বোয়ালখালী পৌর প্যানেল মেয়র মিজানকে নিয়ে ষড়যন্ত্রে ক্ষোভ জানিয়েছেন স্থানীয়রা
মুহাম্মদ সাইফুদ্দিন খালেদ, বোয়ালখালী প্রতিনিধি: দরিদ্র মানুষকে নগদ অর্থ সহায়তা ও ত্রাণ বিতরণে বোয়ালখালী পৌরসভার ৬নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর মো. সোলাইমান বাবুলের বরখাস্তের পর ৪নং ওয়ার্ডের পৌর কাউন্সিলর সুনীল চন্দ্র ঘোষের বিরোদ্ধে একই অভিযোগ উঠে। তবে ১নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহজাদা এস এম মিজানুর রহমানের বিরোদ্ধে এরকম কোনো অভিযোগ না থাকলেও কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে ও ফেইসবুকে তাঁর বিরোদ্ধে অভিযোগ উঠে তিনি আর্থিক সচ্ছল অন্তত ১০জনকে প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহযোগিতা দিয়েছেন। এতে রয়েছে তাঁর ব্যক্তিগত সহকারী, সহকারীর ভাই, বিত্তশালী ব্যবসায়ী ও সচ্ছল প্রবাসী। এখবর প্রচার হওয়ার পর উক্ত এলাকার উপকারভোগীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং তীব্র নিন্দা
![](https://scontent.fcgp3-1.fna.fbcdn.net/v/t1.15752-0/p480x480/103418494_708784083189154_776745272218678690_n.jpg?_nc_cat=107&_nc_sid=b96e70&_nc_eui2=AeGkVR_DU7S-3rNv9-C5V32NUMtAByKs8glQy0AHIqzyCRlBy7APYBF9K3orDTHUlSnb0gufh2M-nijRZVcD8et_&_nc_ohc=ccH1j51SPisAX-wMFeP&_nc_ht=scontent.fcgp3-1.fna&_nc_tp=6&oh=70084c6b7733f12522d4d5f92f7061e3&oe=5F0B7011)
জানান। তাদের কাছে এব্যাপারে জানতে চাইলে তারা বলেন তাদের ক্ষোভের কথা। ১০৮নং তালিকার শিরিন আকতার জানান, ছেলে প্রবাসে আছে তিন মাস উল্টো আমাদের তাঁর জন্য টাকা পাঠাতে হচ্ছে। স্বামীর মুরাদপুরে ছোট ব্যবসা আছে, তাতেও ইনকাম বন্ধ। মানবিক সহায়তা আমরা কি পেতে পারি না ? আমরাকি এদেশের নাগরিক নই? ফেসবুকে দিয়ে আমাদের সম্মানহানি করছে একটি চক্র। যে বা যারা এমন কুরুচিপূর্ণ কাজগুলি করছে কই তারাতো একমুঠো ভাত খাওয়ার জন্য সামান্য চাউলও দিতে আসেনি। আর যিনি সহযোগিতা করছেন, করার চেষ্টা করছেন উল্টো তার উপর মিথ্যা দোষ চাপাচ্ছেন এই হলো আমাদের দেশের সচেতন নাগরিকদের মনমানসিকতা। তালিকার ৭৩ নম্বরে ইয়াছমিন আকতার জানান, জায়গা জমির বোকাারী করি-লিখল ব্যবসা করি। লকডাউনের পর থেকে তাও বন্ধ। আমরাওতো মানুষ, আমাদেরকি ক্ষিদে লাগেনা, কয়দিন না খেয়ে উপোস থাকা যায়, সন্তানদেরওবা কয়দিন উপোস রাখা যায়। মানবিক সহায়তা তাহলে কার জন্য? হাতে জোর থাকলে ইন্টারনেট সম্পর্কে সামান্য ধারণা থাকলে দুই কলম যে কেউ লিখতে পারে কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে মানবিক কাজগুলি সবাই করতে পারনা যা প্যানেল মেয়র মিজান করছেন। আমাদের সমাজে কিছু স্বার্থলোভি মানুষ রয়েছে যারা অন্যের ভালো কাজগুলি সহ্য করতে পারেনা আর এটাই হচ্ছে তার জলন্ত প্রমাণ। প্রভাদ আছে ‘যার নুন খায় তার গুনগান গাইতে হয়’ সুতরাং আমাদের বিপদে যিনি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন তাকে নিয়ে যারা মিথ্যা অপবাদ দেয়ার চেষ্টা করছেন আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। তালিকায় ৫৯ নম্বরের জানে আলম চৌধুরী জানান, আমার একটা ছোট দোকান আছে আরেকটা ভাড়া দিয়েছি ২৬মার্চ থেকে তাও বন্ধ। আগের মতো আয় রোজগার করতে পারছিনা বলে নিরুপায় হয়ে কাউন্সিলর সাহেবকে বলেছি, তিনি নাম দিয়েছেন। এতে অপরাধটা কি? আমরাতো এদেশেরই নাগরিক আমাদের সহযোগিতা চাওয়াটাকি অন্যায়? তাই যদি হয় তবে আমাদের ভোট দেয়ারও অধকারও নাই। তালিকায় ১৪ নম্বরে সাইফুল আলম জানান, আমি প্রিন্টিং অফিসে চাকরি করি-লিখল ব্যবসা করি, তিনমাস সব বন্ধ। না জেনে কারো সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য লিখাও একধরণের অপরাধ। আমরাওতো মানুষ, আমাদেরওতো পরিবার আছে, তাহলে আমরা কার কাছে যাব? কাউন্সিলর সাহেবকে আইডি কার্ড দিয়েছি। আমরা মানবেতর জীবন যাপন করলে আপনারা খুশি হবেনতো? ২১ নম্বরে থাকা মো. ওয়াসিম জানান, কধুরখীল চৌধুরী হাটে গ্যাস ও গ্যাসের চুলার ব্যবসা আছে তাও লোন নিয়ে। কাউন্সিলর কি দোষ করল আমার নাম দিয়ে? তালিকায় ৩২ নম্বর বায়জিদ হোসেন রাজু বলেন, পারিবারিক স্ট্যাটাসের কারণে কাউকে কিছু বলতে পারিনা। মুখ ফুটে বলতেই বিপদ। এখন আমি যে সম্মানহারা হচ্ছি ফেসবুকে অনলাইনে তার মূল্য কে দেবে ? তাছাড়া মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তো নিজেই বলেছেন মধ্যবিত্তদের গোপনে সহযোগিতা করার জন্য তাহলে আমরাকি সহযোগিতা পাওয়ার অধিকার রাখিনা? বিত্তিহীন লিখা লিখে কাউন্সিলরকে ঘায়েল করার চক্রান্তকারিদের আমি আইনের আওতায় এনে শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। তালিকায় ৫ নম্বর মো. ইব্রাহীম বলেন, চৌধুরীহাটে ফলের দোকান আছে। এসে দেখে যান কত বড় ফলের দোকান? আমরা মানবিক সহায়তা না পেলে কে পাবে? তালিকার ১০ নম্বরে থাকা মো. মহিউদ্দিন বলেন, কাউন্সিলর শাহজাদা এস এম মিজানুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী বলে আমাকে হেয় করা হচ্ছে। আমি ৩ হাজার টাকা বেতনে মাস্টাররোলে চাকরি করি। ত্রাণ চাওয়া অপরাধ হলে নাগরিকত্ব বাতিল করে দেন! সরকারের ত্রাণকি শুধু গুটি কয়েক ব্যক্তির জন্য নাকি এই দূর্যোগে অভাবে পড়া সকল মানুষের জন্য প্রশ্ন রইলো। মো. মহিউদ্দিনের ভাই কাউয়ুম উদ্দিনের নাম আছেন তালিকার ১২৩ নম্বরে। তিনি বলেন, গার্মেন্টসে ছোট চাকরি করি। ১ মাস বেতন পাইনি। ত্রাণের কথা মিজান ভাইকে সবসময় বলি, দিয়েছেনও। এখন শুনতেছি আমি নাকি পিএসের ভাই। এটি সত্যি দুঃজনক। আমার ভাই মিজান ভাইয়ের পিএস না, আর আমরা আলাদা পরিবার। তালিকার ৩০ নম্বরে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন কৃষক লীগের চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সহ-সভাপতি মোয়াজ্জেম হোসেন বাদল বলেন, তালিকায় নাম দেয়ার ব্যাপারে জানিনা। ব্যবসা করতাম, শারীরিক অসুস্থতার কারণে একবছর আগে দোকান ছেড়ে দিয়ে এখন বেকার জীবনযাপন করছি। নাম দিয়ে থাকলে দোষের কি হলো? আমরাওতো আওয়ামীলীগের রাজনীতি করি, দলের জন্য যে কোন ত্যাগ স্বিকার করে আসছি সবসময় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর সহযোগিতা চাওয়াটাকি আমাদের অপরাধ। এব্যপারে জানতে চাইলে প্যানেল মেয়র শাহজাদা এস এম মিজানুর রহমান বলেন, করোনায় বিপর্যস্থ পুরো দেশ। এখানে কে আগে বিত্তশালী ছিল এটা ভাবা হয়নি বর্তমান অবস্থাটা বিবেচনা করেছি। যারাই গোপনে প্রকাশ্যে সহযোগীতা চেয়েছে, তাদের সহযোগীতা করার চেষ্টা করেছি এবং এখনো করে যাচ্ছি। আপনারা তদন্ত করে দেখবেন আত্মসাৎ করেছি কিনা কিংবা ভুল কাউকে দিয়েছি কিনা? আমার এলাকায় যারা আমাকে নির্বাচিত করেছে-তাদের আমার এবং সরকারের থেকে চাওয়ার নিশ্চয়ই অধিকার আছে। সরকারের সহযোগিতার তালিকা করার সময় আমার ওয়ার্ডের প্রতিটি এলাকার কিছু গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের সহযোগিতা নিয়ে তালিকা প্রনয়ন করা হয়েছে। এছাড়া আমার ওয়ার্ডে প্রায় ১৮ শত পরিবারের মধ্যে প্রায় ১ হাজার পরিবারকে বিধবা ভাতা, বয়স্কভাতা, মানবিক সহায়তা, প্রতিবন্ধিভাতা, মাতৃকালিনভাতা, ওএমএস কার্যক্রমসহ সরকারের বিভিন্ন সহযোগিতায় অন্তভুক্ত করেছি। করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে উপজেলা প্রশাসন ও পৌরসভার কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে এলাকার সর্বস্তরের জনসাধারণকে সাথে নিয়ে আমার কার্যক্রম নির্ঘুম রাত কাটিয়ে জনগনকে সেবা প্রদানে যে প্রচেষ্টা তা ইতিমধ্যে সবারই জানা আছে। আশা করছি মহান আল্লাহ তায়ালার রহমতে আগামিতেও মানুষের কল্যাণে সর্বদা কাজ করে যাবো সেই প্রত্যাশা করছি।