

জলিলুর রহমান জনি, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি : রহস্যে ঘেরা মঞ্জু মিয়া হত্যার ঘটনায় এলাকায় উদ্বেগ।ভোররাতের নিস্তব্ধতা ভেদ করে ক্ষুদ্র শিয়ালকোল গ্রামের পাকা রাস্তার পাশে মিলল এক যুবকের নিথর দেহ। চারদিকে রক্তের দাগ, পাশে পড়ে আছে মোটরসাইকেলটি। নিহতের নাম মঞ্জু মিয়া (৩৮)। তিনি সদর উপজেলার শিয়ালকোল ইউনিয়নের সরাইচন্ডী গ্রামের মৃত ইউনুস আলীর ছেলে।
বৃহস্পতিবার (৯ অক্টোবর) ভোররাতে এ ঘটনাটি ঘটে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, রাত আড়াইটার দিকে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মঞ্জু মিয়াকে হত্যা করে পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠায়।
সিরাজগঞ্জ সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “মঞ্জু মিয়ার শরীরে একাধিক ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে একটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়েছে। হত্যার কারণ উদঘাটনে আমরা কাজ করছি।”
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মোখলেসুর রহমান জানান, “এই জায়গাটিতে গত ১০ বছরের ব্যবধানে এটি তৃতীয় হত্যাকাণ্ড। তিনটি ঘটনাতেই ধারালো অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় এমন হত্যাকাণ্ড সত্যিই উদ্বেগজনক।”
স্থানীয়দের মধ্যে এখন চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে। কেউ কেউ বলছেন, রাত নামলেই এলাকায় ভয় ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই এখন অন্ধকারের পর বাইরে বের হতে ভয় পাচ্ছেন।
গ্রামের প্রবীণ বাসিন্দা আব্দুল হালিম বলেন, “এই রাস্তা দিয়েই আমরা বাজারে যাই, শিশুরা স্কুলে যায়। কিন্তু একের পর এক খুনের ঘটনায় সবাই আতঙ্কে আছে। পুলিশ যেন দ্রুত হত্যাকারীদের ধরতে পারে, সেটাই এখন সবার দাবি।”
স্থানীয়রা মনে করছেন, এই হত্যাকাণ্ড কোনো পুরোনো শত্রুতার ফল হতে পারে। তবে পুলিশ বলছে, তারা ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক সব দিক তদন্ত করছে।
ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত মঞ্জু মিয়ার মৃত্যুর পর আবারও আলোচনায় এসেছে শিয়ালকোলের সেই ভয়াল পাকা রাস্তা— যেখানে দশ বছরে তিনজন মানুষের জীবন ঝরে গেল একইভাবে। গ্রামের মানুষ এখন শুধু জানতে চায়— আর কত প্রাণ গেলে থামবে এই রক্তের ধারাবাহিকতা।