নেত্রকোনায় অস্বাস্থ্যকর সেঁতসেঁতে অবস্থায়, নোংরা পরিবেশে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি

Share the post
সোহেল খান দূর্জয়, নেত্রকোনা: নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন মিষ্টি কারখানায় অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে মিষ্টি।কোনো কোনো মিষ্টির দোকানগুলোতে নেই কোনো মূল্যতালিকা, তার ওপর প্রতিকেজি মিষ্টির খালি প্যাকেটের ওজন ২০৫ গ্রাম। একে তো অস্বাস্থ্যকর খাদ্য, অন্যদিকে ওজনে প্রতারণা শিকার হয়ে উভয় সঙ্কটে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। মোহনগঞ্জ উপজেলার এক সাংবাদিক তার ফেইসবুকে লিখেছেন, নোংরা পরিবেশে মিষ্টি তৈরি হচ্ছে। সুন্দর ডেকোরেশনের দোকানে এই মিষ্টি এনে বিক্রি করছে নামকরা এলাকার মিষ্টি বলে। এই মিষ্টি মোহনগঞ্জ সহ ৫/৬ টি উপজেলার লোকজন বেড়াতে গিয়ে নামকরা দোকান থেকে মিষ্টি ক্রয় করছে। প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ প্রয়োজন । মিথ্যা ও প্রতারণার অভিযোগ এর বিষয়ে সত্যটা পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
মোহনগঞ্জ উপজেলার বেশ কিছু মিষ্টির দোকান ঘুরে দেখা যায়, মিষ্টির দোকানে মূল্যতালিকা না থাকায় অতিরিক্ত দামে মিষ্টি বিক্রি করা হচ্ছে।এসব মিষ্টির প্যাকেট ওপরের কভার হালকা থাকলেও নিচের দিক ভারী। একেকটি প্যাকেটের ওজন ১৩৫-২০৫ গ্রাম। সাধারণ মিষ্টির দোকান গুলোতে প্রতিকেজি মিষ্টির মূল্য ২০০-২৪০ টাকা। তবে অভিজাত মিষ্টির দোকানগুলোতে প্রতিকেজি মিষ্টির মূল্য ২৩০-৬০০ টাকা। ক্রেতারা মিষ্টি ক্রয় করতে গেলে প্যাকেটসহ মিষ্টি ওজন করা হয়। এতে ক্রেতারা ১ কেজি মিষ্টি কিনলেও প্রকৃতপক্ষে পান ৭৫০-৮৫০ গ্রাম। কেউ নিজের দোকানের নামে আবার কেউ বাজার থেকে প্যাকেট স্বল্পমূল্যে ক্রয় করে বিক্রি করা হচ্ছে মিষ্টির দামে। ডিজিটাল পাল্লায় ওজনের সঙ্গে কৌশলে মিষ্টির প্যাকেটেরও ওজন দেওয়া হয়। এতে প্রতিকেজি ১৪০-২১০ গ্রাম মিষ্টি কম দেওয়া হচ্ছে। প্রতিটি মিষ্টির দোকানে ওজনে প্রকাশ্যে চলছে কারচুপি। মিষ্টি তৈরির কয়েকটি কারখানা ঘুরে দেখা যায়, অবস্থা আরও খারাপ। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে দই, মিষ্টি। এর আশপাশে দুর্গন্ধে কোনোভাবেই থাকা যাচ্ছে না। মিষ্টির দোকানে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে জরিমানা করলেও তাদের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। পৌর শহর ও ইউনিয়ন বাজারগুলোতে অর্ধশতাধিক মিষ্টির দোকান রয়েছে। এ ওজন নিয়ে প্রায়ই ক্রেতাদের সঙ্গে দোকান মালিকদের বাকবিতণ্ডা ঘটছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক মোহনগঞ্জ বাজারের কয়েকজন ক্রেতা জানান, মোহনগঞ্জে মিষ্টির দোকান গুলোতে মূল্য তালিকা না থাকায় দোকানের মালিকরা ইচ্ছামতো মিষ্টির দাম আদায় করছেন। মিষ্টি ওজনের সময় প্যাকেটসহ পরিমাপ করছেন। আবার দইয়ের ক্ষেত্রে পাতিলের ওজনসহ বেশি দামে দই বিক্রি করছেন। আমরা দোকানদারদের কিছু বললে দোকানি বলে বেশি দামে নিলে নেন না নিলে না নেন। এটি দেখার যেন কেউ নেই। আমরা অনেকেই বেকায়দায় পড়ে বেশি মূল্য দিয়ে মিষ্টি কিনছি। মোহনগঞ্জ বাজারের সাধারণ ক্রেতারা জানান, সরকারি নির্দেশনার চেয়ে বেশি ওজনের প্যাকেটে মিষ্টি বিক্রি ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ মিষ্টি তৈরি করলে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা ছাড়া এদের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিকার নেই। ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে তাদের কঠিন শাস্তির জরিমানা ব্যবস্থা করা প্রয়োজন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নেত্রকোনা জেলার প্রতিটি উপজেলার প্রতিটি মিষ্টির দোকানে একেই অবস্থা, অস্বাস্থ্যকর নোংরা পরিবেশে তৈরি করা হচ্ছে নামিদামি ব্র্যান্ডের মিষ্টি। এই সব থেকে নোংরা পরিবেশে কাজ থেকে মুক্তি পেতে চায়, সকল সচেতন নাগরিক সমাজ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

নেত্রকোনায় গুলিতে একমাত্র উপার্জনক্ষম সন্তান হারিয়ে অকুল পাথারে রাসেলের পরিবার

Share the post

Share the postসোহেল খান দূর্জয়, নেত্রকোনা : গুলিতে নিহত রাসেল মিয়া। গাজীপুরের মাওনায় মোরগের গাড়িতে হেলপারের কাজ করতেন রাসেল মিয়া (১৯)। বৃদ্ধ বাবা-মায়ের ভরণপোষণের জন্য কিশোর বয়স থেকেই এ কাজে যোগ দিয়েছিলেন। গত ৫ আগস্ট বিকেলে মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সদস্যদের পোশাক পরা ভারতীয়দের আটক করে জনতা। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে ভগ্নীপতির […]

নেত্রকোনায় বিদ্যালয়ের কাজ না করেই বরাদ্দের টাকা ৫০ লাখ টাকা উত্তোলনের অভিযোগ

Share the post

Share the postসোহেল খান দূর্জয়, নেত্রকোণা : নেত্রকোণার বারহাট্টা উপজেলার বরইতলা এন আই খান উচ্চ বিদ্যালয়ের কোনো অস্তিত্ব না থাকলেও বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ ৩০ জুন শেষ হলেও প্রকল্পের কাজ এখনো শুরু হয়নি।২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে উন্নয়ন সংশোধিত বাজেটে ‘ইউনিয়ন পরিষদ উন্নয়ন সহায়তা’ খাতের আওতায় ইউনিয়নের অনগ্রসরতা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং […]