রায়পুরায় টেঁটাযুদ্ধে দুজন নিহত হওয়ার ঘটনায় থানায় হয়নি মামলা
আশিকুর রহমান, নরসিংদী :-নরসিংদীর রায়পুরার দূর্গম চরাঞ্চল চাঁনপুর ইউনিয়নে দুই পক্ষের টেঁটাযুদ্ধে দুজন নিহতের ঘটনায় এখনও পর্যন্ত থানায় হয়নি কোনো মামলা। ৪৮ ঘন্টা পেরিয়ে গেলেও লিখিত অভিযোগ নিয়ে থানায় আসেনি কেউ। তবে নিহত স্বজনদের সাথে যোগাযোগ রয়েছে বলে জানিয়েছেন রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ।
২১ মার্চ (শুক্রবার) সকালে উপজেলার চাঁনপুর ইউনিয়নের দূর্গমচরাঞ্চল মোহিনীপুর গ্রামে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দুইপক্ষের টেঁটাযুদ্ধের ঘটনা ঘটে। এ সময় মোহিনীপুর গ্রামের মোঃ খোরশেদ মিয়ার ছেলে আমিন মিয়া (২৩) এবং আবদুল বারিক মিয়ার ছেলে বাশার মিয়া (৩৫) সহ দুইজন নিহত হন। এছাড়াও কমপক্ষে ১০ জন গুরুত্বর আহত হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
নিহত স্বজন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘদিন ধরেই আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে স্থানীয় ইউপি সদস্য সামসু মিয়ার সঙ্গে বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম মিয়ার দ্বন্দ্ব চলছিল। প্রায়ই দুপক্ষের অনুসারীরা টেঁটাযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন। গত ৬ মাস আগে টেঁটাযুদ্ধের মাধ্যমে পরাজিত করে আবদুস সালাম লোকজনকে গ্রাম বিতাড়িত করেন সামসু মিয়ার লোকজন।
ঈদকে সামনে রেখে শুক্রবার ভোরের দিকে আব্দুস সালামের লোকজন দলবেঁধে গ্রামে প্রবেশ করেন। তাদের প্রবেশ ঠেকাতে বাঁধা হয়ে দাঁড়ান প্রতিপক্ষ সামসু মিয়ার লোকজন। এ সময় দুপক্ষের সমর্থকরা বন্দুক, টেঁটা, বল্লম, দা, ছুরি নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। ভয়াবহ এই যুদ্ধে আবদুস সালাম গ্রুপের দুজন গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান। মুক্তিযোদ্ধা আবদুস সালাম ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। অপরদিকে সামসু মিয়া ইউপি সদস্য এবং একই ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি। এঘটনার পর থেকেই গ্রেপ্তার আতঙ্কে পুরো এলাকা পুরুষশূন্য হয়ে পড়ে। শুক্রবার রাতে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হলেও মর্গ থেকে দুজনের লাশ গ্রামে আনা হয় শনিবার সকালে। স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি ও স্বজনদের সঙ্গে আলোচনা শেষে মামলা করতে থানায় যাবেন নিহত পরিবারের সদস্যরা।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, হতাহতের পরিবারের সাথে যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। আজ রবিবার সন্ধ্যায় তারা তাদের আইনজীবীর মাধ্যমে এজহার লিখে থানায় নিয়ে আসবে। তিনি আরও বলেন, আসামী গ্রেপ্তার ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ তৎপর রয়েছে।