চাঁপাইনবাবগঞ্জে জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জেরে নারীকে হত্যাচেষ্টা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ ইয়াসিন আরাফাত
চাঁপাইনবাবগঞ্জের মহারাজপুর মিয়াপাড়ায় জমি সংক্রান্ত পূর্ব শত্রুতার জের ধরে পরিকল্পিতভাবে এক নারীকে কুপিয়ে ও মারধর করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এতে গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন সদর উপজেলার মহারাজপুর ইউনিয়নের মিয়াপাড়া গ্রামের মো. শামসুদ্দীনের স্ত্রী মোসা. রাজিয়া সুলতানা। মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নিজ এলাকায় ধরালো অস্ত্র দিয়ে এই হামলা ও মারধরের ঘটনা ঘটেছে৷
স্থানীয় বাসিন্দা, প্রত্যক্ষদর্শী হামলায় আহত ও স্বজন সূত্রে জানা যায়, আহত রাজিয়া সুলতানার স্বামীর পরিবার দীর্ঘদিন যাবত জমি কিনলেও তা দখলে রেখেছেন পূর্বের মালিকদের উত্তরসূরীরা। এনিয়ে কয়েক দশক ধরে বিরোধ চলে আসছে।
এরই জের ধরে মঙ্গলবার সকালে রাজিয়া সুলতানাকে ধরালো অস্ত্র, লাঠিসোঁটা দিয়ে এলোপাতাড়ি মারধর ও কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষরা৷ পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও স্বজনরা তাকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে জেলা হাসপাতালের মহিলা সার্জারী ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন রাজিয়া সুলতানা।
জানা যায়, দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর পূর্ব থেকে জমির সীমানা নিয়ে দুই প্রতিবেশীর দ্বন্দ্বে স্থানীয় চেয়ারম্যান মেম্বারদের সমন্বয়ে কয়েকবার গ্রাম্য সালিস হয়। প্রত্যেকবার সালিসে প্রতিবেশী রুহুল আমিন তা প্রত্যাখান করে জমি দখলে রাখে। এনিয়ে থানায় ও সেনাবাহিনীর কাছে দফায় দফায় অভিযোগ দেয় রুহুল আমিন কিন্তু প্রত্যেকবারই সালিশ না মেনে জমি দখল করে রাখেন তিনি।
আহত রাজিয়া সুলতানা বলেন, জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছে। এরই জের ধরে মিয়াপাড়া গ্রামের মো. রুহুল আমিন (৬০), স্ত্রী পানসুরা বেগম (৫৫), মেয়ে মিলিয়ারা বেগম (৩৭), শিউলী বেগম (৪০), রিমা বেগম (৩০), রুমা বেগম (২৬) ও তার জামাই মাসুদ আলী (৪০) পরিকল্পিত হামলা চালিয়ে হত্যাচেষ্টা করে। ধরালো ছুরি/চাকু দিয়ে কুপিয়ে মাথায় জখম করে মেরে ফেলার চেষ্টা করে সন্ত্রাসী বাহিনী।
আহত রাজিয়া সুলতানার ভাগনে মো. সেফায়েত আলী জানান, তারা (রুহুল ও তার পরিবার) আমার মামাদের জমি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছে। এনিয়ে দফায় দফায় গ্রাম্য সালিশ ও থানায় সালিশে বসলেও তা মানতে নারাজ দখলদার রুহুল আমিন।
আইনী প্রক্রিয়ায় না পেয়ে আমার দুই মামীর উপর অকর্তিত হামলা চালিয়েছে তারা। আমরা এর সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবি করছি স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের নিকট। আমার মামীর মাথায় যেভাবে কুপিয়েছে, এই হত্যাচেষ্টার বিচার চাই আমরা।
আহত রাজিয়া সুলতানার স্বামীর ভাইয়ের স্ত্রী সালমা বেগম বলেন, আমার জা-এর উপর বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র ও রড নিয়ে হামলা করে রুহুল আমিন ও তার পরিবারের কয়েকজন সদস্য। এসময় আমাকেও বেধড়ক মারধর করে তারা।
পরে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং তার মাথায় সাতটি সেলাই করা হয়। চিকিৎসকরা অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে জরুরী বিভাগ থেকে ওয়ার্ডে স্থানান্তর করেছে, এখনও চিকিৎসা চলমান রয়েছে। আমরা এমন সন্ত্রাসী হামলার সঠিক বিচার চাই৷
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মতিউর রহমান জানান, মহারাজপুরে হামলা বা মারধরে নিয়ে কোন অভিযোগ বা মামলা হয়নি থানায়। অভিযোগ পেলেই তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে