সময় বেশি লাগায় নৌপথে কন্টেইনার পরিবহনে অনীহা

চট্টগ্রাম: বিগত বছরগুলোর তুলনায় নৌ-পথে কন্টেইনার পরিবহনের প্রবৃদ্ধি বাড়লেও নানা জটিলতার কারণে সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও এ সুযোগ সঠিকভাবে কাজে লাগানো যাচ্ছে না। ২০১৮ সালের তুলনায় ২০১৯ সালে ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হিসাবে সাড়ে ২৭ হাজার কন্টেইনার পরিবহন হয়েছে নৌ-পথে। তার বিপরীতে সড়ক পথে কন্টেইনার পরিবহন হয়েছে প্রায় ২৭ লাখ। নৌ পথে কন্টেইনার পরিবহনে খরচ কম হলেও সময় বেশি লাগছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে আমদানি পণ্য তিনটি পথে বিভিন্ন গন্তব্যে পাঠানো হয়। এর মধ্যে বন্দরের তথ্য অনুযায়ী, ৯৬ শতাংশ পণ্য পরিবহন হয় সড়ক পথে। সেই তুলনায় নৌ-পথে ১ শতাংশেরও কম। ২০১৯ সালে সর্বমোট ২৭ হাজার ৪৭৭ টিইউএস কন্টেইনার নৌপথে ঢাকার পানগাঁও বন্দরে পাঠানো হয়েছে। যা তার আগের বছরে ছিল ২২ হাজার ৫০৮ টিইউএস। ট্যারিফ কমানোর পাশাপাশি ব্যবসায়ীদের নানাভাবে প্রণোদনা দেয়ার কারণে এ প্রবৃদ্ধি বলে মনে করছেন বন্দর কর্মকর্তারা।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মোহাম্মদ ওমর ফারুক বলেন, ব্যবসায়ীরা তাদের সুবিধার্থে সড়ক পথটা ব্যবহার করছেন। এক্ষেত্রে চট্টগ্রাম বন্দরের প্রণোদনা দেয়া ছাড়া আর কিছুই করার নেই। কেননা কন্টেইনার গন্তব্যস্থল পানগাঁও দিতে হয় ব্যবসায়ীদের।
২০১৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ৩টি জাহাজ দিয়ে চট্টগ্রাম বন্দর থেকে পানগাঁওয়ে কন্টেইনার পাঠানোর কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু গত ৬ বছরে পরিবহন হয়েছে মাত্র ৮১ হাজার ৬০০ টিইউএস কন্টেইনার। ব্যাপক সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও নানা জটিলতার কারণে ব্যবসায়ীরা নৌপথে কন্টেইনার পরিবহনে আগ্রহী হচ্ছেন না।
চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মোহাম্মদ মাহবুবুল আলম বলেন, নৌ-পথে সময় অনেক বেশি লাগে। সেই সঙ্গে সময়ানুযায়ী যদি মাল ডেলিভারি না দিতে পারে তাহলে ক্ষতি হয়ে যায়।
তবে কন্টেইনার পরিবহনের জাহাজের কাঠামো নিয়েও রয়েছে নানামুখী সমস্যা। উন্নত দেশগুলোতে অভ্যন্তরীণ রুটে কন্টেইনার পরিবহনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয় ফ্ল্যাট বটম শিপ। কিন্তু বাংলাদেশে পুরাতন মডেলের জাহাজ ব্যবহার হওয়ায় ভাটার সময় সন্দ্বীপ চ্যানেলে গিয়ে জাহাজগুলো আটকা পড়ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য মোহাম্মদ জাফর আলম বলেন, নৌ-পথে অনেক খরচ কম। এবং দূষণও কম হয়। সেই সঙ্গে রাস্তার ক্ষতিও কম হয়। যদি নৌ-পথটা কার্যকর করতে পারি তাহলে সড়কে চাপ কমে যাবে। এবং রাস্তাও কম ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এখন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ রুটে কন্টেইনার পরিবহনের জন্য ১৩টি জাহাজ বন্দরের তালিকাভুক্ত রয়েছে। এর মধ্যে ৮টি জাহাজ নিয়মিত কন্টেইনার পরিবহন করছে।