জলিলুর রহমান জনি,সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ শহীদ এম. মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও জনবল সংকটে দীর্ঘদিন ধরে চালু হয়নি আইসিইউ ইউনিট। প্রায় পাঁচ বছর ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে আছে কোটি টাকার সরঞ্জাম। ফলে গুরুতর অসুস্থ রোগীরা চিকিৎসা না পেয়ে অন্যত্র যেতে বাধ্য হচ্ছেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৪ কোটি টাকা ব্যয়ে কেনা আইসিইউ বেড ও ভেন্টিলেটর, ৪৫ লাখ টাকার মেমোগ্রাফি মেশিন এবং চক্ষু বিভাগের ল্যাসিকস মেশিন অকেজো অবস্থায় রয়েছে। এছাড়া সিআরএম যন্ত্র থাকলেও প্রয়োজনীয় উপকরণের অভাবে তা ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
২০১৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতালটি ২০২১ সালের আগস্টে কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে ২০টি বিভাগ ও ১৫টি ওয়ার্ড চালু রয়েছে। প্রতিদিন বহির্বিভাগে গড়ে ২ হাজার ৫০০ এবং অন্তর্বিভাগে প্রায় ৪০০ রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন। তবে পূর্ণাঙ্গ জনবল কাঠামো অনুমোদন না পাওয়ায় স্বাস্থ্যসেবা ব্যাহত হচ্ছে।
জনবল সংকট প্রকট আকার ধারণ করেছে। অনুমোদিত ৭৫ জন সহকারী রেজিস্ট্রারের মধ্যে কর্মরত আছেন ৫৯ জন। নার্স রয়েছেন ১৬৫ জন, যেখানে অনুমোদিত পদ ১৭৩টি। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট রয়েছেন মাত্র ১৭ জন, যেখানে প্রয়োজন আরও ১০ জন। দ্বিতীয় থেকে চতুর্থ শ্রেণির ৫৯টি পদের মধ্যে ৪৫টি শূন্য। বহির্বিভাগে চিকিৎসক বা সহকারী রেজিস্ট্রার না থাকায় রোগীরা দুর্ভোগে পড়ছেন।
চিকিৎসা সংকটে পড়ে রোগীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। সিরাজগঞ্জের হেলালুজ্জামান বলেন, তার মায়ের হার্ট অ্যাটাক হলে ভেন্টিলেটরের অভাবে এনায়েতপুরে নিতে হয়েছে। একইভাবে ধানবান্ধির নাহিদ ইসলাম জানান, হাসপাতালে ডায়ালিসিস মেশিন থাকলেও জনবল না থাকায় চিকিৎসা হয়নি।
হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এ.টি.এম. নুরুজ্জামান বলেন, “যন্ত্রপাতি রয়েছে, কিন্তু দক্ষ জনবল না থাকায় তা ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না।”উপপরিচালক ডা. ওয়াদুত বলেন, “স্বল্প জনবল দিয়েই চিকিৎসাসেবা চালানো হচ্ছে। তবে দ্রুত জনবল সংকট দূর না হলে সমস্যা আরও বাড়বে।”