প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটিতে মুজিববর্ষ উদযাপন বঙ্গবন্ধু স্মরণে একটি শ্রদ্ধার্ঘ সংখ্যা প্রকাশ
নোমান বিন খুরশীদ (চট্টগ্রাম): নগরীর জিইসি মোড়স্থ প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটি প্রাঙ্গণে মুজিববর্ষ বা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করা হয়েছে। ১৭ই মার্চ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০ টায় আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু স্মরণে একটি শ্রদ্ধার্ঘ সংখ্যাও প্রকাশ করা হয়। অ নুষ্ঠানে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি ছিলেন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন সমাজবিজ্ঞানী ও শিক্ষায় একুশে পদকপ্রাপ্ত প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. অনুপম সেন। বেলুন উড়িয়ে তিনি অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রফেসর ড. অনুপম সেন বলেন, বাঙালির পরাধীনতার ইতিহাস হাজার বছরের। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটলে বাঙালিরা মনে করেছিল, তারা স্বাধীনতা পেয়েছে। কিন্তু পাকিস্তান রাষ্ট্রের অভ্যুদয়ের পরপর বাঙালির মুখের ভাষা বাংলাকে চিরতরে বিলুপ্ত করার হীন ষড়যন্ত্র শুরু হলে তারা বুঝতে পারল, তারা নতুন করে পশ্চিম পাকিস্তানিদের কাছে পরাধীন হয়েছে। এসময় তারা দেখা পায় এক মহামানবের, যাঁর নাম শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি বাংলা ভাষা আন্দোলনে সম্পৃক্ত হন এবং বাঙালির উপর পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করেন। পশ্চিম পাকিস্তানের তেইশ বছরের শাসনামলে বাঙালির অধিকার আদায়ের জন্য তিনি বহু আন্দোলন-সংগ্রাম করেছেন এবং প্রায় ১২ বছর কারানির্যাতন ভোগ করেছেন। ড. সেন আরও বলেন, ১৯৬৬ সালের ০৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের লাহোরে বিরোধী দলগুলোর সম্মেলনে ৬ দফা ঘোষণা করেন। তিনি মনে করতেন, বাঙালির জন্য সামাজিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক মুক্তি দরকার। তাঁর ঘোষিত ৬ দফা ছিল বাঙালির অর্থনৈতিক মুক্তির সনদ, যার কারণে তিনি আইয়ুব খানের সামরিক শাসনের অন্যতম বিরোধী পক্ষে পরিণত হন। আইয়ুব খান ঘোষণা করেন, শেখ মুজিবকে ৬ দফা প্রত্যাহার করতেই হবে। অন্যথা তাঁকে যুক্তির ভাষায় নয়, অস্ত্রের ভাষায় বোঝানো হবে। তারপর তাঁর বিরুদ্ধে ‘আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা’ দায়ের করা হয়। এর ফল আসে ১৯৭০ সালের নির্বাচনে। বঙ্গবন্ধু নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ বিপুল বিজয় অর্জন করে। তবু বাঙালিকে সরকার গঠনের সুযোগ না দেওয়ায় ৭ মার্চের ভাষণে তিনি ঘোষণা করেন: এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। তারপর দীর্ঘ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বাঙালি অর্জন করে স্বাধীনতা, অর্জন করে বিজয়। ড. সেন উল্লেখ করেন, বাঙালিকে স্বাধীনতা, একটি দেশ ও একটি সংবিধান দেওয়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আজ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের সদস্য মিসেস হাসিনা মহিউদ্দিন ও জনাব বোরহানুল হাসান চৌধুরী, ট্রেজারার প্রফেসর একেএম তফজল হক, ব্যবসা-শিক্ষা অনুষদের প্রফেসর অমল ভূষণ নাগ, কলা ও সমাজবিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোহীত উল আলম, প্রকৌশল ও বিজ্ঞান অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. তৌফিক সাঈদ, ব্যবসা-শিক্ষা অনুষদের সহকারী ডিন এম. মঈনুল হক, প্রক্টর আহমদ রাজীব চৌধুরী, গণিত বিভাগের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইফতেখার মনির, ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের চেয়ারম্যান টুটন চন্দ্র মল্লিক, আইন বিভাগের চেয়ারম্যান তানজিনা আলম চৌধুরী, ইংরেজি বিভাগের চেয়ারম্যান সাদাত জামান খান, অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ফারজানা ইয়াসমিন চৌধুরী। এছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন উপাচার্যের উপদেষ্টা ও প্রধান প্রকৌশলী জনাব মো. আবু তাহের, রেজিস্ট্রার জনাব খুরশিদুর রহমান, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক জনাব শেখ মুহাম্মদ ইব্রাহিম এবং ডেপুটি লাইব্রেরিয়ান জনাব কাউসার আলম প্রমুখ।