

সোহেল খান দূর্জয়,নেত্রকোণা প্রতিনিধি : টানা ভারি বর্ষণ অব্যাহত থাকায় ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বারহাট্টা উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরো অবনতি হয়েছে। উপজেলার ৯০ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। হাওর এলাকা দিয়ে পানি বাড়া অব্যাহত থাকায় পানিতে তলিয়ে গেছে ৭টি ইউনিয়নের নতুন নতুন এলাকা। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে উপজেলার কয়েক হাজার মানুষ বাড়ি-ঘর ছেড়ে আশ্রয় কেন্দ্রে উঠেছেন।বারহাট্টা থানা পুলিশের পাশাপাশি সেনা সদস্যরা বানভাসি নারী-পুরুষ শিশুদের উদ্ধার করে আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে আসছেন। গ্রামীণ এলাকার বেশিরভাগ সড়ক, রাস্তাঘাট বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
২০০০ এর পরে এটি সবচেয়ে বড় বন্যা বলে মনে করছেন অনেকে। যেভাবে পানি বাড়ছে তা অব্যাহত থাকলে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন হতে পারেন বারহাট্টা উপজেলার মানুষ এমন আশঙ্কা সংশ্লিষ্টদের।
১৯৮৮ সালের বন্যার পর এতবড় বন্যা আর কেউ দেখেননি। উঁচু উঁচু গ্রাম পর্যন্ত পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। নেত্রকোণার সাথে বারহাট্টার সড়ক যোগাযোগ প্রায় বিচ্ছিন্নের পথে রয়েছে। সোমেশ্বরী ও কংশ নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
ইতোমধ্যে নেত্রকোণায় বন্যার স্থায়িত্ব ১৭ দিন পেরিয়ে যাচ্ছে। এরই মধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে উজানে ঢল এবং দেশের ভেতরে ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে তৃতীয় দফায় বন্যার প্রকোপ শুরু হয়েছে। এই দফার বন্যার স্থায়িত্ব আরও ১০ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত হতে পারে। ফলে এবার সহজে বন্যার হাত থেকে মুক্তি পাচ্ছে না নেত্রকোণাবাসী। উত্তরাল, মধ্যাল এবং উত্তর-পূর্বালের বিভিন্ন জেলা দীর্ঘদিন ধরেই বন্যার কবলে রয়েছে। নতুন করে বন্যা পরিস্থিতি আরও জেলায় বিস্তার লাভ করতে পারে বলেও তারা জানায়।
পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, তৃতীয় দফায় বন্যা পরিস্থিতি আরও ভয়ঙ্কর হতে পারে। এ বছর গত ১৩ জুন নেত্রকোণা প্রথমবারের মতো বন্যার প্রকোপে পড়ে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে পানি কমতে পারে। কিন্তু দু’দিন পানি কমতে না কমতেই দ্বিতীয় দফার বন্যার প্রকোপ শুরু। গত ১১ জুন থেকে দ্বিতীয় দফায় বন্যার পানি বৃদ্ধি পেতে পারে। কিন্তু এ দফায় দুদিন কমতে না কমতেই আবারও নদ-নদীগুলোর পানি বাড়তে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে বন্যার পানিতে জেলার চারপাশ আক্রান্ত হয়ে পড়ছে। অনেক নিম্নাঞ্চল তলিয়ে গেছে।অন্যদিকে গত কয়েকদিনের ভারি বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এই বৃষ্টি আরো কয়েক দিন অব্যাহত থাকতে পারে। গতকাল কাল বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় জেলার নিম্নালে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে। অপরদিকে জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।