কক্সবাজার-মহেশখালী নৌরুটে সী-ট্রাকের পরীক্ষামূলক চলাচল শুরু হয়েছে ১৮ই এপ্রিল
নুর মোহাম্মাদ, কক্সবাজার প্রতিনিধি : কক্সবাজার-মহেশখালী নৌপথে পরীক্ষামূলক সী-ট্রাক চালুর মাধ্যমে নতুন যাতায়াত ব্যবস্থা শুরু হয়েছে ১৮ই এপ্রিল রোজ শুক্রবার। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) এই রুটে ২৫০ জন যাত্রী ধারণক্ষমতার একটি সী-ট্রাক চালু করেছে। সী-ট্রাকটি স্থায়ীভাবে চালু হলে প্রায় ০৫ লাখ বাসিন্দার যাতায়াত সহজ হবে, পাশাপাশি পর্যটকদের নৌপথে ভোগান্তি কমে যাবে এবং মহেশখালী দ্বীপের অর্থনীতিতেও সাড়া ফেলবে বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন।
বিআইডব্লিউটিএ জানিয়েছে, সী-ট্রাকটি এই রুটে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত পরীক্ষামূলকভাবে চলবে। যদি চলাচলে কোনো প্রতিবন্ধকতা না দেখা দেয়, ২৫ এপ্রিল থেকে এটি বাণিজ্যিকভাবে চালু করা হবে বলে জানান তিনি।
বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক একেএম আরিফ উদ্দিন বলেছেন, সী-ট্রাকে জনপ্রতি ভাড়া এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। তবে পরীক্ষামূলক চলাচল সফল হলে দ্রুত এ নৌপথে সী-ট্রাক স্থায়ীভাবে চালু করা হবে এবং ভবিষ্যতে ফেরি যুক্ত করার পরিকল্পনাও রয়েছে বলে জানান।
গবেষক ও লেখক অধ্যাপক মকবুল আহমেদ জানিয়েছেন, মহেশখালী দ্বীপটি তার পাহাড়ি সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলোর জন্য পরিচিত। প্রতিবছর এখানে হাজারো পর্যটক আসেন, যারা যাত্রাপথে বাঁকখালী নদী এবং বঙ্গোপসাগরের সৌন্দর্য উপভোগ করেন। কিন্তু কক্সবাজার থেকে মহেশখালী যাওয়ার পথে নানা ধরনের বিপদ এবং ভোগান্তি ছিল, বিশেষ করে স্পিডবোটের জন্য দীর্ঘ লাইন, চালক এবং কর্মীদের দুর্ব্যবহার, জেটিঘাটে অবৈধ অর্থ আদায় এবং বর্ষাকালে দুর্ঘটনার শঙ্কা। এসব সমস্যা সমাধানে বিআইডব্লিউটিএ আধুনিক সী-ট্রাক চালু করেছে, যা দ্বীপবাসী এবং পর্যটকদের জন্য কল্যাণকর হবে।
কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ জেটি থেকে সী-ট্রাকটি বেলা ১২টা ২০ মিনিটে ছেড়ে ১টায় মহেশখালী দ্বীপের জেটিঘাটে পৌঁছালে সেখানে নানানরকম আনন্দের দৃশ্য দেখা যায়। দ্বীপবাসী প্রথমবারের মতো সী-ট্রাক দেখে উৎফুল্ল হয়ে শ্লোগান দেয়, যা দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষার প্রতিফলন ছিল।
মহেশখালী দ্বীপের মানুষ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন, কারণ তারা দীর্ঘদিন ধরে জেটি ঘাট দিয়ে চলাচলের সময় একটি দুর্বৃত্ত চক্রের হাতে জিম্মি ছিলেন। এখন সাধারণ মানুষ নিরাপদ যাতায়াতের সুযোগ পাবেন এবং দ্বীপের পর্যটন ও অর্থনীতি বিকাশের পথ প্রশস্ত হবে বলে মনে করছেন তারা।