পাহাড়িকা ও উদয়নে ১৪ নতুন কোচ ২৬ জানুয়ারি “উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী”
দীর্ঘদিনের দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম-সিলেটগামী যাত্রীদের। জরাজীর্ণ পুরনো কোচ ছেড়ে ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত নতুন ১৪টি অধিক গতিসম্পন্ন অত্যাধুনিক কোচ সংযোজন করা হচ্ছে পাহাড়িকা ও উদয়ন এক্সপ্রেস। নতুন বগি সংযোজনের পর আগামী ২৬ জানুয়ারি ভিডিও কনফান্সের মাধ্যমে এর উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের পরিবহন বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, নতুন ১৪টি কোচের মধ্যে ২টি এসি বার্থ, ২টি এসি চেয়ার, ১টি পাওয়ার কার, ৫টি শোভন চেয়ার ও ২টি শোভন চেয়ার-গার্ড বক্স থাকছে।
এ ব্যাপারে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চিফ অপারেটিং সুপারিনটেনডেন্ট (পূর্ব) এ এম এম শাহনেওয়াজ আজাদীকে জানান, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম-ঢাকার পরেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রুট হলো চট্টগ্রাম-সিলেট। এই রুটের যাত্রীদের সেবার মান বাড়ানোর লক্ষ্যে পাহাড়িকা ও উদয়নে নতুন কোচ সংযোজন করা হচ্ছে। আগামী ২৬ জানুয়ারি সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। নতুন কোচে সিলেট থেকে পাহাড়িকা ট্রেনটি প্রথম চট্টগ্রাম আসবে এবং চট্টগ্রাম থেকে উদয়ন হয়ে ট্রেনটি সিলেট যাবে।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলী কর্মকর্তা জানান, ইন্দোনেশিয়া থেকে আমদানিকৃত নতুন কোচগুলো অধিক গতি সম্পন্ন খুবই উন্নতমানের। স্টেইনলেস স্টিলের তৈরি। কোচগুলো বায়ো টয়লেট যুক্ত। প্লেনের মতো বায়ো টয়লেট পদ্ধতি থাকায় রেললাইনে কোনো মলমূত্র পড়বে না। ফলে পরিবেশ যেমন দূষণ হবে না তেমনি ট্রেনগুলোও ব্যাকটেরিয়ামুক্ত ও দূষণমুক্ত থাকবে। এসব কোচ সহজে নষ্ট হবে না। প্রতিবন্ধীদের জন্য স্পেশাল চেয়ারের ব্যবস্থা রয়েছে। সামনে টেলিভিশনের মতো বড় পর্দা রয়েছে, ট্রেন কোথায় থামছে সেটি স্ক্রিনে দেখা যাবে। একইসঙ্গে কত গতিতে ট্রেনটি চলাচল করছে তাও দেখা যাবে। এর আগে দেশে এমন অত্যাধুনিক বগি আনা হয়নি। ধাপে ধাপে নতুন ২০০টি মিটারগেজ ইন্দোনেশিয়া থেকে আসছে।
চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে নিয়মিত যাত্রীর চাপ থাকলেও বাড়েনি ট্রেনের সংখ্যা এমনকি চলাচলরত ট্রেনগুলোর অবস্থাও খুবই শোচনীয়। চট্টগ্রাম-সিলেট রুটে বিপুল সংখ্যক যাত্রীর চাপ থাকলেও বছরের পর বছর জরাজীর্ণ বগির অভিযোগ ছিল যাত্রীদের।
সর্বশেষ গত ১২ নভেম্বর রাত পৌনে ৩টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের মন্দবাগ স্টেশনের আউটার ক্রসিংয়ে আন্তঃনগর উদয়ন এঙপ্রেসের (সিলেট থেকে চট্টগ্রামগামী) সাথে আন্তঃনগর তূর্ণা নিশীথার (চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী) মধ্যে সংঘর্ষে ১৭ জনের প্রাণহানির ঘটনায় সিলেট রুটের উদয়ন ধুমড়ে-মুচড়ে যায়। এতে আহত হন অর্ধশতাধিক যাত্রী। দীর্ঘদিন থেকে এই রুটের যাত্রীরা বলে আসছে উদয়ন এবং পাহাড়িকা এঙপ্রেসের জরাজীর্ণ বগি পরিবর্তনের জন্য। শেষ পর্যন্ত যাত্রীদের সেই দাবি পূরণ হতে যাচ্ছে।