মেট্রোরেলের যাত্রা শুরু, উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
রাজধানীর উত্তরায় মেট্রোরেলের নামফলক উন্মোচন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর উত্তরায় সুধী সমাবেশে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী।তার সঙ্গে উপস্থিত আছেন ছোট বোন শেখ রেহানা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম।বুধবার সকাল ১১টা ৫ মিনিটে মেট্রোরেলের নামফলক উন্মোচন করেন তিনি।
এর আগে ১১টার দিকে উত্তরায় মেট্রোরেলের উদ্বোধনে স্থলে এসে উপস্থিত হোন প্রধানমন্ত্রী। এর মাধ্যমে স্বপ্নের মেট্রোরেলের যাত্রা শুরুর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হলো। দেশের গণপরিবহনে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের নতুন এই মাইলফলকের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।মেট্রোরেলের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আতশবাজির কর্মসূচি থাকলেও পরে সেটি বাদ দেওয়া হয়েছে।
মেট্রোরেলের দিয়াবাড়ি স্টেশন থেকে খানিকটা দূরে তৈরি করা সমাবেশ মঞ্চে ভাষণ দিয়ে দিয়াবাড়ি স্টেশনের পূর্ব দক্ষিণ পাশে দুটি তেঁতুল গাছের চারা রোপণ করবেন প্রধানমন্ত্রী।
এরপর প্রধানমন্ত্রী স্টেশনের দোতলায় টিকিট কেটে তৃতীয় তলায় যাবেন। তৃতীয় তলা থেকে মেট্রোরেলে উঠে আগারগাঁও যাবেন।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্বোধনের পরদিন থেকে রাজধানীর উত্তরা থেকে আগারগাঁও রুটে চলবে মেট্রোরেল।
এর আগে মেট্রোরেলের উদ্বোধন উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের গর্ব ও আকাঙ্ক্ষার প্রতীক মেট্রোরেল বাংলাদেশের নগর গণপরিবহণ ব্যবস্থায় একটি অনন্য মাইলফলক। উদ্বোধনের এই মাহেন্দ্রক্ষণে আমি দেশবাসীকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।
পৌনে ১২ কিলোমিটার এই পথ ৬০ টাকা ভাড়ায় যেতে সময় লাগবে মাত্র ১০ মিনিট। আগামী বছর ডিসেম্বরে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রোরেল চালু হবে। ২০২৫ সালে কমলাপুর পর্যন্ত চলবে। সে ক্ষেত্রে পুরোটা চালু হলে উত্তরা থেকে মতিঝিলে যেতে ৩৮ মিনিট লাগবে। ঘণ্টায় ৬০ হাজার অর্থাৎ দিনে ৫ লাখ যাত্রী মেট্রোরেলে চলাচল করতে পারবেন। মেট্রোরেল নির্মাণ ও পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড-ডিএমটিসিএল।
সংস্থাটি বলছে, উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত পথে যেখানে লাইন সোজা, সেখানে ঘণ্টায় সর্বোচ্চ ১০০ কিলোমিটার গতিতে চলবে মেট্রোরেল। যেখানে বাঁক রয়েছে, সেখানে গতি কিছুটা কমবে।
প্রথমদিকে মঙ্গলবার বাদে প্রতিদিন মেট্রোরেল চলবে সকাল ৮টা থেকে বেলা ১২টা পর্যন্ত। উত্তরা থেকে আগারগাঁও রুটের মাঝপথে কোথাও থামবে না ট্রেন। পুরো যাত্রাটি নিয়ন্ত্রণ করা হবে সফটওয়্যারের মাধ্যমে।
এর জন্য উত্তরার দিয়াবাড়ির ডিপোতে স্থাপন করা হয়েছে অপারেশন কন্ট্রোল সেন্টারে-ওসিসি। যাত্রীদের যাতায়াত সম্পর্কে দিকনির্দেশনা পরে ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে।
ডিএমটিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ এন সিদ্দিক বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য মেট্রোরেলে কোনো হাফ ভাড়া থাকছে না।এমনিতেই যে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে, সেটা খরচের ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ কম। এ ছাড়া যারা স্থায়ী কার্ড কিনে যাতায়াত করবেন, তাদের জন্য ১০ শতাংশ ছাড় আছে।
মুক্তিযোদ্ধারা বিনা মূল্যে যাতায়াত করতে পারবেন। পঙ্গুদের জন্য ছাড় আছে। এসব কারণে শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা করে হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা নেই।
এমডি আরও বলেন, অন্যান্য স্টেশনে মেট্রোরেল থামানোর জন্য তাদের সব প্রস্তুতি আছে। কিন্তু মানুষ অভ্যস্ত নয় বলে এখনই তারা থামাচ্ছে না।আগামী ২৬ মার্চ থেকে থামবে সকল স্টপেজে। এই তিন মাস মানুষকে অভ্যস্ত করা হবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, মেট্রোরেলের স্থাপনা ও যাত্রীদের নিরাপত্তায় থাকছে এমআরটি পুলিশ নিয়োগের আইন হয়েছে, তবে এখনো কাঠামো দাঁড় করানো যায়নি। আপাতত মেট্রোরেলের দায়িত্বে থাকবে ঢাকা মহানগর পুলিশ। এছাড়া মেট্রোরেল উদ্বোধন উপলক্ষে এলাকাবাসীর জন্য জারি করা ৭ নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোর অবস্থানে ডিএমপি।