পাশাপাশি কবরে চির নিদ্রায় শায়িত হলেন তিনবন্ধু
আশিকুর রহমান, নরসিংদী :-নরসিংদীতে সড়ক দূর্ঘটনায় একসাথে তিন বন্ধুর মৃত্যুর পর তাদেরকে বাঁশের বেড়ায় পাশাপাশি কবরে চির নিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে। অন্ধকার কবরে লম্বা সফর সাথী নেই বাতি নেই,আপনজন বলতে কেউ নেই। নিজ গ্রামে, দাদা-দাদীর কবরের পাশে সমাহিত করা হয় তাদের।
মঙ্গলবার বিকেলে কয়েক হাজার মুসুল্লির অংশগ্রহণে জানাযা নামাজ শেষে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের মির্জাকান্দি নিজ গ্রামে পারিবারিক কবরস্থানে তাদের দাফন করা হয়েছে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সর্বদা হাসি-খুশি, পরোপকারী এবং উদ্দীয়মান ফুটবলার হিসেবে নিজ গ্রাম সহ আশেপাশে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছিল আশিক, সাইফুল ও অপু নামে তিন বন্ধু। তাদের একসাথে মৃত্যুর খবর শোনার পর শোকে স্তব্ধ পুরো ইউনিয়ন। খবর শুনে দূর-দূরান্ত থেকে পুরুষ- মহিলারা ছুটে আসছেন শেষবারের মতো একনজর দেখার জন্য। কেও আসছেন জানাযায় শরিক হতে, আবার কেও আসছেন শোক স্তব্ধ পরিবারকে শান্তনা দিতে। পরিবার-পরিজন ও প্রতিবেশীর কান্নায় আকাশ ভারী হয়ে ওঠছে। নিহত তিন বন্ধুর বাবা-মা বার-বার মোর্চা যাচ্ছিলেন। এসময় এক হৃদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়।
নিহতের স্বজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, মাছিমপুর ইউনিয়ের মির্জাকান্দি গ্রামের তিন তরুন ফুটবল খেলার জার্সি কেনার পর নরসিংদী থেকে বাড়ি ফেরার পথে শিবপুরের বান্ধারদিয়া পাঠান পেট্রোল পাম্পের নিকট আসলে মনোহরদী থেকে ছেড়ে আসা বাসের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ ঘটলে এতে দুই বন্ধু আশিক ও সাইফুল ঘটনাস্থলেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। অপর বন্ধু অপুকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেয়ার পথে দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়। দুর্ঘটনায় তাদের মোটরসাইকেলটি সম্পূর্ণ দুমড়েমুচড়ে যায়। তাদের মৃত্যুর খবর শোনার পর শোকে স্তব্ধ পুরো গ্রাম।
গত ৯ জুন (সোমবার) রাত সাড়ে ১১টার দিকে নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা-মঠখলা আঞ্চলিক সড়কের বান্ধারদিয়া এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা ঢাকাগামী বেপরোয়া গতির বাসের চাপায় পিষ্ট হয়ে মোটরসাইকেল আরোহীর তিন বন্ধু নিহত হন।
নিহত তিন বন্ধু হলেন, শিবপুর উপজেলার মাছিমপুর ইউনিয়নের মির্জাকান্দি এলাকার মৃত জামাল উদ্দিনের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২৫), একই গ্রামের বদু মিয়ার ছেলে আশিক মিয়া (২৩) এবং বাবুল মিয়ার ছেলে অপু মিয়া (২০)।