দোকানি থেকে মানব পাচার চক্রের মূলহোতা: র‍্যাব

Share the post

বিদেশে লোক পাঠানোর নামে ৬ বছর ধরে মানবপাচার করে আসছে একটি প্রতারক চক্র। এই চক্রের মূল হোতা টুটুল এক সময় মুদি দোকানে কাজ করত। পরে মানবপাচারকারী চক্রের সাথে জড়িয়ে যায় টুটুল। মুদি-দোকানি থেকে মানবপাচারকারী চক্রের নেতা বনে হাতিয়েছেন লাখ লাখ টাকা।

তিনটি ভুয়া ওভারসীজ কোম্পানি খুলে নারী কর্মীদের বিক্রি করেছেন মধ্যপ্রাচ্যে। এমন সংবাদে মঙ্গলবার রাতে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় অভিযান চালিয়ে মূল হোতা টুটুলসহ চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাব।বুধবার দুপুরে কারওয়ানবাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান র‍্যাব-৪ এর অধিনায়ক মোজাম্মেল হক।

আটককৃতরা হলেন- মো. সাইফুল ইসলাম ওরফে টুটুল (৩৮), মো. তৈয়ব আলী (৪৫), শাহ মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন লিমন (৩৮), মো. মারুফ হাসান (৩৭), মো. জাহাঙ্গীর আলম (৩৮), মো. পালটু ইসলাম (২৮), মো. আলামিন হোসাইন (৩০) ও মো. আল্লাহ আল মামুন (৫৪)।

এসময় মোজাম্মেল হক বলেন, “রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় টুটুল ওভারসীজ, লিমন ওভারসীজ ও লয়াল ওভারসীজ নামে ৩টি অবৈধ এজেন্সি খোলে এই চক্র। বেকার নারী পুরুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় লাখ লাখ টাকা”।

“এ চক্রের হোতা টুটুল, তার সহযোগী হিসেবে কাজ করেন তৈয়ব। এইচএসসি পাশ টুটুল মেহেরপুরের গাংনীর কামদী গ্রামে মুদি দোকানি হিসেবে কাজ করতেন। মাঝে মাঝে ঢাকায় আসতেন” বলেও জানান তিনি।

অধিনায়ক মোজাম্মেল হক বলেন, “অল্প সময়ে অধিক টাকার মালিক হওয়ার লোভে ধীরে ধীরে মানবপাচার চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন এবং দালাল হিসেবে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে বিদেশে লোক পাঠানোর কাজ করতে থাকেন।”

তিনি বলেন, “টুটুলের সহযোগী তৈয়ব কোনো লেখাপড়া করেননি। তিনি চায়ের দোকানি ছিলেন। টুটুলের প্ররোচনায় মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।

“তৈয়বের বিরুদ্ধে বহু লোককে প্রতারণামূলকভাবে বিদেশে প্রেরণ এবং দেশে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণামূলকভাবে টাকা পয়সা গ্রহণের অভিযোগ রয়েছে।”

র‍্যাব জানায়, কয়েকজন নারী কর্মীকে বিদেশে বাসাবাড়িতে কাজের কথা বলে বিক্রি করে দিয়েছে এই চক্র। টুটুল ও তৈয়ব তাদের ভুয়া রশিদ দিয়ে জনপ্রতি দুই থেকে পাঁচ লাখ টাকা করে নিতেন। বিশ্বাস স্থাপনের জন্য পাচারকারী চক্রের কয়েকজন সদস্য নিজেদের উচ্চশিক্ষিত হিসেবে পরিচয় দিয়ে বিদেশ যেতে আগ্রহীদের বাসাবাড়িতে কাজের প্রশিক্ষণও দিতেন।

এরকম বেশ কয়েকজন নারী ও পুরুষকে প্রতারণামূলকভাবে সৌদি আরবে পাঠিয়ে ‘বিক্রি করার কথা’ জানতে পেরেছেন বলেও র‍্যাব-৪ এর কাছে অভিযোগ করেন আশরাফুল। যাদেরকে বিদেশে পাঠানো হত না, তারা টাকা ফেরত চেয়ে অফিসে যোগাযোগ করলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের টাকা না দিয়ে ‘আত্মসাৎ’ করা হত বলে জানায় র‍্যাব।

এমনই কয়েকজন ভুক্তভোগীর পরিবার মানবপাচার নিয়ে র‍্যাবের কাছে অভিযোগ জানায়। মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালিয়ে মূলহোতা টুটুলসহ আটজনকে গ্রেপ্তার করে র‍্যাব। এছাড়া বৈধ কোন এজেন্সি মানবপাচারকারী চক্রের সাথে জড়িত আছে কিনা তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে র‍্যাব।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

Releated