ফেসবুকে মেয়ে সেজে শতাধিক মানুষের টাকা হাতিয়ে নেন তিনি
চট্টগ্রাম: তিনি পুরুষ। কিন্তু ফেসবুকে নিজের পরিচয় দিয়েছেন নারী বলে। ‘রাইসা মেহেজাবিন’ নামে ফেসবুকে নারীর প্রোফাইল বানিয়ে তিনি বন্ধুত্ব করেন বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে। তারপর নিজের অসুস্থতা, মায়ের অসুস্থতাসহ নানা অজুহাতে শতাধিক মানুষের কাছ থেকে হাতিয়ে নেন লক্ষ লক্ষ টাকা।
ফেসবুকে সম্প্রতি এ ভাবেই প্রতারিত হয়ে নগরের কোতোয়ালী থানায় অভিযোগ করেন এক ব্যক্তি। মায়ের অসুস্থতার কথা বলে তার কাছ থেকে ‘রাইসা মেহেজাবিন’ হাতিয়ে নেন ৩২ হাজার টাকা। পরে মায়ের লাশ মেডিকেল থেকে আনতে আরো ২০ হাজার টাকা চেয়ে বসেন। তখন সন্দেহ হলে পুলিশের দ্বারস্থ হন ওই প্রতারিত ব্যক্তি।
এরপর অভিযানে নামে কোতোয়ালী থানার এসআই সজল কান্তি দাশ, এসআই কেএম তারিকুজ্জামান, এসআই আবু কালাম, এসআই ইকবাল ভূঁইয়া, এএসআই অনুপ কুমার বিশ্বাস ও এএসআই রুহুল আমিন।
একপর্যায়ে বুধবার রাতে নগরের বায়েজিদ বোস্তামী থানার টেক্সটাইল এলাকায় বায়েজিদ নগর আবাসিকের রৌদ্রছায়া নামে ছয়তলা একটি ভবনে অভিযান চালিয়ে অভিযুক্ত সুজাউল হককে (২৭) গ্রেপ্তার করে কোতোয়ালী থানা পুলিশের দলটি।
গ্রেপ্তার সুজাউল গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ থানার ফুলবাড়ী এলাকার মৃত আইনুল হকের ছেলে।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, নিজেকে মেয়ে পরিচয় দিয়ে, মেয়ের নামে আইডি চালু করে ৯ বছর ধরে প্রতারণা করে আসছিল সুজাউল। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জানিয়েছেন, মেয়ে সেজে প্রথমবার এক পুরুষের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা চেয়ে পেয়ে যায় সুজাউল। এরপর লোভে পড়ে শতাধিকবার তিনি একই কাজ করেন।
বাবা-মা ও নিজের অসুস্থতার কথা বলে সর্বনিম্ন ৫০০ ও সর্বোচ্চ ৯০ হাজার টাকা পর্যন্ত নিয়েছেন বলে জানান গ্রেপ্তার সুজাউল। তিনি বলেন, গ্রেপ্তার হওয়ার পর আমার মা-বাবা দেখতে আসেনি। নিজেরও খারাপ লাগছে। এবার ছাড়া পেলে সংশোধন হয়ে যাবো।
কোতোয়ালী থানার ওসি মোহাম্মদ মহসীন বলেন, সুজাউল কখনো ভিডিও কলে কথা বলতো না। চ্যাট করে কথা বলতো। মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করার জন্য তার হাজার রকমের কৌশল ছিল।
ফেসবুক ব্যবহারে সতর্ক থাকার তাগিদ দিয়ে সংশ্লিষ্টদের প্রতি ওসি মহসীন বলেন, ফেসবুকে কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করার আগে, কাউকে কোন কিছু দেওয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে যাচাই করতে হবে। ফেসবুক ব্যবহার করে অনেক মিথ্যা ঘটনা, অসত্য তথ্য প্রচার করা হয়, এজন্য সতর্ক থাকতে হবে।