

সোহেল খান দূর্জয়,নেত্রকোনা : শুক্রবার (২০ জুন ) সকালে নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল ও সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পৃথক দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন গ্রুপে দেখা গেছে। দলীয় কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের ব্যানারে নেত্রকোনায় এই ঝটিকা মিছিল হয়েছে। শুক্রবার দুপুর থেকে মিছিল ও সংক্ষিপ্ত বক্তব্যের পৃথক দুটি ভিডিও ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপসহ বিভিন্ন গ্রুপে দেখা গেছে। এই মিছিল ও বক্তব্যের স্থান জেলা শহরের বড়বাজার এলাকা ও ছোটবাজার এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে নিশ্চিত হলেও সময় বলতে পারছে না আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। জানা গেছে মিছিলটির নেতৃত্ব দিয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি, জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও সাবেক পৌর মেয়র প্রশান্ত কুমার রায়।
পুলিশ ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নেত্রকোনা জেলা শহরসহ বিভিন্ন উপজেলায় নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের বেশ কয়েকটি ঝটিকা মিছিল হয়। অবশ্য এসব ঘটনায় মামলাসহ মিছিলে অংশ নেওয়া কিছু নেতা-কর্মীকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। এরপর গত ১০ মে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হাফিজ ও জেলা আওয়ামী লীগের নাম লেখা ব্যানার নিয়ে কয়েকজন যুবক একটি ঝটিকা মিছিল করেন। পরে সে মিছিলের একটি ভিডিও ফেসবুকে দেওয়া হয়। তবে ওই মিছিলের স্থান সম্পর্কে এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি পুলিশ। শুক্রবার (২০ জুন ) দুপুর থেকে প্রশান্ত কুমারের নেতৃত্বে বেশ বড় একটি ঝটিকা মিছিলের ভিডিও ফেসবুকে দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিছিলটি সকাল ৬টার দিকে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরপর প্রশান্ত কুমার দলীয় কার্যালয়ের সামনে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে সংক্ষিপ্ত বক্তব্য দেন।
প্রায় দেড় মিনিটের ভিডিওতে দেখা গেছে, লাল গেঞ্জি পরা প্রশান্ত কুমার রায় শারীরিক অসুস্থতার জন্য টেনে টেনে হাঁটছেন। তিনি ও তাঁর সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরা স্লোগান দিচ্ছেন। মিছিলে ৩৫ থেকে ৪০ জন ছিলেন। তাঁদের বেশির ভাগের মুখে কালো কাপড় ও মাস্ক ছিল। এ বিষয়ে জানতে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে প্রশান্ত কুমারের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। তবে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, শুক্রবার সকালে বড় বাজার এলাকায় হঠাৎ করে প্রশান্ত কুমারের নেতৃত্বে বেশ কিছু কর্মী-সমর্থক একত্র হয়ে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে মিছিল শুরু করেন। পরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা করে প্রায় তিন মিনিট বক্তব্য দেন।শেষে যে যাঁর মতো করে চলে যান।
এবিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহ নেওয়াজ মুঠোফোনে বলেন, এই মিছিল ও বক্তব্য দেওয়ার দুটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তিনি দেখেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, এটি ভোরের দিকে হয়েছে। তিনি আরও বলেন, শুক্রবার জেলা মোটরযান শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচন থাকার কারণে আমরা সবাই ঐ নির্বাচনী এলাকায় ছিলাম। পুলিশের অনেক সদস্য ওই নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন। তাই এ সুযোগে তাঁরা ঝটিকা মিছিল করে থাকতে পারেন। যেহেতু আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে, কাজেই এ ধরনের মিছিল ও বক্তব্য বেআইনি। এ ব্যাপারে আমাদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে তাদের বিরুদ্ধে।