

রাবি প্রতিনিধি:বাংলাদেশি গবেষক ও বিজ্ঞানীদের জন্য বৈশ্বিক স্কলারশিপ ও ফেলোশিপের সুযোগ বৃদ্ধিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি লিখেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ফিশারিজ বিভাগের অধ্যাপক ও গবেষক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন। পাশাপাশি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জৈবপ্রযুক্তি, কৃষি, মৎস্য, প্রাণিসম্পদ, ব্লু ইকোনমি এবং সামাজিক উদ্যোক্তাবৃত্তির মতো অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্রে যৌথ ফেলোশিপের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়েছেন তিনি।
সোমবার (২৪ মার্চ) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এক পোস্টে ড. মোহা. ইয়ামিন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারপ্রধানের নিকট লেখা খোলা চিঠিটি প্রকাশ করেন।
অধ্যাপক ড. মোহা. ইয়ামিন হোসেন চিঠিতে বলেন, “মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস স্যার, আপনাকে জানাই আন্তরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা এবং সর্বোচ্চ সম্মান। আপনার দূরদর্শী নেতৃত্ব, মানবিক দর্শন এবং বৈশ্বিক সংযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের শিক্ষা, গবেষণা ও যুবশক্তির উন্নয়নে আপনি যে অবদান রেখে চলেছেন, তা সমগ্র জাতিকে অনুপ্রেরণা যুগিয়েছে। দেশের তরুণ প্রজন্মের বিজ্ঞানী, গবেষক ও উদ্যোক্তাদের প্রতি আপনার অবিরাম সমর্থন আমাদের জন্য গর্বের বিষয়।”
এ ছাড়া তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, “আপনি সমগ্র বিশ্বের রাষ্ট্রনায়ক, নীতিনির্ধারক, বিজ্ঞানী এবং শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে যে সুদৃঢ় সম্পর্ক গড়ে তুলেছেন, তার মাধ্যমে বাংলাদেশের মেধাবী তরুণদের জন্য আন্তর্জাতিক পর্যায়ে স্কলারশিপ ও ফেলোশিপের সুযোগ বৃদ্ধিতে একটি ঐতিহাসিক ভূমিকা রাখতে পারেন বলেই আমরা বিশ্বাস করি। বর্তমানে দেশের অসংখ্য মেধাবী তরুণ উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার সুযোগ পেলে বিশ্বজুড়ে উদ্ভাবনী অবদান রাখতে সক্ষম হবেন, যা বাংলাদেশকে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতিতে রূপান্তরের পথে এগিয়ে নেবে।”
প্রধান উপদেষ্টার নিকট অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, “আপনি যেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সরকার, বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণা সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশনগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে বাংলাদেশি তরুণদের জন্য বিশেষ স্কলারশিপ প্রোগ্রাম চালু করতে উৎসাহিত করেন। এর পাশাপাশি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (Artificial Intelligence), নবায়নযোগ্য জ্বালানি (Renewable Energy), জৈবপ্রযুক্তি (Biotechnology), কৃষি (Agriculture), মৎস্য (Fisheries), প্রাণিসম্পদ (Livestock), ব্লু ইকোনমি (Blue Economy) এবং সামাজিক উদ্যোক্তাবৃত্তি (Social Entrepreneurship)-এর মতো অগ্রাধিকারী ক্ষেত্রে যৌথ ফেলোশিপের ব্যবস্থা করলে আমাদের তরুণরা বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরাসরি ভূমিকা রাখতে পারবেন।”
অধ্যাপক ইয়ামিন হোসেন আশা প্রকাশ করে বলেন, “আপনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় এ পদক্ষেপ বাস্তবায়িত হলে, বাংলাদেশি মেধাবীরা বিশ্বসেরা প্রতিষ্ঠানে কাজ ও গবেষণার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক গড়ে তুলবে এবং দেশে ফিরে এসে জ্ঞানভিত্তিক উদ্যোক্তা হিসেবে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য রোল মডেল হয়ে উঠবেন। এভাবেই বাংলাদেশকে ‘স্মার্ট নেশন’-এ পরিণত করার স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে আমরা এগিয়ে যাব। আপনার সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি। আপনার সহযোগিতা ও নেতৃত্বে আমরা বিশ্বাস রাখি।”
প্রসঙ্গত, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এই অধ্যাপক গবেষণা ও শিক্ষাক্ষেত্রে নীতিগত উন্নয়নের পক্ষে বরাবরই সরব। বিশেষ করে তরুণ গবেষকদের আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে তিনি নিয়মিত মতামত প্রকাশ করে থাকেন।