রাজধানীর শেরাটন হোটেলটি চুক্তি অনুযায়ী করার কথা ছিল ১৪ তলা কিন্তু চুক্তি ভঙ্গ করে করা হয়েছে 2৮ তলা

Share the post

আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে রাজধানীর বনানীতে সরকারি জায়গায় নির্মাণ করা হয়েছে ২৮ তলা হোটেল শেরাটন। সিটি করপোরেশনের সঙ্গে করা চুক্তি ভঙ্গ করলেও নেয়া হয়নি শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থা। বিমানবন্দরের রানওয়ের অ্যাপ্রোচ ফানেল এলাকায় প্রায় ৬০০ ফুট উচ্চ ভবনটি বিমান উড্ডয়ন ও অবতরণকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে বলে অভিযোগ সিভিল এভিয়েশনের।বনানী থেকে গুলশান-২ যাওয়ার পথে সিটি করপোরেশন মার্কেটের সামনের খালি অংশে নির্মিত ভবনটিই হোটেল শেরাটন।

 অভিযোগ আছে, মার্কেট ও আবাসিক মিলিয়ে সিটি করপোরেশনের সঙ্গে ১৪তলা ভবন নির্মাণের চুক্তি হয়। কিন্তু করপোরেশনের কর্তা ব্যক্তিদের সহায়তায় দুধাপে ২৮ তলা পর্যন্ত পৌঁছে যায় শেরাটন কর্তৃপক্ষ। বাকি ১৪ তলা করতে কোনো রকম আনুষ্ঠানিক অনুমতি নেয়নি নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান বোরাক রিয়েল এস্টেট, যা আবার হোটেল শেরাটনের মালিকেরই প্রতিষ্ঠান। ভবনটি নির্মাণকালে এ চুক্তি ভঙ্গ করলেও শাস্তিমূলক কোনো ব্যবস্থাই নেয়নি সিটি করপোরেশন।
 
শুধু এ বিষয়েই নয়, গেলো এক দশকে চুক্তি অনুযায়ী ১৪ তলা অংশে নিজেদের অংশের ৩০ শতাংশ মালিকানার ৫৫০ কোটি টাকার সম্পদ পর্যন্ত বুঝে পায়নি সিটি করপোরেশন। চুক্তি ভেঙ্গে করা বাকি ১৪ তলাও একাই ভোগ করছে হোটেল শেরাটন কর্তৃপক্ষ। অথচ এগুলো নিয়ে যেন কোনো মাথাব্যথাই নেই সিটি করপোরেশনের। তাদের নেই কোনো অভিযোগ; নেই কোনো বক্তব্য।
 
শুধু সরকারি জমি এবং সম্পদ দখলই নয়, ২৮ তলা উচ্চ ভবনটি ঝুঁকির মুখে ফেলে দিয়েছে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমানের অবতরণ ও উড্ডয়নকে। বিমানবন্দরের অ্যাপ্রোচ ফানেল এলাকায় ২০১ ফুটের চেয়ে বেশি উচ্চ ভবন নির্মাণের অনুমতি না থাকলেও কোনো কিছু তোয়াক্কা না করে হোটেল শেরাটন ভবন গিয়ে ঠেকেছে ৬০০ ফুটে।
সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার কমোডর সাদিকুর রহমান সময় সংবাদকে বলেন,২০১ ফুট উচ্চতার বেশি যতটুকু করা হয়েছে, সেই ব্যাপারে আমরা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (রাজউক) বলেছি। এ সংক্রান্ত একটা মামলাও আদালতে চলমান আছে।তিনি আরও বলেন, ‘যখন কোনো নির্মাণ কাজ হয়, তখন রাজউকের কাছ থেকে ছাড়পত্র নেয়া হয়। রাজউক তখন ওই জায়গার উচ্চতা কতটুকু হবে, সেটা আমাদের কাছে জানতে চায়। আমরা বলার পর, কেউ বেশি উচ্চতার ভবন করতে চাইলে রাজউক আইন অনুযায়ী সেটার ব্যবস্থা নেয়।’
 
তার বক্তব্য অনুযায়ী, রাজউকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাজধানীতে ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে রাজউকের অনুমতির বাধ্যবাধকতা থাকলেও সিটি করপোরেশন এবং বোরাক রিয়েল এস্টেট কেউই তার তোয়াক্কা পর্যন্ত করেনি।রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, যখন ভবনটি নির্মাণ করা হয়েছে, তখন রাজউকের কাছ থেকে অনুমোদন নেয়া হয়েছে কিনা, সেই বিষয়ে সিটি করপোরেশন ও হোটেল কর্তৃপক্ষকে আমরা পত্র দিয়েছিলাম। হোটেল কর্তৃপক্ষ লিখিতভাবে রাজউককে জানিয়েছে, ভবনটি সিটি করপোরেশনের অনুমোদিত, সিটি করপোরেশন তাদের ইজারা দিয়েছে।
তবে সব অভিযোগই অস্বীকার করেছে হোটেল শেরাটন কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে আদালতে মামলা চলমান থাকায় ক্যামেরার সামনে কথা না বললেও হোটেল কর্তৃপক্ষ লিখিত বক্তব্যটি খণ্ডনের চেষ্টা করেছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

চরভদ্রাসন উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারি শিক্ষক হলেন দ্বিতীয়বারের মতো মো. মনিরুজ্জামান

Share the post

Share the post ফরিদপুর জেলা প্রতিনিধি: ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলার শ্রেষ্ঠ সহকারি শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন মো. মনিরুজ্জামান। প্রাথমিক শিক্ষা পদক ২০২৪ এর বাছাই প্রতিযোগিতায় উপজেলা পর্যায়ে  দ্বিতীয়বারের মতো শ্রেষ্ঠ সহকারী শিক্ষক নির্বাচিত হওয়ায় তিনি সহকর্মী ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের দায়িত্বশীলদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।সেই সাথে উপজেলার শ্রেষ্ঠ  সহকারী শিক্ষক ২য় বারের মত  নির্বাচিত করায় জাতীয় […]

মুন্সিগঞ্জের বায়রা লাইফের ইনসিওরেন্সের বীমার টাকার দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ.

Share the post

Share the postমোঃ খায়রুল ইসলাম হৃদয়, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি: মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় দুই শতাধিক গ্রাহকের প্রায় এক কোটি ২০ হাজার টাকা নিয়ম মাফিক জমা দিয়েও বছরের পর বছর ধরে বায়রা লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানী লিঃ কর্মকর্তাদের পিছু ঘুরে না পেয়ে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা। এ ব্যাপারে শতাধিক গ্রাহক আজ রবিবার সকাল ১১টার দিকে উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়ন পরিষদ […]