ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি ॥ পাবনার ঈশ্বরদীতে যৌতুকের দাবীতে এক গৃহবধুকে পিটিয়ে হত্যা করার প্রতিবাদ ও হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবীতে সংবাদ সম্মেলন ও বিােভ সমাবেশ করেছে নিহত গৃহবধুর পিতা-মাতাসহ আত্মীয়-স্বজনরা। শনিবার সকালে ঈশ্বরদী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল চত্বরে এই কর্মসূচী পালন করা হয়। এর আগে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন নিহত গৃহবধু রিনা খাতুনের মা মোছাঃ মোমেনা খাতুন। সে সময় নিহত গৃহবধু রিনার বাবা মোঃ মিজানুর রহমানসহ তার আত্মীয়-স্বজনরা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে মোমেনা খাতুন জানান, গত ৬ বছর পূর্বে ঈশ্বরদী উপজেলার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের ট্রাফিক মোড় এলাকার মোঃ মিনারুল ইসলামের ছেলে মোঃ হৃদয় হোসেন বিপুলের সাথে তার মেয়ে মোছাঃ রিয়া খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র দেওয়া হলেও মন ভরেনি পাষাণ স্বামী হৃদয় হোসেন বিপুলের। যৌতুকের জন্য প্রায়ই বিপুল তার মেয়ে রিয়াকে মারধর করতো। গত ০৪ ফেব্র“য়ারী তারিখে আবারও ১০ লাখ টাকা যৌতুকের জন্য বিপুল রিয়াকে বেধড় মারপিট ও শ্বাসরোধ করে ঘরের ডাবের সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখে। খবর পেয়ে স্থানীয় প্রতিবেশীরা এগিয়ে গেলে তড়িঘরি করে রিয়াকে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করে। খবর পেয়ে আমরা ওই বাড়িতে গেলে তারা পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত করে। সকল আইনী প্রক্রিয়া শেষে আমার মেয়ের লাশ দাফন সম্পন্ন করে মামলার জন্য থানায় আসলে পুলিশ মামলা নিতে অপারগতা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে পাবনা আদালতে মামলা দায়ের এবং আসামীদের গ্রেফতারের জন্য ঈশ্বরদী থানা পুলিশকে নির্দেশ দিলেও অদৃশ্য কারণে পুলিশ নিরব ভূমিকা পালন করে।
লিখিত অভিযোগে নিহত গৃহবধু রিয়ার মা মোমেনা খাতুন আরও অভিযোগ করেন, সম্প্রতি মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঈশ্বরদী থানার এস আই নূরে আলমকে সাথে নিয়ে আসামীদের বাড়ি চিনিয়ে দেওয়া সত্বেও তিনি তাদের গ্রেফতার করেননি। উপায়ন্ত পুলিশ চলে যাওয়ার কিছুণ পরই আসামীরা বাড়ি থেকে বের হয়ে এসে আমাদের মামলা তুলে নিতে উল্টো নানা ধরণের হুমকি দিচ্ছে। ঘটনার নেপথ্যে দাশুড়িয়ার এক প্রভাবশালী পরিবহন শ্রমিক নেতা কাজ করছেন বলেও জানান তারা। পরে ঘটনাটি পুলিশের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে তারাও বিষয়টি নিয়ে চরম গড়িমসি করছে। এসব কারণে আসামীরা প্রকাশ্যে এলাকায় বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। তারা অবিলম্বে আসামীদের গ্রেফতারের দাবী জানান।
আয়োজিত কর্মসূচীতে নিহত গৃহবধুর মা-বাবা সহ আরও উপস্থিত ছিলেন মামা সেলিম রেজা, ভাই তারেক হোসেন, মাহফুজ হোসেন, চাচী ফিরোজা বেগম ও শহিদা বেগমসহ শতাধিক এলাকাবাসী।
