পুলিশের বাসায় কাজ করতাম : সেখানে আমাকে শুধু মারপিট করতো!
আসাদুল ইসলাম সবুজ, লালমনিরহাট: পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রীর হাতে লালমনিরহাটের শিশু গৃহকর্মী হাসিনা (৭) শরীরে অমানুষিক নির্যাতনের চিহ্ন আজও কাঁদছে। নির্যাতনের শিকার শিশু গৃহকর্মী হাসিনাকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশু গৃহকর্মী হাসিনা লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার গোড়ল ইউনিয়নের শিবরাম বলায়েরহাট এলাকার হতদরিদ্র হাছেন আলীর মেয়ে। আদিতমারী উপজেলার সঠিবাড়ি গ্রামে নানীর সাথে থাকত ওই শিশুনির্যাতনের শিকার শিশুর পরিবার ও হাসপাতাল সুত্রে জানা গেছে,
এক বছর আগে আদিতমারী উপজেলার তালুক দুলালী গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে পুলিশ পরিদর্শক আজহার আলী সুমন তার ঢাকার বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে হাসিনা বেগমকে নিয়ে যান লেখাপড়া করাবে বলে। তাকে নেয়ার পর থেকে গত এক বছরে পরিবারের সাথে কোন যোগাযোগ করতে দেয়া হয়নি।কারণে অকারণে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করেন।একপর্যায়ে রোববার (২৯ আগস্ট) অপরিচিত একজন পুলিশ কনস্টবল ও তার ড্রাইভারের মাধ্যমে অসুস্থ শিশু গৃহকর্মী হাসিনাকে তার বাড়িতে পাঠান ওই পুলিশ পরিদর্শক। বাড়ি পৌঁছে তার ওপর নির্যাতনের লোমহর্ষক বর্ণনা দেয় শিশু হাসিনা।
তার সারা শরীরের নির্যাতনের চিহ্ন রয়েছে। পরিবারের লোকজন অসুস্থ শিশু হাসিনাকে রাতেই লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। এ ঘটনায় মামলা দায়ের করা হবে বলেও জানান ওই শিশুর পরিবার।
অসুস্থ হাসিনা বলেন, পুলিশ পরিদর্শক আজহার আলী সুমনের বাসায় কাজ করতাম। সেখানে তারা আমাকে শুধু মারপিট করত, খুব কষ্ট দিতো।
বাড়ির কারো সাথে কথাও বলতে দেয়নি। রোববার ওই থানার একজন পুলিশের সাথে বাড়ি পাঠিয়েছেন আজহার আলী। তবে ওই পুলিশ কর্মকর্তা ঢাকার কোন থানায় কর্মরত তা জানা যায়নি।
লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গোলাম মোর্শেদ দোলন বলেন, শিশু হাসিনার শরীরে পুরাতন ও নতুন আঘাতের অনেক চিহ্ন রয়েছে। এসব চিহৃ এক বছরের মধ্যে হবে বলে ধারনা করা হচ্ছে। চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে সে আশঙ্কামুক্ত রয়েছে।
এ বিষয়ে পুলিশ কর্মকর্তা আজহার আলী সুমনের বক্তব্য পাওয়া সম্ভব হয়নি।
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের খবরটি আমি জেনেছি। খুবই দুঃখজনক ঘটনা, তবে ঘটনাস্থল যেখানে সেখানেই আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।