

আশিকুর রহমান,নরসিংদী : নরসিংদী রায়পুরা উপজেলার ডৌকারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাসুদ ফরাজী ও পরিষদের সচিব নুরুল আফসার এর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন পরিষদের সদস্যরা। পরে পরিষদের সচিব পরিষদের সকল কার্যক্রম স্থগিত করে পরিষদ তালাবদ্ধ করে অন্যত্রে পালিয়ে যায় বলেও খবর পাওয়া যায়। এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয় বলেও জানা যায়।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মঙ্গলবার সকালে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সচিব সহ সকল কক্ষে তালা ঝুলছিল। দুই/তিনজন গ্রাম পুলিশ মিলে পাহাড়া দিচ্ছিলেন ইউনিয়ন পরিষদ। তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, কি হয়েছিল বা কি কারণে পরিষদ তালা তা তারা বলতে পারবে না। সচিব সাহেব বাইরে আছেন বলে জানান তারা।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, বিভিন্ন প্রকল্পের অর্থ আত্মসাত, দুর্নীতি, অনিয়ম ও স্বজনপ্রীতি ও জনসাধারণকে হয়রানির অভিযোগ এনে পরিষদের ৬ জন সদস্য চেয়ারম্যান মাসুদ ফরাজী ও সচিব নুরুল আফসারের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদ করে আসছিল। এ নিয়ে সোমবার সকালে চরম আকার ধারণ করলে মঙ্গলবার সকালে সচিব সাব কাওকে কিছু না বলে পরিষদ তালাবদ্ধ করে অন্যত্রে পালিয়ে যায়। এতে বিপাকে পড়েন সেবা নিতে আসা স্থানীয় সেবা প্রার্থীরা।
ইউপি সদস্য সোহরাব উদ্দিন বলেন, গত জুলাইয়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা মামলার আসামী, আওয়ামী লীগের দোসর, যুবলীগ নেতা, রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজু এমপির ছত্রছাঁয়ায় বেড়ে ওঠা চেয়ারম্যান মাসুদ ফরাজী। সে আওয়ামী লীগের আমলে রাজুর প্রভাব খাটিয়ে ইউনিয়ন পরিষদের বিভিন্ন প্রকল্পের টাকা নামে-বেনামে আত্মসাত করেছে। বিগত সময়ে সে একক সিদ্ধান্তে পরিষদ পরিচালনা করেছে। পরিষদের কোনো সদস্যকে সে মূল্যায়িত করেনি। বৈষম্য সৃষ্টি করেছে। ৫ আগষ্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকেই ওনি আর পরিষদে আসেন না। পলাতক অবস্থায় গোপন স্থানে থেকে পরিষদের সচিবকে মেনেজ করে সদস্যদের বাদ দিয়ে গোপনে পরিষদের সকল কাজ হাতিয়ে নিচ্ছেন। তার এধরণের অনৈতিক কার্যকলাপে পরিষদের সকল সদস্যরা ফুঁসে ওঠে এবং প্রতিবাদ করলে চেয়ারম্যানের হুকুমে সচিব পরিষদ তালাবদ্ধ করে অন্যত্রে পালিয়ে যায়।
ভিন্ন সূত্রে জানা যায়, মাসুদ ফরাজী উপজেলা যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক। তিনি ২০২১ সালের ২৮ নভেম্বর রাজু এমপির ইশারায় ডৌকারচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হোন এবং গত বছরের ১৯ জুলাই ইটাখোলার মোড়ে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহতের ঘটনায় আবু বক্কর ছিদ্দিক নামে একব্যক্তি বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে শিবপুর মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই তিনি গ্রেফতার এড়াতে গা ডাকা দেন।
এবিষয়ে জানতে চেয়ারম্যান ও সচিবের মুঠোফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তা বন্ধ থাকায় যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।