খুলে দেয়া হচ্ছে বান্দরবানের সব পর্যটন কেন্দ্র
বান্দরবান প্রতিনিধিঃ করোনা পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ পাচঁ মাস ধরে বন্ধ থাকার পর আগামী ১৭ আগস্ট খুলে দেয়া হচ্ছে বান্দরবানের সব পর্যটন কেন্দ্র। দীর্ঘ পাঁচ মাস বন্ধ থাকা পর্যটনশিল্প নির্ভর পাহাড়ের অর্থনীতির চাকাটি ঘুরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যে খুলে দেয়ার ঘোষণায় আবাসিক বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা এবং ধুয়া মুছার কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে সংশ্লিষ্টরা।ফিরতে শুরু করেছে ছাটাই এবং অঘোষিত ছুটিতে থাকা শ্রমিক-কর্মচারীরাও। প্রশাসন ও ব্যবসায়ীরা জানায়, করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মার্চ মাস থেকে বান্দরবান জেলায় শতাধিক ছোট-বড় আবাসিক হোটেলে, মোটেল, রিসোর্ট ও গেষ্টহাউজ দীর্ঘ পাচঁ মাস ধরে একটানা বন্ধ রয়েছে। দর্শনীয় স্থান মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক, নীলগিরি, প্রান্তিকলেক, স্বর্ণমন্দির, নীলদিগন্ত, বগালেক, ন্যাচারাল পার্ক’সহ সবগুলো পর্যটন স্পট বন্ধ রয়েছে। পর্যটন শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হস্তশিল্প, স্থানীয়দের ঐতিহ্যগত বৈচিত্র্যময় কোমর তাতেঁর পোশাক-কাপড়ের ব্যবসা বাণিজ্যও বন্ধ ছিলো। প্রায় দুই শতাধিকের বেশি টুরিস্ট গাড়ীও বন্ধ ছিলো দীর্ঘদিন। তবে সম্প্রতি পরিবহন, রেস্টুরেন্ট ও অন্যান্য দোকানগুলো খুলে দিলেও পর্যটন নির্ভর ব্যবসা বাণিজ্য গুলো জমেনি। পর্যটক শূন্য পর্যটন নগরী বান্দরবান জেলাটি যেন প্রাণহীন হয়ে পড়েছে। চারদিকে শুধুই হাহাকার। তবে স্বস্তির খবর হচ্ছে দর্শনীয় স্থান মেঘলা, নীলাচল, চিম্বুক, নীলগিরি, প্রান্তিকলেক, স্বর্ণমন্দির, নীলদিগন্ত, ন্যাচারাল পার্ক, পাহাড়ের চূড়ায় রুমায় অবস্থিত রহস্যময় প্রাকৃতিক বগালেক, দেশের পর্বতশৃঙ্গ ক্যাংক্রাডং, বিজয় পাহাড় চূড়া, রিজুক ঝর্ণা, তিনাফ সাইতার ঝর্ণা, জাদীপাই ঝর্ণা, থানচির নীলদিগন্ত, রেমাক্রী, নাফাকুম ঝর্ণা, অমিয়কুম ঝর্ণা, বাদুরগুহা, বড়পাথর, দেবতা পাহাড়, আলীকদমের দামতোয়া ঝর্ণা, পোয়ামুহুরী ঝর্না, আলীর সুড়ঙ্গপথ, রোয়াংছড়ির দেবতাকুম, শীলবাধাঁ ঝর্ণা, শিপ্পি পাহাড় চূড়া, রামজাদী বৌদ্ধ মন্দির, লামার মিরিঞ্জা পর্যটন স্পট, নাইক্ষ্যংছড়ি উপবন পর্যটন স্পট, কুমির খামার, সদরের শৈলপ্রপাত ঝর্ণা, আমতলী ঝর্ণা, ঝুরঝুড়ি ঝর্ণা বা রুপালী ঝর্ণা, বনপ্রপাতের মত দৃষ্টিনন্দন দর্শনীয় স্থানগুলো খুলে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন প্রশাসন। আগামী ১৭ আগস্ট থেকে বান্দরবানে পর্যটন শিল্পের সবগুলো দুয়ার খুলবে। বান্দরবান আবাসিক হোটেল-মোটেল রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো: সিরাজুল ইসলাম নিউজনাউকে বলেন, পর্যটনের সঙ্গে এই অঞ্চলে সার্বিক অর্থনীতি জড়িত। শুধুমাত্র আবাসিক হোটেল, মোটেল নয়। পর্যটক নির্ভর এই অঞ্চলের সব ধরনের ব্যবসা বাণিজ্যও। দীর্ঘ কয়েক মাস সবকিছু বন্ধ থাকায় অর্থনৈতিক ভাবে বিপর্যস্ত এই অঞ্চলের সর্বস্তরের মানুষ। তবে পর্যটন স্পট এবং আবাসিক হোটেল গুলো খুলে দেয়ার ঘোষণায় স্বস্তি ফিরেছে মানুষের মধ্যে। রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রফিকুল আলম নিউজনাউকে বলেন, দীর্ঘ চার মাস বন্ধ থাকার রেস্টুরেন্ট গুলো খুলে দিলেও পর্যটক না থাকায় বেচা-বিক্রি নেই বললেই চলে। মূলত এই অঞ্চলের সবগুলো ব্যবসা বাণিজ্য পর্যটক নির্ভরশীল। আগামী পনের আগস্টের পর পর্যটন স্পটগুলো এবং আবাসিক হোটেল খুলে দেয়ার কথা শুনেছি । সবকিছু খুলে দিলে হয়ত কিছুটা নিশ্বাস নিতে পারবে ব্যবসায়ীরা। এ বিষয়ে বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মো: দাউদুল ইসলাম নিউজনাউকে বলেন, ভ্রমণপিপাসু মানুষদের জন্য সবগুলো পর্যটন স্পট এবং আবাসিক হোটেল গুলো খুলে দেয়ার নীতিগত একটি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কিন্তু কখন থেকে সবকিছু উন্মুক্ত করে দেয়া হবে সেটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি। বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ-আলোচনা করা হচ্ছে। তবে আগামী ১৫ আগস্টের পর যে কোনো দিন পর্যটন শিল্পের দুয়ার খুলে দেয়া হবে।