নগরবাসীর গণস্বাক্ষাতের অভিযোগের জবাবে সুজন কাজ চাই, নয়তো ডোর টু ডোর শ্রমিকদের নিয়োগ বাতিল
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছেন, নগরীতে ডোর টু ডোর ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার কাজে নিয়োজিত শ্রমিকরা ঠিকঠাক মত দায়িত্ব পালন না করলে তাদের নিয়োগ বাতিল করা হবে। কর্পোরেশন ১২’শ কোটি টাকা দেনার দায় নিয়ে ডুবে আছে। মাসে ডোর টু ডোর শ্রমিকদের বেতন খাতে কর্পোরেশনের ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয় হয়। এরপরও নগরবাসী ময়লা-আবর্জনা পরিস্কার হচ্ছেনা বলে আমাকে প্রায়শ অভিযোগ করেন। এ ধরণের অভিযোগ কাম্য হতে পারে না। তিনি আজ সকালে নগরীর আন্দরকিল্লাস্থ পুরনো নগর ভবনে তাঁর দপ্তরে নগরবাসীর সাথে গণস্বাক্ষাত দেয়া কালে লালখান বাজার ওয়ার্ডের এক অধিবাসীর অভিযোগের জবাবে একথা বলেন। এ সময় প্রশাসকের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবূুল হাশেম প্রশাসকের সাথে ছিলেন। অভিযোগকারী ওই ব্যক্তি লালখান বাজার পোড়া কলোনী এলাকায় মাদ্রাসা, নালার আবর্জনা তুলে যত্রতত্র দীর্ঘ সময় উন্মুক্ত ভাবে ফেলে রাখা হয় বলে প্রশাসককে জানান। প্রশাসক সুজন অভিযোগ পেয়ে তাৎক্ষণিক ওই এলাকার সব ময়লা-আবর্জনা পরিস্কারে অতিরিক্ত প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা মোরশেদুল আলম চৌধুরীকে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন। প্রশাসকের স্বাক্ষাতপ্রার্থীদের মধ্যে শিক্ষক, মুত্যবরণকারী কর্পোরেশনের কর্মচারীর পরিবারের সদস্য, সমাজসেবক, রাজনীতিক, কর্পোরেশনের ঠিকাদার, পরিবহন মালিক, দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ছিলেন। স্বাক্ষাতপ্রার্থী নগরীর ফকিরহাট দোকান মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ ট্রেড লাইসেন্স প্রদান প্রক্রিয়া সহজ করতে প্রশাসককে অনুরোধ করলে, তিনি ১ দিনের মধ্যে তা ব্যবস্থা করতে প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তাকে বলবেন বলে ব্যবসায়ী নেতাদের কথা দেন। পরিবহন মালিকরা নগরের মুরাদপুর, ২নম্বর গেটের মোড়ে সড়কের আইল্যান্ড ভেঙে যাওয়ায় তা মেরামতে প্রশাসকের সুদৃষ্টি কামনা করলে, প্রশাসক তাদের প্রস্তাব শুনে নগরীতে চলমান ফিটনেসবিহীন বাস ও অন্যান্য গাড়ি চলাচল বন্ধে পরিবহন মালিকদের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি বলেন, ফিটনেসবিহীন গাড়ি অনেক সময় বেপরোয়া গতিতে চলে আইল্যান্ডের ওপর উঠে যায়। এতে আইল্যান্ডগুলো ভেঙে যায়। প্রশাসক সুজন গণপরিবহন ও শহর এলাকার বাসগুলোতে কর্মজীবী নারীরা যাতে যৌন হয়রানির শিকার না হয় এবং নির্বিঘেœ নিরাপদে চলাচল করতে পারে সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে বলেন। স্বাক্ষাত প্রার্থীদের মধ্যে ১৮নং পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের প্রবীণ রাজনীতিক আওয়ামী লীগ নেতা আজিজুর রহমান তাঁর ওয়ার্ডে চসিকের চলমান রাস্তা নির্মান কাজ অনেক স্থানে প্রশস্ততা কমে সরু হচ্ছে অভিযোগ জানিয়ে তার সবখানে যাতে একই নিয়মে রাখা হয় এই ব্যাপারে প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেন। প্রশাসক তাঁর বক্তব্য শুনে বলেন, যে সব ওয়ার্ডে চসিকের রাস্তা নির্মাণের কাজ চলমান আছে, সে সব ওয়ার্ডে বৃহত্তর স্বার্থে এলাকাবাসীকে নিজের জায়গা ছেড়ে দিয়ে হলেও রাস্তা বড় করতে হবে। অন্যথায় কর্পোরেশনের একার পক্ষে এসব রাস্তা বড় করা সম্ভব হবেনা। তিনি সাথে সাথে চসিকের নির্বাহী প্রকৌশলী ফরহাদুল আলমকে পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের চলমান সড়কটির নির্মাণ কাজ পরিদর্শন করে তাঁকে বিস্তারিত জানাতে বলেন। গণস্বাক্ষাতে সাম্প্রতিক সময়ে মৃত্যুবরণকারী প্রকৌশল বিভাগের কর্মচারী আবু হানিফ চৌধুরীর স্ত্রী স্বামীর আনুতোষিক ভবিষ্যৎ তহবিলের টাকা প্রাপ্তিতে প্রশাসকের সৃদৃষ্টি কামনা করলে, তিনি তা তালিকা অনুসারে প্রদানের ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে জানিয়ে, মানবিক কারণে তাঁর মরহুম স্বামীর টাকা থেকে যতটুকু দেয়া যায় সে ব্যবস্থা নিতে প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তাকে তখনি জানিয়ে দেন। এছাড়াও চসিক পরিচালিত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক অবসরপ্রাপ্ত বিধবা শিক্ষিকা মনোয়ারা সুলতানা মেয়ের বিয়ের জন্য তাঁর অবসরকালীন ভবিষ্যৎ তহবিলের বকেয়া টাকা প্রাপ্তির জন্য প্রশাসককে বললে, মানবিক কারণে যতটুকু পারা যায় তা ব্যবস্থা নিতে হিসাব বিভাগে লিখে দেন।