নেত্রকোনায় কাদঁছে মানুষ বাড়ছে পানি জনজীবন বিপর্যস্ত

Share the post
সোহেল খান দূর্জয়,নেত্রকোণা প্রতিনিধি : মাসখানেক আগেই বন্যার পানিতে ডুবেছিল নেত্রকোণার বিভিন্ন অঞ্চল। সেই ধকল এখনো কাটিয়ে উঠতে পারেনি সেখানকার মানুষ। আবারও নেত্রকোণাবাসি বন্যায় ডুবেছে। এবং এবারের বন্যা গত মাসের চেয়ে তো বটেই স্মরণকালের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। নেত্রকোণা জেলার ৯০ ভাগ এলাকা বন্যার পানিতে ডুবেছে। এর মধ্যে নেত্রকোনার খালিয়াজুরী, বারহাট্টা ও কলমাকান্দা দূর্গাপুরের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।
নেত্রকোনায় আকস্মিক বড় বন্যার কারণ হচ্ছে ভারতের মেঘালয় ও আসামের বৃষ্টি। দেশটির আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, মেঘালয়ের চেরাপুঞ্জিতে গত বৃহস্পতিবার দুপুর থেকে শুক্রবার দুপুর পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় বৃষ্টি হয়েছে ৯৭২ মিলিমিটার। যা সেখানকার জুন মাসের বৃষ্টিপাতের বিবেচনায় ১২২ বছরের মধ্যে তৃতীয় সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।
নেত্রকোনায় বন্যায় লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়েছেন। তাদের আশ্রয় মিলছে না। খাবার ও বিশুদ্ধ পানির সংকট দেখা দিয়েছে। উদ্ধারের অপেক্ষায় আছেন অসংখ্য মানুষ। উদ্ধার তৎপরতা শুরু হলেও পরিস্থিতি সামাল দিতে নাভিশ্বাস উঠছে প্রশাসনের। যাতায়াত-যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ায় তারা নিজে থেকে কোথাও যেতে পারছেন না। শুধু নৌযান ব্যবহার করে উদ্ধার কাজ এগিয়ে নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। আটকে পড়া মানুষের তুলনায় নৌযানের সংখ্যাও কম বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে আরো নৌযান ব্যাবহার করার কথা সক্রিয়ভাবে করা হচ্ছে।
বন্যার্ত মানুষদের জরুরিভিত্তিতে খাবার ও পানি সরবরাহ প্রশাসন। পানি বিশুদ্ধকরণ সরঞ্জাম দিতে হবে। পানিবাহিত রোগ প্রতিরোধে নিতে হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা। গবাদি পশু-পাখির আশ্রয় ও খাবারের সংস্থান করাও জরুরি। সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি সংস্থা, বিভিন্ন গোষ্ঠী ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
বন্যা শুধু নেত্রকোনাবাসিকেই ভোগাচ্ছে না। উত্তরাঞ্চলের অনেক জেলাও বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। উজানের পানির সঙ্গে যোগ হয়েছে অভ্যন্তরীণ বৃষ্টি। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, সহসাই উজান থেকে পানি আসা বন্ধ হবে না। যে কারণে জেলায় বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে আরো বেশি। কাজেই সরকারকে বন্যা মোকাবিলায় তৎপর হতে হবে। বন্যা নেত্রকোনার চিরচেনা প্রাকৃতিক দুর্যোগ। একে কীভাবে মোকাবিলা করতে হয় সেটা আমাদের ভালো ভাবেই জানা আছে। এবারও এই চ্যালেঞ্জ নেত্রকোনার মানুষ সফলভাবে মোকাবিলা করবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। বন্যা শুধু দুর্ভোগ আর দুর্গতিই বয়ে আনে না। এর অনেক সুফলও মেলে। ভাটির জেলা হিসেবে এখানে বন্যা হবে সেটা স্বাভাবিক। বন্যা মোকাবিলার ব্যবস্থাও প্রকৃতি আমাদের দিয়ে রেখেছে। সেটা হচ্ছে- নদ-নদী, হাওর, বিল, খালসহ বিভিন্ন জলাশয়। তবে নদ-নদীসহ বিভিন্ন জলাশয়ের সংখ্যা কমে যাওয়ায় নেত্রকোনায় বন্যার পানি ধারণের ক্ষমতা অনেক আগেই কমেছে। এখনো যেসব নদনদী বা জলাশয় আছে সেগুলোর দখল-দূষণে বিপর্যস্ত, গভীরতা কমে গেছে। নদ-নদীগুলো রক্ষা করা না গেলে, এর স্বাভাবিক গতি-প্রবাহ বজায় রাখা না গেলে বন্যা মোকাবিলা করার সক্ষমতা ব্যহত হবে। বিষয়টি নীতিনির্ধারকদের অনুধাবন করতে হবে এবং সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।
বেশি দূর্ভোগে পরেছে স্কুল পড়ুয়া কোমলমতি শিক্ষার্থীরা।
জেলা প্রশাসক অঞ্জনা খান মজলিস বলেন, আমরা বন‍্যাকবলিত এলাকায় ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ শুরু করেছি। এবং যতদিন বন‍্যা আছে আমাদের ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ সহ সকল সহযোগিতা অব‍্যহত থাকবে ইনশাআল্লাহ।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

ইবি’র লালন শাহ হল পরিদর্শনে উপাচার্য

Share the post

Share the postইবি প্রতিনিধি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের লালন শাহ হলের সার্বিক অবস্থা ও খোঁজখবর নিতে সশরীরে হল পরিদর্শন করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। বুধবার (১৩ আগস্ট) রাত সাড়ে ৯টার দিকে তিনি হল পরিদর্শনে আসেন। এ সময় হলের লাইব্রেরীর জন্য নিজ অর্থায়নে ৫ হাজার টাকা প্রদান করেন তিনি। পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র উপদেষ্টা প্রফেসর […]

ইবিতে পূবালী ব্যাংকের উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

Share the post

Share the postইবি প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মুগ্ধ সরোবর এলাকায় পূবালী ব্যাংক পিএলসি কুষ্টিয়া শাখার উদ্যোগে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১৩ আগস্ট) দুপুর সাড়ে ১২টায় এ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পূবালী ব্যাংক পিএলসি’র ফরিদপুর অঞ্চলপ্রধান ও উপ-মহাব্যবস্থাপক মোঃ জহিরুল ইসলাম, কুষ্টিয়া শাখার […]