সিএমপিতে ম্যাজিস্ট্রেট নেই, অপরাধ দমনে ধীরগতি

চট্টগ্রাম : নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় নগরের অপরাধ দমনে গতি আসছে না চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, অস্ত্র ও মাদক উদ্ধার এবং ভেজাল বিরোধী অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় কাঙ্ক্ষিত সাফল্য পাচ্ছে না নগর পুলিশ।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলে নগরীতে অপরাধ দমনে গতি আসবে বলে মনে করছে নগর পুলিশ। অথচ ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ ও র্যাবের অনুকূলে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিযুক্ত রয়েছে।
মাদক, ভেজাল বিরোধী ও অন্যান্য অভিযানে আইন অনুযায়ী কারাদ- ও জরিমানা করছেন ম্যাজিস্ট্রেটগণ। সেখানে অভিযানে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে তাৎক্ষণিক শাস্তি প্রদান করায় অপরাধ দমনে সাফল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
নগর পুলিশ বলছে, শিল্প ও বাণিজ্যের কেন্দ্র বন্দর নগরী চট্টগ্রামে ১৯৭৮ সালের ৩০ নভেম্বর চট্টগ্রাম নগর পুলিশের কার্যক্রম শুরু হয়। বর্তমানে চট্টগ্রাম নগর পুলিশে প্রায় ছয় হাজার পাঁচশত অফিসার ও ফোর্স রয়েছে।
তারা চট্টগ্রাম মহানগরী এলাকায় বসবাসরত প্রায় ৭০ লক্ষাধিক নাগরিকের জীবন ও সম্পত্তির নিরাপত্তা এবং শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার্থে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে।
‘অর্থনৈতিক দিক থেকে বন্দর নগরীর চট্টগ্রাম দেশের প্রধান বাণিজ্যিক নগর। চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে দেশের অধিকাংশ আমদানি-রপ্তানি সম্পাদন হয়ে থাকে। বিগত বছরগুলোতে কর্ণফুলী নদীর উভয় তীরে ব্যাপকহারে শিল্পায়ন হয়েছে।
শিল্প-কারখানা ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে দক্ষ ও অদক্ষ জনগোষ্ঠির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।’-বলছে নগর পুলিশ। এ প্রসঙ্গে সিএমপির অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) আবু বকর সিদ্দিক বলেন, সিইপিজেড, কর্ণফুলী ইপিজেড ও কোরিয়ান ইপিজেডসহ শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোতে লক্ষ লক্ষ লোক কাজ করছে।
এর পাশাপাশি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল ( কর্ণফুলী টানেল) ও বে-টার্মিনাল যোগ করছে নতুন মাত্রা। শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর, চট্টগ্রাম রেলওয়ে স্টেশন এবং সড়ক পথে দেশের প্রতিটি জেলার সাথে গতিশীল যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়েছে।
বর্তমানে এ মহানগরে সরকারি ও বেসরকারি ৫টি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৭৯টি কলেজ রয়েছে। কর্মসংস্থান, উন্নত চিকিৎসা সেবা ও ভালো মানের স্কুল-কলেজের জন্য প্রতিনিয়ত লোকজন উন্নত নাগরিক সুবিধা ও জীবিকার সন্ধানে চট্টগ্রামে আসছে।
ফলে মহানগরে জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মহানগর এলাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং শিল্পায়ন ও নগরায়নের ফলে ক্রমবর্ধমান এ নগরে অপরাধের মাত্রা বৃদ্ধিসহ অপরাধের ধরণও দিন দিন পরিবর্তিত হচ্ছে।
তিনি বলেন, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ অপরাধ দমন, আইন শৃঙ্খলা রক্ষা, অস্ত্র উদ্ধার, ভেজাল বিরোধী অভিযানসহ বহুমাত্রিক কার্যক্রম গ্রহণ করে থাকে। অভিযানের ফলাফলের ভিত্তিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়।
তবে মাদকের পরিমাণ কম হলে ও অনান্য কিছু অপরাধের ক্ষেত্রে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ধৃত অপরাধিদের তাৎক্ষণিক শাস্তির ব্যবস্থা করলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয়। কিন্তু অভিযানের সময় প্রায় কখনোই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়া যায় না।
থানায় রুজুকৃত নিয়মিত মামলা সমূহের বিচার শেষে শাস্তির ব্যবস্থা যথেষ্ট সময় সাপেক্ষ। মামলা রুজুর পরে আসামিরা আদালত থেকে জামিন গ্রহণ করে পুনরায় একই অপরাধে লিপ্ত হচ্ছে।
অপরাধিদের গ্রেফতারের পর মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাৎক্ষণিকভাবে বিচারের ব্যবস্থা করা গেলে অপরাধের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবে। ঢাকা মেট্রোপিটন পুলিশ এবং র্যাবের মত চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের অনুকূলে সার্বক্ষণিক একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পদায়ন করা জরুরি বলে মত দেন তিনি।