বগুড়ায় ইয়াবাসহ গ্রেফতারকৃত তিন পুলিশ ও আনসার সদস্য কারাগারে

Share the post
এস.এম.জয়, বগুড়া প্রতিনিধি :বগুড়ায় ৮৫০ ইয়াবা ট্যাবলেটসহ তিন পুলিশ ও এক আনসার সদস্যকে গ্রেফতার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। শুক্রবার বিকেলে তাঁদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত শহরের বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের গ্রেফতার করা হয়।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা এই তথ্যের সত্যতা “Channel 21” -কে নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিরা হলেন, বগুড়া পুলিশ লাইনসে কর্মরত নায়েক আব্দুল আলীম (৩৩), জয়পুরহাট সদর ট্রাফিকে কর্মরত কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন (৩৭), রাজশাহী রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের (আরআরএফ) আব্দুল ওয়াহাব (৪০) এবং শফিপুর আনসার একাডেমির ব্যাটালিয়ন আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান (৪২।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার  সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল জানতে পারে শহরের সাতমাথা এলাকায় একাত্তর আবাসিক হোটেলের সামনে তিনজন ব্যক্তি ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রির জন্য অপেক্ষা করছেন। গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল সেখানে পৌঁছালে সন্দেহভাজন তিনজন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। আটকের পর আনসার সদস্য আবু সুফিয়ানের ব্যাগ তল্লাশি করে ৭০০টি ইয়াবা ট্যাবলেট জব্দ করা হয়।
এ- সময় আবু সুফিয়ান গোয়েন্দা পুলিশকে জানান, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন ও আব্দুল ওয়াহাব ইয়াবা ট্যাবলেট বিক্রি করে বিকাশে টাকা নেন। পরে কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেনের বিকাশ নম্বর চেক করে ২৭ হাজার টাকার লেনদেন দেখা যায়।
তাঁরা আরও জানান, বগুড়ায় কর্মরত পুলিশের নায়েক আব্দুল আলীম তাঁদের কাছ থেকে কিছুক্ষণ আগে ১৫০টি ইয়াবা ট্যাবলেট কিনে নিয়ে গেছেন। পরে তাঁকে শহরের নবাববাড়ী সড়কের পুলিশ প্লাজার সামনে থেকে আটক করা হয়। তাঁর হাতে থাকা ব্যাগ তল্লাশি করে ১৫০টি ইয়াবা ট্যাবলেট পাওয়া যায়।
আটক চারজনের মধ্যে নায়েক আব্দুল আলীমকে তাৎক্ষণিক বগুড়া পুলিশ লাইনস কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং অপর তিনজনকে গোয়েন্দা পুলিশের হেফাজতে নেওয়া হয়।
রাত সাড়ে ১০টার দিকে শহরে মাটিডালি এলাকায় দায়িত্ব পালনকালে গোয়েন্দা পুলিশ নায়েক আব্দুল আলীমকে আটক করে। পরে বগুড়া জেলা গোয়েন্দা পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কুদ্দুস বাদী হয়ে চারজনের নামে সদর থানায় একটি মামলা করেন।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন, আব্দুল ওয়াহাব ও আনসার সদস্য আবু সুফিয়ানের বাড়ি বগুড়া জেলার সোনাতলা ও সারিয়াকান্দি উপজেলায়। নায়েক আব্দুল আলীমের বাড়ি সিরাজগঞ্জ জেলার উল্লাপাড়ায়।
আনসার সদস্য আবু সুফিয়ান বিগত সরকারের আমলে সমাজকল্যাণমন্ত্রীর বাসভবনে ডিউটি করতেন, কনস্টেবল সাখাওয়াত হোসেন বঙ্গভবনে ডিউটি করতেন। অপর দুজন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে কর্মরত ছিলেন।
তাঁরা একে অপরের সঙ্গে পূর্বপরিচিত এবং ঢাকায় বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। ৫ই আগস্টের পর চারজন চার জেলায় বদলি হলেও তাঁদের মধ্যে যোগাযোগ ছিল এবং তাঁরা মাদক কারবার করতেন।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, তাঁদের অপরাধের দায় বাহিনী নেবে না। তাঁদের গ্রেফতার করে মামলা দিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

বগুড়ায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণ করে অন্তঃসত্ত্বার ঘটনায় প্রেমিক আলভী আমিন গ্রেফতার

Share the post

Share the postএস.এম.জয়,বগুড়া :বগুড়ার শেরপুরে বিয়ের প্রলোভনে স্কুল ছাত্রীকে ধর্ষণ ও আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার(৩০শে সেপ্টেম্বর)রাতে ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রী বাদি হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।পরে(১লা অক্টোবর) মামলায় অভিযুক্ত আলভী আমিন (২২) নামে ওই যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সে উপজেলার ভবানীপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের রুহুল আমিনের ছেলে। বুধবার দুপুরের পর গ্রেফতারকৃতকে […]

বগুড়ায় পূর্ব শত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তদের হামলায় যুবদল নেতা রাহুল সরকার নিহত

Share the post

Share the postএস.এম.জয়,বগুড়া :বগুড়ার কাহালুতে দুর্বৃত্তদের হামলায় রাহুল সরকার (৩৫) নামে এক যুবদল নেতা নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার (৩০শে সেপ্টেম্বর) দুপুরে কাহালু উপজেলার মালঞ্চা ইউনিয়নের মাগুরা গ্রামের উত্তর পাড়ার অতর্কিত হামলার শিকার হয়ে নিহত হন। বিকেল সোয়া ৪টার দিকে কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নিতাই চন্দ্র দাস ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। নিহত রাহুল সরকার (৩৫) বগুড়া […]