বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় ৫৮ দিনের জন্য মাছ ধরায় নিষেধাজ্ঞা
বাংলাদেশ সরকার সামুদ্রিক মাছের সুষ্ঠু প্রজনন, উৎপাদন এবং সংরক্ষণের লক্ষ্যে নতুন সময়সূচি অনুযায়ী মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। চলতি বছর থেকে প্রতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত মোট ৫৮ দিন দেশের সামুদ্রিক জলসীমায় সব ধরনের মৎস্য নৌযান দ্বারা মাছ আহরণ সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে।
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এই সিদ্ধান্তের মূল উদ্দেশ্য হলো সমুদ্রে মাছের প্রজনন নিশ্চিত করা, সামুদ্রিক মৎস্যসম্পদ সংরক্ষণ করা এবং মাছ ধরার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে মৎস্যসম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা বজায় রাখা। সামুদ্রিক মাছের প্রাকৃতিকভাবে বংশবৃদ্ধি ও টেকসই উৎপাদন নিশ্চিত করতে এই নিষেধাজ্ঞা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
এ বছর নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা পরিবর্তন করে ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে, যা প্রতিবেশী দেশগুলোর মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞার সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। পূর্ববর্তী বছরগুলোতে এই নিষেধাজ্ঞার সময়সীমা ২০ মে থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত মোট ৬৫ দিন ছিল। নতুন সময়সূচির মাধ্যমে মাছের প্রজনন ও বৃদ্ধির জন্য আরও উপযোগী পরিবেশ তৈরি হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এই ৫৮ দিন বাংলাদেশ জলসীমায় কোনো ধরনের মাছ ধরার নৌযান চলতে পারবে না। নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়।
শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শেকৃবি) সহকারী অধ্যাপক ও গবেষক মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা সামুদ্রিক মাছের মজুদ রক্ষায় কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। নিষেধাজ্ঞার ফলে সামুদ্রিক জলজ প্রাণীরা নিরবচ্ছিন্নভাবে বংশবৃদ্ধি করতে পারে, যা সামগ্রিকভাবে দেশের মৎস্য শিল্পের জন্য লাভজনক হবে।
সরকার আশা করছে, এই উদ্যোগ সামুদ্রিক মৎস্য সম্পদের টেকসই ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করবে এবং দেশের মৎস্যখাতের ভবিষ্যৎ উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
মোঃ সামিরুজ্জামান
ভোলা প্রতিনিধি