলমনপাড়া) এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি মো. খাদেমুল ইসলাম মধু (২৪) কে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে আসামি খাদেমুল জানায়, সে একজন মধু ব্যবসায়ী। একসময় নাচোল এলাকায় বিয়ে করে দীর্ঘদিন বসবাস করতেন। রাজুর সঙ্গে বন্ধুত্ব এবং একসঙ্গে গাঁজা সেবনের অভ্যাস ছিল। পরে অটোভ্যানটি দখলে নেওয়ার পরিকল্পনায় সে রাজুকে হত্যা করে। ঘটনার দিন বিকেলে সে রাজুকে চুয়ানি খাওয়ানোর কথা বলে ফুসলিয়ে ভ্যানে তোলে। অতিরিক্ত চুয়ানি খাইয়ে রাজুকে অচেতন করে রাতে পারিলা রোডে নিয়ে গিয়ে ধারালো চাকু দিয়ে গলা ও পিঠে আঘাত করে হত্যা করে। হত্যার পর ভ্যান ও মোবাইল নিয়ে পালিয়ে যায়।
পরদিন সকালে ভ্যান বিক্রির উদ্দেশ্যে মল্লিকপুর, গোমস্তাপুর, চাঁনপুর ঘুরে ২০,০০০ টাকায় ভ্যান বিক্রি করে দেয় ফতেপুর মসজিদপাড়ার আমিনুর রহমান (২২) ও তার বাবা আমানত আলীর কাছে। নগদ নেয় ১৪,০০০ টাকা, বাকি টাকা বিকাশে নেওয়ার পরিকল্পনা ছিল। খাদেমুলের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী ২ ও ৩ নম্বর আসামির বাড়ির আঙিনা থেকে অটোভ্যানটি উদ্ধার করে পুলিশ। এটি পরিকল্পিত হত্যা। মূল ঘাতকসহ মোট তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র ও ভ্যান উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্ত শেষে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দ্রুত চার্জশিট প্রদান করা হবে। এলাকার সাধারণ মানুষ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।