

আশিকুর রহমান, নরসিংদী : সারাদেশের ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। আর এই তাপদাহে পুড়ছে নরসিংদী। ফলে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। শনিবার (৯ মে) দুপুর ১টায় জেলার আবহাওয়া অফিস সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে, যা চলতি মৌসুমে জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
এর আগের দিন শুক্রবার তাপমাত্রাও ছিলো একই। ফলে তাপমাত্রা অপরিবর্তনশীল থাকায় তপ্ত রোদে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বিশেষ করে দিনমজুর, রিকশা চালক থেকে শুরু ঘরের বাইরে যারা কাজ করছেন তারা সবচেয়ে বেশি নাজেহাল হচ্ছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, তীব্র তাপপ্রবাহর কারণে প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না কেউ। রাস্তা-ঘাট প্রায় মানবশূন্য। আর যারা প্রয়োজনে বের হচ্ছেন, তাদের অনেকেই পড়েছেন বিপাকে। কেউ ছাতা মাথায়, কেউ গাছের ছায়ায় বা বিল্ডিংয়ের তলায় বিশ্রাম নিতে দেখা গেছে। তীব্র রোদের কারণে ভ্যান ও রিকশাচালকরা যাত্রী না পেয়ে অলস সময় কাটাচ্ছেন। নির্মাণ শ্রমিকসহ অন্যান্য শ্রমজীবী মানুষ অসহনীয় গরমে কষ্ট পাচ্ছেন। অসহনীয় এই গরমের শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করা পানিবাহিত রোগ সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে হাসপাতাল গুলোতে রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
রিকশাচালক আবুল মিয়া বলেন, কি আর করমু। গরীব মানুষ রিকশা না লইয়া বাইর হলে সংসার চলবো কেমনে? পেটের দায়ে আগুনের মত এই রোদে রিকশা লইয়া বাইর হইতে হইছে। তিনি আরও বলেন, পেট কি আর আগুন-পানি বুঝে? আমাগো শরীর রদে ভিজে আবার রদে শুকাইয়া যায়। সকাল বেলা রিকশা লইয়া বাইর হইছি, এহন দুপুর হইয়া গেছেগা, রাস্তায় লোকজন নাই, যাত্রীও নাই, ভাড়াও নাই।
সহকারী অধ্যাপক ডা. এতেহশামুল হক বলেন, সারাদেশে তীব্র তাপদাহ বিরাজ করছে। গ্রীষ্মের এই তাপপ্রবাহের কারণে পানিবাহিত রোগ ও হিটস্ট্রোকের প্রধান কারণ। এইসব থেকে যতটুকু নিরাপদে থাকা যায়। পরামর্শ হচ্ছে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের না হওয়া, বাইরে বের হলে ছাতা ব্যবহার করা, বিশুদ্ধ পানি রাখা, সুতি ও ঢিলেঢালা কাপড় পরিধান করা, যতটুকু সম্ভব ঠান্ডা ও খোলামেলা জায়গায় অবস্থান করা, টাটকা শাকসবজি, ফলমূল ও তরল জাতীয় খাবার খাওয়া। বেশি করে ঠান্ডা পানি ও স্যালাইন পানি পান করা। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের প্রতিনজর রাখা।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, সারাদেশ সহ নরসিংদীট ওপর দিয়েও তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত গরমের তীব্রতা সবচেয়ে বেশি অনুভূত হচ্ছে। ৩-৪ দিন পর বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে, তখন তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে। এদিকে তাপপ্রবাহের দাপটের কারণে আগামী তিন দিনের জন্য নতুন করে সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শনিবার দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় দেশের কিছু এলাকায় তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।