জুলাই বিপ্লবের ডাক, গণতন্ত্র, জবাবদিহিতা ও ন্যায়ের প্রত্যাবর্তন: আব্দুল মান্নান রানা
প্রচলিত শব্দ রাজনৈতিক মাঠকে উত্তপ্ত রাখতে রাজনৈতিক নেতারা গণমাধ্যম ও সমাবেশে এসে বক্তব্য দেয় আমরা ক্ষমতায় আসলে রাষ্ট্রের সকল সংকটের সমাধান করব। যদিও গত ৫৪ বছর ধরে তারায় ক্ষমতায় আছেন।
এখন প্রশ্ন হল কিভাবে সমাধান করবেন তার ফ্রেইমওয়ার্ক কোথায়? যদি রাজনৈতিক দল জনগণকে রিপ্রেজেন্ট করে থাকে।তাহলে গত ৫৪ বছরের প্যাঁচানো রাজনৈতিক সংকট সমাধানে আপনাদের নির্দিষ্ট ওয়ার্কপ্লান জনগণের সামনে উপস্থাপন করুন।
যেন জনগণ আপনাকে তার প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত করতে জেনেশুনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে। জনগণ দেখতে চাই আপনার উপস্থাপিত পরিকল্পনায় জনগণের অধিকার, স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার, মানবিক ও সামাজিক মর্যাদা এবং অন্তর্ভুক্তি কতটুকু প্রতিফলিত হয়েছে।
কারণ জনকল্যাণ নিশ্চিত করতে রাজনীতির মত অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ একটি মাধ্যমকে জনগণের কাছে ধোঁয়াশা রেখে দিয়ে গত ৫৪ বছর ধরে সামাজিক ন্যায়বিচার, রাজনৈতিক অধিকার, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ থেকে মানুষকে বঞ্চিত করা হয়েছে। জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা তথা উল্লেখিত পর্যায়ের চরম বৈষম্য নিরসনে রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যপরিকল্পনা কি হবে তা জনগণের সামনে স্পষ্টত উপস্থাপন করা সময়ের দাবি। কারণ একটি রাষ্ট্র যুগের পর যুগ এভাবে অস্থিতিশীল রাজনৈতিক ব্যবস্থাপনা ও রাজনৈতিক অজবাবদিহিতার মধ্যদিয়ে চলতে পারেনা।
রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মেনুপেস্টো বাস্তবায়নে ব্যর্থ হলে জনগণের সামনে জবাবদিহিতা নিশ্চিতের প্রক্রিয়াটি স্পষ্ট করতে হবে। কারণ সাম্য, স্বাধীনতা, ন্যায়বিচার ও মানবিক মর্যাদা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৭১ সালে দেশের গণমানুষ স্বাধীনতা সংগ্রাম করে বিজয় অর্জন করলেও ৫৪ বছর ধরে সাধারণ জনগণ সেই স্বাধীনতার প্রকৃত স্বাদ গ্রহণ করতে পারেনি। ফলে রাজনীতিক ও ধনী ব্যবসায়িক শ্রেণি ব্যতীত বাকি সকল পর্যায়ের মানুষ চরম বৈষম্যের শিকার হয়ে মূলধারা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। এই গ্লানি ও হতাশা থেকে বের হয়ে আমরা নয়া বাংলাদেশ গঠন করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে চাই।
এখন সময় এসেছে রাজনৈতিক দলের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতাপূর্ণ আচরণ একইসাথে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ চর্চার মাধ্যমে রক্তস্নাত জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা গণমানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার। জনগণের সকল অংশের জন্য ন্যায়ভিত্তিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠুক এটিই প্রত্যাশা।