যুবলীগ নেতার কথা বলে ‘মুজিব বর্ষের’ নামে চাঁদাবাজি, গ্রেপ্তার ৩
চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে যুবলীগ নেতার নাম ভাঙিয়ে মুজিব বর্ষের নামে চাঁদাবাজি করায় তিনজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। নগরীর নন্দনকানন এলাকা থেকে এদের গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবার (৭ মার্চ) সকালে নগরীর কোতোয়ালী থানায় সংবাদ সম্মেলনে করে চাঁদাবাজির বিষয়টি জানানো হয়।
কোতোয়ালী জোনের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার আব্দুর রউফ জানান, গত কিছু দিন ধরে কয়েকটি অভিযোগ আসতে শুরু করে। মুজিব বর্ষকে সামনে রেখে বিভিন্ন জায়গায় চাঁদাবাজি করা হচ্ছিল। সেই সাথে বিভিন্ন যুবলীগ নেতার নাম ভাঙিয়ে ও চাঁদা দাবি করা হচ্ছিল। গত চার মাস ধরে স্বপ্ন চূড়া, একতা যুব সংঘসহ বিভিন্ন নামের সংগঠনের প্যাড ব্যবহার করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে চাঁদাবাজি করে আসছিল একটি সংঘবদ্ধ চক্র।
পুলিশ জানায়, এ সময় তারা যুবলীগ নেতা হেলাল আকবর চৌধুরীর বাবর এর নাম ব্যবহার করে চাঁদা দাবি করছিলেন। তবে এই চক্রের সাথে যুবলীগ নেতা বা কোন রাজনৈতিক দলের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি। বর্তমানে হেলাল আকবর চৌধুরী দেশে নেই। সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে হয়ত এই প্রতারক চক্র প্রতারণার কাজটি করছিল, বলে ধারণা পুলিশের।
তবে, সংঘবদ্ধ এই চক্রের সাথে কিংবা যুবলীগের রাজনীতির সাথে এদের কোনো সম্পর্ক পাওয়া যায়নি বলে জানায় পুলিশ। শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থ হাসিল ও মাদকের টাকা সংগ্রহের জন্য তারা এই প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে বলে ও জানা যায়।
এদিকে গত ২ মার্চ নগরীর নন্দন কানন স্যানমার বিল্ডিং সংলগ্ন থ্রি এ হোম স্কেচ প্রতিষ্ঠানে গিয়ে মুজিব বর্ষের নামে প্রতিষ্ঠানের মালিকের কাছে বিশ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে চাঁদাবাজরা। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে নানা ধরনের ভয় ভীতি প্রদর্শন করা হয়। ৬ ই মার্চ এসে চাঁদার টাকা নিয়ে যাবে বলে শাসিয়ে যায় তারা। আবার ৬ মার্চ সকালে এসে চাঁদার টাকার জন্য মালিককে খুঁজতে থাকে প্রতারক চক্র। মালিককে না পেয়ে মামলার বাদী মধুসূদন দাশকে মারধর ও হুমকি প্রদান করা হয়।
পরে পুলিশকে জানানো হলে, একই দিন বিকালে নন্দনকানন এলাকা থেকে শেখ রিয়াজ আহমেদ (৪০) ও শাহজাহানকে (৪৫) গ্রেপ্তার করা হয়। শেখ রিয়াহ আহমেদ নন্দনকানন দুই নাম্বার গলির মৃত শেখ গোলাম সামদানির ছেলে। অন্যদিকে গ্রেপ্তার শাহজাহান মোমিন রোয এলাকার মৃত গোলাম শরীফের ছেলে। পরে গ্রেপ্তারকৃত দুই জনের তথ্য মতে নগরীর নন্দনকানন এলাকায় মৃত দিলীয় বড়ুয়ার ছেলে বাটুল বড়ুয়াকে (৩৮) ও গ্রেপ্তার করা হয়। তবে অভিযানের খবর পেয়ে দুই জন পালিয়ে যায়। তাদেরকে আইনের আত্ততায় আনতে অভিযান চলছে বলে জানায় পুলিশ।
নগরীর কোতোয়ালী থানার ওসি মো. মহসিন বলেন, কোনো প্রতিষ্ঠান চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের এলাকায় ব্যবসা করতে না দেয়ারও হুমকি প্রদান করে এ চক্রটি। এই চাঁদার বিষয়ে পুলিশকে অভিযোগ দিলে সংঘবদ্ধ এই প্রতারক চক্রের তিনজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। যেহেতু মুজিব বর্ষের অনুষ্ঠানসহ বিভিন্ন কার্যক্রম সাধারণ মানুষের অস্তিত্বেও সাথে জড়িয়ে আছে, তাই মুজিব বর্ষের নামে কেউ অনৈতিক কাজ করলে ছাড় দেয়া হবে না।
নগরীর কোতোয়ালী থানায় মধুসূদন দাশ বাদী হয়ে পাঁচ জনের নামেই মামলা করা করেছে।