শীতে পাখির দেখা নেই টাঙ্গুয়ার হাওরে
আল হাবিব ।। সুনামগঞ্জ : অতিথি পাখির অভয়াশ্রম হিসেবে দেশ-বিদেশে পরিচিত ছিল সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওর। প্রতি বছর শীতে সুদূর সাইবেরিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে ঝাঁকে ঝাঁকে হাওরটিতে অতিথি পাখি আসতো। কিন্তু এবার জলাভূমিতে শীত এসেছে, কিন্তু পাখির দেখা নেই। পাখি না থাকায় প্রায় পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে টাঙ্গুয়ার হাওর। ২০০০ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে ঘোষণা করে এই হাওরকে। প্রতি বছর শীতে সুদূর সাইবেরিয়া সহ বিভিন্ন দেশ থেকে হাজার হাজার মাইল পাড়ি দিয়ে এখানে ঝাঁকে ঝাঁকে অতিথি পাখি আসে।
পানকৌড়ি, ভূতিহাঁস, পিয়ং হাঁস,খয়রাবগা,লেঞ্জা হাঁস, সরালিসহ নানা প্রজাতির পাখির কলকাকলিতে মুখরিত হয় হাওরটি। কিন্তু এবারের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন। রোববার (২২ নভেস্বর) টাঙ্গুয়ার হাওরে গিয়ে দেখা যায়, টাঙ্গুয়ার হাওরের জলাভূমিতে শীত এসেছে, কিন্তু পাখির দেখা নেই। সংরক্ষিত হওয়ার পরও স্থানীয় পাখি শিকারিদের উৎপাতে ও রাতে বিভিন্ন রকমের ফাঁদ তৈরী করে পাখি শিকার করায় প্রায় পাখি শূন্য হাওরটি।
ঢাকা থেকে টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে আসা পর্যটক মনিরুজ্জামান জানান, গত কয়েক বছর আগে টাঙ্গুয়ার হাওরে যে পরিমাণ অতিথি পাখি দেখা গেছে বর্তমানে তা আর দেখা যাচ্ছে না। পাখি না তাকলে ত হাওরের সুর্ন্দয ওই তাকবে না। ঢাকা থেকে টাঙ্গুয়ার হাওর দেখতে আসা রিদয় আহমেদ জানান, প্রতি বছর শীত আসলে আমরা বন্ধুরা সব টাঙ্গুয়ার হাওরে ঘুরতে আসি, তবে শীতে টাঙ্গয়ার হাওরে যে পরিমাণে অতিথি পাখি তাকার কথা সেই পরিমাণের পাখি নেই। স্থানীয় বাসিন্দা সিরাজ মিয়া জানান, রাত হলেই পাখি শিকারা অতিথি পাখি ধরার জন্য বিভিন্ন ধরণের জাল ফেলে রাখে এবং তারা বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করে বিক্রি করে, এই পাখি শিকারীদের কারণে হাওরে পাখি কমে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দা সুরজ মিয়া জানান, এ বছর পাখি আসা কমে যাওয়ায় প্রায় পর্যটক শূন্য হয়ে পড়েছে টাঙ্গুয়ার হাওর। হাওরের জীববৈচিত্র রক্ষায়, স্থানীয় প্রশাসনকে আরও তৎপড়তা বাড়াতে হবে। স্থানীয় বাসিন্দা ফরিদ মিয়া জানান,আগে শীত আসার সাথে সাথে বিদেশ থেকে টাঙ্গুয়ার হাওরে নানা প্রজাতির পাখি দেখা যেত, পাখির শব্দে আমাদের ঘুম ভেঙ্গে যেত। এখন আর আগে মত পাখি আসেনা, কারণ কিছু মানুষ পাখি শিকার করে পাখির অভায়শ্রম ধংশ করে দিচ্ছে, আমরা প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানাই দ্রুত যাতে এই সব পাখি শিকারীদের আইনের আওতায় আনা হয়।
সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ জানান, হাওরের জীববৈচিত্র রক্ষায় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কিছু অসাধু প্রকৃতির লোকজন পাখি শিকার করার জন্য গভীর রাতে হাওরে প্রবেশ করে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই কার্যক্রমের ফলে পাখি শিকার অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।