

জলিলুর রহমান জনি সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি:সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়ায় একটি সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের ঘটনায় বড় বোনের বিরুদ্ধে তার ছোট ভাই গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন। অভিযোগ অনুযায়ী, বড় বোন হোসনে আরা মিমি তার ভারসাম্যহীন বাবার কাছ থেকে প্রায় দুই কোটি টাকা মূল্যের ৬ বিঘা জমি কৌশলে লিখে নিয়েছেন।
অ্যাডভোকেট আব্দুল হামিদের ছেলে টিএম নুর এজাজ এক সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ তুলে ধরেন। এজাজ জানান, গত ১৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় সিরাজগঞ্জ শহরের কালিবাড়ী মোড় থেকে চারজন ব্যক্তি নিজেদের ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে তাকে জোরপূর্বক একটি গাড়িতে তুলে নিয়ে যায়। পরে তারা জানায়, তারা একটি বেসরকারি রিহ্যাব সেন্টারে কাজ করেন এবং তার বড় বোন হোসনে আরা মিমি তাদের ভাড়া করেছেন। এসময় তার বোনের সহযোগী সোহাগ ও ছিল। তাকে রেনেসাঁ রিহ্যাব সেন্টারে আটকে রেখে মাদকাসক্ত বলে মিথ্যাচার করা হয়।
নুর এজাজ বলেন, রিহ্যাব সেন্টারে তাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। একই সময়ে সোহাগ তার স্ত্রী ও শিশুসন্তানকে সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় নিয়ে বড় বোনের বাসায় অবরুদ্ধ করে রাখেন। পরবর্তীতে এক আত্মীয়ের চল্লিশা অনুষ্ঠানের সুযোগে তার স্ত্রী পালিয়ে তাকে মুক্ত করার চেষ্টা করেন। দুই মাস আটক থাকার পর আত্মীয়-স্বজন অর্থের বিনিময়ে তাকে রিহ্যাব থেকে মুক্ত করে। এদিকে তাকে রিহ্যাবে আটক রেখে তার বাবার দুই কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৬ বিঘা সম্পত্তি গত মার্চ মাসে বড় বোন তিনটি দলিলে লিখে নেন।
নুর এজাজের দাবি, তার বাবাকে ভুল বুঝিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে, যা তার কাছে ভিডিও প্রমাণ রয়েছে। তিনি আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করলে থানা থেকে তাকে আদালতে মামলা করার পরামর্শ দেওয়া হয়। আদালতে মামলা করতে গেলে আইনজীবী সমিতির নেতারা আলোচনার মাধ্যমে বিষয়টি মীমাংসার আশ্বাস দিলেও কোন সমাধান হয়নি।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে বড় বোন হোসনে আরা মিমি বলেন, তাদের তিন বোন সেই সম্পত্তির অংশ তার নামে লিখে নিয়েছেন। ভাইয়ের অংশ বাদ রাখা হয়েছে। ভাইয়ের মাদকাসক্তির কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নুর এজাজ সুষ্ঠু তদন্ত ও জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, সোহাগ ও তার পরিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে এবং র্যাব দিয়ে তাকে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছে। এ বিষয়ে তার কাছে ফেসবুক মেসেঞ্জারের বার্তা ও অডিও রেকর্ড রয়েছে।
এই পারিবারিক বিরোধ নিয়ে বিভিন্ন মহলে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। এ ধরনের ঘটনা পারিবারিক সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা এড়াতে পারিবারিক সম্পত্তি নিয়ে সচেতনতা এবং সমঝোতার