

হৃদয় আহমেদ ভালুকা, ময়মনসিংহ: রক্তাক্ত জুলাই আগষ্ট চেতনার গ্রাফিতি। গত ৫ আগষ্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা দেশ ত্যাগ করার পর বিপ্লবী চেতনা ধরে রাখতে শিক্ষার্থীরা ময়মনসিংহ নগরীর বাসা বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি বেসরকারি অফিস ও আদালতসহ জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবনের দেয়াল জুড়ে জুলাই-আগষ্ট চেতনার গ্রাফিতি অঙ্কন করেছি। বিপ্লবী শিক্ষার্থীদের আঁকা সেই রক্তাক্ত জুলাই আগষ্ট চেতনার গ্রাফিতি মুছে ফেলে নতুন করে রঙ করা হয়েছে জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবন।
এ নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন জুলাই-আগষ্ট অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী, স্থানীয় রাজনীতিবিদসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। তারা বলছেন এটি জুলাই যোদ্ধাদের প্রতি অবমাননার শামিল।
গত বছরের ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার গণঅভূত্থানে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে শেখ হাসিনা দেশত্যাগ করায় সারাদেশের ন্যায় ময়মনসিংহবাসী মেতে উঠেন উল্লাসে। রক্তাক্ত জুলাই-আগস্টকে বুকে ধারণ করেন শিক্ষার্থীরাসহ আপামর জনসাধারণ ময়মনসিংহের দেয়ালে দেয়ালে চিত্রাঙ্কন করেন রক্তাক্ত জুলাইয়ের গ্রাফিতি। বাদ যায়নি জেলা প্রশাসকের সরকারি বাসভবনের দেয়ালও।
পায়ে হেঁটে কিংবা যানবাহনে ময়মনসিংহ নগরী ভ্রমণকালে প্রায় প্রতিটি সরকারি-বেসরকারি দফতরের দেয়ালে জুলাই গ্রাফিতি দেখা যেত। কিন্ত কয়েকদিন ধরে এখন আর তা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলমের নির্দেশে জুলাই গ্রাফিতি মুছে ফেলার কাজ চলমান রয়েছে। নগরীর সার্কিট হাউস মাঠের পাশে অবস্থিত জেলা প্রশাসকের সরকারী বাসভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, জেলা প্রশাসকের বাসভবনের দেয়ালের গ্রাফিতি মুছে ফেলা হয়েছে। সম্পূর্ণ দেয়ালজুড়ে নতুন করে রঙ লাগানো হয়েছে। ফলে গ্রাফিতির এখন আর কোন চিহ্নই নেই। ফলে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইছে নগরীর জনমনে। কেউ বলছে, এমন গ্রাফিতি মুছার ঘটনা দুঃখজনক।
স্থানীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাহবুব এন্টারপ্রাইজের ক্যাশিয়ার নূরে আলম সিদ্দিকী এবং অন্যজন দেয়ালের রঙমিস্ত্রি জানান, জেলা প্রশাসকের বাসভবনের সম্পূর্ণ দেয়ালের কাজ পেয়েছে মাহবুব রেজা করিমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স মাহবুব এন্টারপ্রাইজ। জেলা প্রশাসকের বাসভবনের আগের দেয়াল আরও কয়েকফুট উচ্চতা বৃদ্ধি এবং পুরো দেয়ালে রঙ করাসহ কাঁটাতার নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কাজের জন্য ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কাজ পেয়েছে। এসব কাজের জন্য মোট ব্যয় ধরা হয়েছে অন্তত ১৮ লাখ টাকা। তারা আরও জানান, দেড় মাস ধরে কাজ চলমান রয়েছে। দেয়ালের উপর লাইটিং ব্যবস্থা, নতুন গ্রাফিতি ও সৌন্দর্যবৃদ্ধিসহ নিরাপত্তার স্বার্থেই দেয়াল উঁচু করে নতুন রঙ লাগানো হয়েছে বলে জানান তারা।
এ ব্যপারে জেলা প্রশাসক মুফিদুল আলম বলেন, পুরনো দেয়ালের গ্রাফিতি মুছে ফেলা হলেও নতুন করে করা হবে। ভবনের দেয়াল সাজানো হবে নতুন আঙ্গিকে। ভবনটি অত্যাধিক পুরাতন হওয়ায় নিরাপত্তার স্বার্থেই এটি করা হচ্ছে।