করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্সের জন্য প্রস্তুত হচ্ছে চট্টগ্রামের ৩ হোটেল
চট্টগ্রাম: করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় নিয়োজিত চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা পরিবারের সঙ্গে থাকা ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় তাদের রাখা হবে নগরের তিনটি আবাসিক হোটেলে।
করোনা ভাইরাস প্রতিরোধ ও মোকাবিলা সংক্রান্ত কমিটির এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবগত হয়েছেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট হোটেল মালিকরা।
নির্ধারিত তিনটি আবাসিক হোটেল হচ্ছে- নগরের স্টেশন রোডের হোটেল দি এলিনা, হোটেল এশিয়ান এসআর ও হোটেল প্যারামাউন্ট।
সিভিল সার্জন ডা. সেখ ফজলে রাব্বি বলেন, চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে ওই তিনটি আবাসিক হোটেল করোনা ভাইরাসের চিকিৎসায় নিয়োজিতদের থাকার জন্য ব্যবহৃত হবে। বর্তমানে তারা চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতাল সংলগ্ন হোটেল আল ইমাম-এ থাকছেন। কিছু স্বেচ্ছাসেবী আছেন মোটেল সৈকতে। এর আগে এই হাসপাতালের চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের থাকার জন্য আসকার দীঘির পাড় এলাকার আঞ্চলিক লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছিল।
জানতে চাইলে হোটেল প্যারামাউন্ট এর চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ডা. আবদুল করিম বলেন, করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের চিকিৎসায় সামনে থাকা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা জাতীয় বীর। তারা এই মুহূর্তে পরিবারের সঙ্গে থাকাটা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। তাদের থাকার জন্য প্রশাসনের নির্দেশে হোটেল প্যারামাউন্ট প্রস্তুত করা হচ্ছে।
হোটেল দি এলিনা’র ব্যবস্থাপক রুবেল সাহা বলেন, আমি এখন পরিবার নিয়ে ঢাকায় আছি। দেশের এই দুর্যোগময় মুহূর্তে করোনাযোদ্ধাদের সেবায় সরকারের সব উদ্যোগকেই সমর্থন করছি। কিন্তু নির্দেশনা মেনে হোটেল বন্ধ রাখা হয়েছে বেশ কিছুদিন। কর্মকর্তা-কর্মচারীরাও বাড়িতে চলে গেছেন। দায়িত্বে আছে মাত্র ৩ জন সিকিউরিটি গার্ড। হোটেলের সবগুলো কক্ষ বন্ধ, অটোমেটিক লকড্। বেড-তোষক সবকিছু স্টোররুমে।
তিনি বলেন, হঠাৎ করে হোটেল ব্যবহারের কথা গণমাধ্যম সূত্রেই জেনেছি। হোটেলটি ব্যবহার করা হলে প্রতি মাসে ১৫-২০ লাখ টাকার মেনটেইন্যান্স খরচ কিভাবে আসবে- তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। হোটেল প্রস্তুত করার জন্য সবার নিরাপত্তা সরঞ্জামেরও ব্যবস্থা নেই।
হোটেল এশিয়ান এসআর এর এমডি মো. ইয়াকুব বলেন, ডিসির পক্ষে নেজারত ডেপুটি কালেক্টর (এনডিসি) প্রেরিত চিঠি পেয়েছি। হোটেল অনেকটা খালিই আছে। দুদিন আগে থেকে পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্য হোটেলের কয়েকটি রুমে থাকছেন।
বতর্মানে চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে ১৭ জন চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী দায়িত্ব পালন করছেন। হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. অসীম কুমার নাথ বলেন, আঞ্চলিক লোক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও হোটেল আল ইমামে থাকা চিকিৎসক, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য আমরা খাবার সরবরাহ করছি। হাসপাতালে দায়িত্ব শেষ করে তারা এখন সেখানেই থাকছেন।পরবর্তীতে যে তিনটি হোটেল তাদের থাকার জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে, সেখানেও একই সুবিধা দেওয়া হবে।