কাজ শেষ তবুও সাত মাস পরেও হস্তান্তর হয়নি মোরেলগঞ্জ উপজেলা মুক্তি্যোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন
মেজবাহ ফাহাদ, বাগেরহাট।
বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য ২ কোটি ৬৬ লক্ষ ৪০ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনের নির্মান কাজ প্রায় শেষ হবার পথে।ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বেধে দেয়া মেয়াদ শেষ হওয়ার ৭ মাস পরেও হাস্তান্তর হয় নি মোরেলগঞ্জ উপজেলা মুক্তি্যোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন।উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, ‘মুক্তিযোদ্ধাদের দুর্ভোগ লাঘবে ‘জায়গা প্রাপ্তি সাপেক্ষে’ প্রতিটি উপজেলায় একটি করে আধুনিক মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বর্তমান সরকার। এই ধারাবাহিকতায় মোরেলগঞ্জ উপজেলায় একটি আধুনিক মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের বরাদ্ধ হয়। গত ২০১৭ সালের মার্চ মাসে সাইনবোর্ড -বগি প্রধান সড়কের পৌরসভার ৪ নং ওয়ার্ডের নব্বইরশী বাসস্ট্যান্ড নামক স্থানে বাংলাদেশ সরকারের বন্দোবস্তকৃত ০৭ শতক জমির উপরে মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স্র ভবন নির্মান কাজের শুভ উদ্বোধন করেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক। উপজেলা মুক্তিযুদ্ধা কমপ্লেক্সের দৃশ্যমান এই ভবনটির নির্মান কাজ শুরু হয় ২০১৭ সালের মার্চ মাসে, সরকারের দেয়া কাজের অনুমতি পত্রে ভবনটি নির্মানে সংশ্লিষ্ট প্রতিস্ঠানের মেয়াদ ছিল ১ বছর, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এ প্রতিবেদককে জানান মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের ভবন নির্মানের জন্য নির্দিস্ট জায়গা নিয়ে কিছু জটিলতার কারনে ভবনের নির্মান কাজ দেরিতে শুরু করা হয়,তাই ভবন হস্তান্তরের নির্দিস্ট মেয়াদ শেষ হবার পরে দুই ধাপে কাজের মেয়াদ বাড়িয়ে দেয় সংশিস্ট কতৃপক্ষ,এদিকে উপজেলা প্রকৌশল শাখা বলছেন সরকারের দেয়া দ্বিতীয় ধাপে বাড়ানো মেয়াদ শেষ হয় ২০২০ সালের জুন মাসে,
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের মোরেলগঞ্জ উপজেলার সদ্য বিদায়ী নির্বাহী প্রকৌশলী আশিক ইয়ামিন বলেন তিনি মোরেলগঞ্জ থাকাকালীন সময়ে ঠিকাদরী প্রতিস্টানকে দেয়া দ্বিতীয় ধাপের মেয়াদ শেষ হয়েছে,তিনি আরো বলেন ভবনের মুল কাজ শেষ হয়েছে,ভিতরের ডেকরেশনে টুকটাক কিছু সমস্য দেখা দিয়েছে,সেগুলোর কাজ চলছে
তাই হস্তান্তরে একটু বিলম্ব হচ্ছে। মুক্তি্যোদ্ধাদের জন্য নির্মিত ভবনটি চারতলা বিশিষ্ট একটি সুউচ্চ ভবন। ভবনের বাইরে শোভা পাচ্ছে বঙ্গবন্ধুর বিশালাকৃতির ছবি। অভিন্ন নকশায় দৃষ্টিনন্দন এবং পরিপাটি স্থাপনা। নির্মিত মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন যেন একাত্তরের চেতনা ও দেশপ্রেমের দ্যুতি ছড়াচ্ছে।
নবনির্মিত ভবনটি উদ্বোধনের মাধ্যমে ৪৯ বছর পরে এই উপজেলার জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানরা নিজস্ব ভবনে বসার ঠাই পাবে। বর্তমানে মোরেলগঞ্জ উপজেলায় ভাতাভোগী মুক্তিযোদ্ধার সংখ্যা ৪৩৫ জন। বিভিন্ন দপ্তরের আধুনিক ভবন থাকলেও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোন আধুনিক ভবন ছিলো না এই উপজেলায়।
সরেজমিনে দেখা যায়, মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়ে গেছে। ভবনের ভিতরের ডেকরেশনের কিছু ত্রুটি দেখা দিয়েছে ,সেগুলো ঠিক করছে ঠিকাদার প্রতিস্টান।উদ্বোধন না হওয়ায় দৃশ্যমান এ ভবনটি এখন বন্ধ রয়েছে।
উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার লিয়াকত আলী খান বলেন,‘আজকের স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য দীর্ঘ ৯ মাস আমরা যুদ্ধ করেছি। স্বাধীনতার ৪৯ বছর পেরিয়ে গেলেও আমাদের বসার জন্য কোন আধুনিক ভবন এই উপজেলায় ছিলোনা। শেখ হাসিনা সরকারের উদ্যোগে আমাদের সেই প্রানের দাবি পূরণ হতে চলেছে। তবে ভবনটি নির্মান কাজ শেষ হলেও টুকিটাকি কিছু সমস্যার কারনে এখনো আমরা ব্যবহার করতে পারছিনা এটা আমাদের জন্য দুঃখজনক। ’
মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশল শাখা বর্তমান কথাকে বলেন ‘আমরা অত্যান্ত আন্তরিকতার সহিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মানের কাজ শেষ করেছি, মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট খুব শীগ্রই ভবনটি হস্তান্তর করা হবে। সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অনুমতি সাপেক্ষে খুব দ্রুত ভবনটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মাধ্যমে জতির শ্রেষ্ট সন্তানরা নিজস্ব ভবনে উঠবেন।’
মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ দেলোয়ার হোসেন দৈনিক বর্তমান কথা কে বলেন, ‘নবনির্মিত উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স ভবন নির্মান কাজ শেষে হয়েছে।ভবনের ভেতরে ডেকরেশনে কিছু কাজের ত্রুটি দেখা দেয়ায় সেগুলো দ্রুত ঠিক করতে ঠিকাদার প্রতিস্টানকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে,ভবনটি মুুক্তিযোদ্ধা মন্ত্রণালয়ের উদ্বোধন করার কথা তবে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে অফিসিয়াল কিছু কাজ শেষে আশা করছি খুব দ্রুত ভবনটির উদ্বোধনের মাধ্যমে জাতির শ্রেষ্ট সন্তানদের মাঝে হস্তান্তর করা হবে।