ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মানববন্ধন
মুুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, পঞ্চগড় প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় ইউপি সদস্য মোজাফফরের বিরুদ্ধে মানববন্ধন বিক্ষোভ সমাবেশ ও জুতা মিছিল পালিত হয়েছে। বুধবার (২১আগস্ট) বীরমুক্তিযোদ্ধা সকিন আলীর নেতৃত্বে উপজেলার দেবনগড় ইউনিয়নের দলুয়াগছ গ্রামে এই মানববন্ধন বিক্ষোভ সমাবেশ ও জুতা মিছিল পালিত হয়। এসময় এলাকার ভুক্তভোগী কামাল হোসেন সরকার (শিমুল), আইবুল হক, সাবেক ইউপি সদস্য মাঈনুল হক, আবু বক্কর ছিদ্দিক, দেবনগড় উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক মতিউল ইসলাম ও সুফিয়া বেগম সহ এলাকাবাসী মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন।
মানববন্ধনে জানা যায়, আব্দুল খালেক ও শিমুলের ২৫শতক জমি জোরপূর্বক দখল করে আমন মৌসূমে রোপা রপন ও বীরমুক্তিযোদ্ধ সকিন আলীকে মিথ্যা মামলা(কাউন্টার) দিয়ে হয়রানি করা, তিন ফসলি আবাদি জমি রাস্তা বানাতে বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা, গ্রেফতারি পরোয়ানা থাকা সত্ত্বেও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানো এবং সরকারি প্রল্পের নামে টাকা আত্মসাৎ এর মানববন্ধন করেছে ওই ইউনিয়নের ওই ওয়ার্ডের বাসিন্দা ও ভুক্তভোগীরা। মানববন্ধনে ভুক্তভোগী বীর মুক্তিযোদ্ধা সকিন আলী জানান, উপজেলার ওই ইউনিয়নের ভজনপুর গের্দ্দ মৌজার এসএ ৬৫নং খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক কার্তিক এর ওয়ারিশের কাছ থেকে গত ১৯৯৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের ১৩ তারিখ ৬৫০-৬৫২ নং দলিলে জমি ক্রয় করেন তিনি। এরপর থেকে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখলে থাকাকালীন ইউপি সদস্য আওয়ামী লীগের দলীয় ক্ষমতার অপব্যবহার দেখিয়ে জমি জবরদখল করতে আসলে ফৌজদারী মামলার সৃষ্টি হয়। তিনি আইনের আশ্রয় নিলে ওই ইউপি সদস্য একটি মিথ্যা কাউন্টার মামলা করেন। এদিকে সকিন আলীর থানায় করা জিআর ৭০/২৪ নং মামলায় ইউপি সদস্য মোজাফফরের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা রয়েছে। তিনি ইউপি সদস্যকে গ্রেফতার করতে থানা পুলিশকে জোরদার দাবী জানিয়েছেন। ভুক্তভোগী কামাল হোসেন সরকার জানান, ভজনপুর গের্দ্দ মৌজার এসএ ৮৮নং খতিয়ানে তাদের দুই দলিলে ক্রয়কৃত রয়েছে। এছাড়াও আরোও দলিল রয়েছে তাদের। মোজাফফর মেম্বার ৭৫ শতক জমি ২বছর পূর্বে দখল করেন, এরপর আমন মৌসূমে রোপা রপনের সময় সাম্প্রতিক ২৫ শতক জমি অবৈধভাবে জবরদখল করে নেয়। পরে গ্রাম আদালতে লিখিত অভিযোগ করলে গ্রাম আদালতকে তোয়াক্কা করেননি ইউপি সদস্য মোজাফফর। এলাকার আব্দুল জলিল জানান, ওই মেম্বারের বিরুদ্ধে ওয়ারেন্ট চলমান আছে, তাকে গ্রেফতার করা হচ্ছে না। দেদারসে ঘুরাফেরা করছে জনসম্মুখে। অতি শিঘ্রই তাকে গ্রেফতার করা হলে উপকৃত হবেন এলাকাবাসী। ভুক্তভোগী সিদ্দিক ও সফিয়া বেগম জানান, তাদের তিন ফসলী জমির উপর দিয়ে রাস্তা করার ষড়যন্ত্র করছে মেম্বার, তারা কোন বিচার পাচ্ছেন না।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য মোজাফফর বলেন, ওই জমি গুলো তাদের পৈত্রিক ও ক্রয়কৃত। যথেষ্ট পরিমাণ সঠিক কাগজপত্র রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ১৯৫৭ সালে রেকর্ডীয় মালিক কার্তিক এর কাছ থেকে ১একর ৫৭শতক জমি ক্রয় করেন। তারা(সকিন আলী) ১৯৯৫ সালে জমি ক্রয় করে মালিক হতে পারেনা। এ ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ছলেমান আলী বলেন, ইউপি সদস্য মোজাফফর জমি দখল করেছেন। আব্দুল খালেক নামে এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগও দিয়েছেন। ইউপি সদস্যকে গ্রাম আদালতে আসার জন্য নোটিশ করা হয়েছে তিনি গ্রাম আদালতে না আসায় কোন সুরাহা করা যায়নি। তবে প্রকল্পের নামে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করতে দেয়া হয়নি। এদিকে ভুক্তভোগী পরিবার সেনাবাহিনী, প্রশাসন ও পুলিশের নিকট ওই ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে দাবী জানিয়েছেন।