চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: বাকলিয়ায় পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ছোট ভাইকে হত্যা করে বড় ভাইদের ফাঁসাতে মরিয়া একাধিক বিএনপি নামধারী। সাবেক সরকার দলীয় সংগঠন আওয়ামী সেচ্ছাসেবক লীগের নেতারা এখন সেজেছে বিএনপি। আওয়ামী লীগের সরকার আমলে মাদক বিক্রি থেকে শুরু করে এমন অপরাধ করেনি বাকী নাই তারা। নতুন সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর পুলিশ কাজে ফিরলেও তাদের তৎপরতা খুব একটা দেখা যাচ্ছে না। যে কারণে সারাদেশে অনেক অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের খবর পাওয়া যাচ্ছে।সেই সুবাধে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ভোর পাল্টে নিজেদের পরিচয় আড়াল রেখেছে। আবার কেউ কেউ সাজছে বিএনপি।
এদিকে বিষয়টি নিয়ে মামলার এজাহার ভুক্ত আসামীর পক্ষে চট্টগ্রাম নগরীর বাকলিয়ার কালামিয়া বাজারের লতিফের হাট এলাকায় গত ৫ আগস্ট মোহাম্মদ সাকিব (১৮) নামে এক তরুণ খুনের ঘটনায় ছাত্রলীগ-যুবলীগ সাজিয়ে ১৫ যুবদলেরকর্মীকে আসামি করার অভিযোগ উঠেছে। কোটাবিরোধী আন্দোলনের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ডটির আসল রহস্য আড়াল করা হচ্ছে। এতে নিরাপরাধ ১৫ জন যুবদল ও ছাত্রদলের কর্মীকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে আসামি করে হয়রানি করা হচ্ছে। শুক্রবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ১৮নং পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের আব্দুল লতিফ হাটখোলা এলাকার একটি কমিউনিটি সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে স্থানীয় বিএনপি নেতারা এ অভিযোগ করেন। বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করলেও প্রমাণ হয়েছে সাকিব হত্যার আসামীরা বেশিরভাগ আওয়ামী লীগের দলীয় রাজনৈতিক এর যুক্ত ছিলেন। চট্টগ্রাম মহানগর সেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আজিজুর রহমান আজিজের অনুসারী ও সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নওফেল এর কর্মী। এজাহার নামীয় অপরাধীদের সাথে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম আওয়ামী লীগের ছবি বলে দেয় এরা কোন দলের লোক। সেচ্ছাসেবক লীগের নেতাদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, যারা সাকিব কে হত্যা করেছে সবাই সাবেক সরকার দলীয় কেউ যুবলীগ, কেউ ছাত্রলীগ,আবার অনেকে সেচ্ছাসেবক লীগের রাজনৈতিক করতো এখন তারা সবাই নাকি বিএনপির বড় নেতা। তাদের এই অপকর্মে লিপ্ত এলাকার সবাই জানে, ভয়ে মুখ খুলতে পারেনা। এখন এদেরকে আশ্রয় দিচ্ছেন বিএনপি নামধারী কয়েকজন। সাকিব হত্যা কারীরা বিএনপি সাজার কারণ হলো বিএনপি নাম ধারী অর্থের বিনিময়ে তাদেরকে শেল্টার দিচ্ছে। এঘটনায় ২১ আগস্ট মোহাম্মদ সাকিবের মা ফিরোজা বেগম বাদী হয়ে বাকলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এতে মোহাম্মদ করিম (৩৫), মো. তৈয়ৰ (৪), মহিউদ্দিন (৪৮), মোহাম্মদ মানিক (৩০), ইকবাল হোসেন (৩২), মো. হেলাল (৩৫), মো. ইমু (২৮), মো. ফাহিম (৩০, মো. রহিম (৩৯), মো. মুনমুর (৪২), মো. নাঈম (২৭), মিনহাজ বিন হোসেন (২৫) ও মো. মঞ্জুকে (৩৮) আসামি করে। সাকিবের পারিবারিক সূত্রে জানায়,১৮ নং পূর্ব বাকলিয়ার হাটখোলাস্থ এলাকার চিহ্নিত একদল সন্ত্রাসী মো. করিম,মোঃ বাদশা ও মো. তৈয়ব গ্যাংরা।তারা বিভিন্ন বছর ধরে এলাকায় রাজনৈতিক প্রভাব খাঁটিয়ে তৎকালীন ক্ষমতাসীন দল ও সহযোগী সংগঠনের নাম ভাঙিয়ে এলাকায় চাঁদাবাজী,ভূমিদস্যুতা,ইয়বা ব্যবসা সহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে।তাদের নজরেই থাকতো অন্যর সম্পত্তি জোর দখল সহ অনৈতিক সকল কর্মকাণ্ড।কেউ এসবের প্রতিবাদ করলে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে তারা তাকে মারধর করতো। এসকল সন্ত্রাসীদের চোখ পরে আমাদের ক্রয়কৃত হাটখোলাস্থ একটি জায়গার দিকে।সেটি তারা অনেক বছর আগে থেকেই দখলে নেওয়ার নানান কৌশল অবলম্বন করলে আমরা সেটি বাঁধা দেওয়ার চেষ্টা করলে আমাদের উপর দফায় দফায় হামলা করেন তারা।যেহেতু আমরা কোন ভাই ওই এলাকায় থাকতাম না একমাত্র আমার ছোট ভাই ছাড়া।তাই তারা আমার পরিবারে নারী সদস্যদের উপর দফায় দফায় হামলা করতো যার প্রমান আমার বোনের উপর করা গুরতর হামলা।এই ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা থানায় একটি মামলা করলে তারা আরো ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে আমাদের উপর।এবং সেই মামলা তুলে নেওয়ার জন্য বারবার চাপ প্রয়োগ করতে থাকে। এরুপ অন্যায় অত্যাচার চলতে থাকে বছরের পর বছর।দলীয় ক্ষমতার দাপটে আমরা ছিলাম অসহায় তাদের নিকট।প্রশাসনও ছিল নিশ্চুপ।অবশেষে তাদের কৌশল আরো জোরদার হয় ২০২৪ সালের ৫ই আগস্ট।সরকার পরিবর্তন এর সাথে সাথে পরিবর্তন হতে শুরু করে ওইসব সন্ত্রাসীদের মুখোশও।৫ই আগস্ট থানাতে যখন ছিলো না কোন পুলিশ,আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যখন কোন কার্যক্রম ছিল না সেই সুযোগে তারা আমার ছোট ভাইকে ৫ই আগস্ট রাত ১১.৩০ এর দিকে ঘর থেকে ঢেকে নিয়ে কুপিয়ে জখম করে নির্মমভাবে হত্যা করে আমার ছোট ভাই মো সাকিবকে। আমার ভাইকে হত্যা করেই ক্ষান্ত হননি ওই সন্ত্রাসীরা। প্রতিনিয়ত আমাদের হুমকি দিয়ে যাচ্ছে মামলা দিয়ে হয়রানি নির্যাতন করার কথা বলে একাধিক প্রস্তাব পাঠানো হচ্ছে। বর্তমান সরকারের কাছে সাকিব হত্যার সুস্থ তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনার দাবী জানায় এলাকাবাসী।