নেত্রকোনার বারহাট্টায় বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী ও সাংবাদিক পুত্রের ওপর মাদক কারবারিদের হামলা

Share the post
সোহেল খান দূর্জয়, নেত্রকোনা: বারহাট্টায় মাদক বিক্রি চলবে না, ছাত্র সমাজ মানবো না, ফেইসবুকে এই স্টেটাস দেওয়ায় নেত্রকোনার বারহাট্টায় মাদকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ায় মাদক কারবারিদের হামলার শিকার হয়েছেন এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। মারধর করে হামলাকারীরা তাঁর সাথে থাকা দুটি স্মার্টফোন ভেঙে ফেলে এবং পকেটে থাকা টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বারহাট্টা থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি স্থানীয় সেনা ক্যাম্পেও লিখিত অভিযোগ করেছেন। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর মনিরুজ্জামান খান পিয়াস। তিনি বেসরকারি ‘ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস এগ্রিকালচার এন্ড টেকনোলজি’র (আইইউবিএটি) সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। মনিরুজ্জামান খান বারহাট্টা উপজেলার গুহিয়ালা গ্রামের মো. রুকনুজ্জামান খানের ছেলে। তাঁর বাবা রুকনুজ্জামান খান দৈনিক যায়যায়দিন পত্রিকার বারহাট্টা উপজেলা প্রতিনিধি।
হামলাকারীদের মধ্যে মো. আইনাল হক নামে একজনের নাম উল্লেখ করেছেন মনিরুজ্জামান। বাকিদের তিনি চিনেন না বলে জানান। অভিযুক্ত আইনাল হক বারহাট্টা শহরের মহাজনপাড়ার মাদক ব্যবসায়ী মৃত আ. ছাত্তারের ছেলে। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামান খান জানান, ঢাকায় আমরা ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীরা মিলে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন করেছি। স্বৈরাচার পতনের পর সম্প্রতি এলাকায় এসেছি। নিজের এলাকায় মাদকের ব্যাপক বিস্তার দেখে গত ২৮ আগস্ট আমি ফেসবুকে পোস্টে লিখি- ‘বারহাট্টায় মাদক ব্যবসা চলবে না আমরা সাধারণ ছাত্রছাত্রীরা মানবো না। এর দুইদিন পর গত ৩১ আগস্ট সন্ধ্যায় আমার ওপর হামলা চালায় স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী মো. আইনাল হকসহ তার সঙ্গীরা। মারধর করার পাশাপাশি সঙ্গে থাকা দুটি স্মার্টফোন ভেঙে ফেলে এবং পকেটে মানিব্যাগে থাকা সাড়ে আটারো হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।মনিরুজ্জামান খান আরও জানান, ওইদিন বিকাল ৫টার দিকে আমি বাজার থেকে বাসায় ফিরছিলাম। পথে শহরের বৃকালিকা এলাকায় রেললাইনের পাশে স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী মো. আইনাল হকসহ ৫-৬ জন আমার পথরোধ করে কিল ঘুষি মারতে থাকে। কারণ জিজ্ঞেস করলে তারা বলে- ‘শালারপুত তুই মাদকের বিরুদ্ধে ফেসবুকে পোস্ট দেস, পোস্ট দেওয়া বের করতাছি।’ এসব বলে মারধর করতে থাকে আর পকেটে থাকা মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেয়। এ সময় স্মার্টফোন বের করে ভিডিও করার চেষ্টা করলে মোবাইল কেড়ে নিয়ে আছাড় দিয়ে ভেঙে ফেলে। অপর একটি স্মার্টফোন পকেটে ছিল সেটিও লাথি মেরে ভেঙে ফেলে। আমার চিৎকার শুনে আশপাশের লোকজন চলে এলে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। এ ঘটনায় থানায় ও সেনাক্যাম্পে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।
শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের বাবা সাংবাদিক রুকনুজ্জামান বলেন, আমার ছেলে ভার্সিটিতে পড়ে। সে দেশের জন্য সংগ্রাম করে দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছে। অথচ নিজের এলাকায় মাদক ব্যবসা নিয়ে কথা বলায় হামলার শিকার হয়েছে। এটা দুঃখজনক। হামলাকারী মাদক ব্যবসায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের ওপর হামলার ঘটনাটি জানাজানি হলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নিন্দা জানান সকলেই। তাই হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানান সকল শ্রেণি পেশার মানুষ। এ বিষয়ে বারহাট্টা থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মো. রফিকুল ইসলাম জানান, শিক্ষার্থী মনিরুজ্জামানের অভিযোগটি পেয়েছি। এ ঘটনায় মামলা রেকর্ডভুক্ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে অভিযুক্তকে ধরতে দুই দফা পুলিশের পক্ষ থেকে অভিযান চলানো হয়েছে কিন্তু তাকে পাওয়া যায়নি।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated

নেত্রকোনার বারহাট্টায় ৪ আগস্ট ছাত্রদের মিছিলে গুলির মামলায় যুবলীগ নেতা আটক

Share the post

Share the postসোহেল খান দূর্জয়, নেত্রকোনা : বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে ৪ আগস্ট গুলি বর্ষণ ও মারপিট করার মামলায় যুবলীগ নেতা আননান (৩৯) কে আটক করেছে বারহাট্টা থানা পুলিশ।শুক্রবার রাতে( ২৫ অক্টোবর) বাউসী এলাকায় একটি চায়ের দোকান থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বারহাট্টা থানার অফিসার ইনচার্জ কামরুল হাসান। আননান ওরফে আদনাল নেত্রকোনা […]

নেত্রকোনায় বিএনপি নেতা হত্যা মামলায় আ.লীগ নেতা গ্রেফতার

Share the post

Share the postসোহেল খান দূর্জয়, নেত্রকোনা : নেত্রকোনার পূর্বধলায় বিএনপি নেতা এরশাদ আলী খন্দকার হত্যা মামলায় এক আওয়ালী লীগ নেতাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরশাদ আলী উপজেলার নারান্দিয়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও নরনায়ণপুর গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।এরশাদ আলীকে হত্যা মামলায় সাবেক সাংসদ, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান, বর্তমান দুই ইউপি চেয়ারম্যান, সাবেক উপজেলা যুবলীগের সভাপতি, সাংসদের দুজন ব্যক্তিগত সহকারীসহ […]