

পাবিপ্রবি প্রতিনিধি:৫ জুন পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (পাবিপ্রবি) দিবস। ২০০৮ সালের এই দিনে বিশ্ববিদ্যালয়টির আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। দীর্ঘ পথচলায় পাবিপ্রবি এখন দেশের অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান। দিবসটি ঘিরে শিক্ষার্থীদের অনুভূতি, ভালোবাসা ও ভবিষ্যৎ প্রত্যাশা নিয়ে খোলামেলা মতামত উঠে এসেছে।
বিশ্ববিদ্যালয়টি দেশের ২৯তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় এবং ৭ম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বীকৃত। এখানকার ক্যাম্পাস প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ঘেরা এবং শিক্ষার্থীদের জন্য রয়েছে সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন আবাসিক হলের ব্যবস্থা। আরও দুইটি হলের নির্মাণ কাজ শেষ হলেও এখনও চালু করা হয়নি। খুব শীঘ্রই দুইটি হল চালু করা হবে।
পাবিপ্রবি বিভিন্ন বিভাগ ও অনুষদের মাধ্যমে বিজ্ঞান, প্রকৌশল, ব্যবসা, ও মানবিক বিষয়ে উচ্চমানের শিক্ষা প্রদান করে। এটি শিক্ষার্থীদের নৈতিকতা, সৃজনশীলতা, ও উদ্ভাবনী দক্ষতা উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা মনে করেন, পাবিপ্রবি কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়—এটি তাঁদের দ্বিতীয় ঘর, তাঁদের স্বপ্ন বুননের জায়গা। ইলেকট্রিক্যাল, ইলেকট্রনিক এন্ড কমিউনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া ইসলাম বলেন, “পাবিপ্রবি আমাকে আত্মবিশ্বাস ও স্বপ্ন দেখার সাহস দিয়েছে। এই দিনটায় আমরা সবাই গর্বিতভাবে বলি—হ্যাঁ, আমি পাবিপ্রবির শিক্ষার্থী।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা ও প্রযুক্তি শিক্ষায় আরও অগ্রগতি কামনা করেন শিক্ষার্থীরা। কম্পিউটার সাইন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষার্থী জান্নাতুল নাইম জিম বলেন, “আমরা চাই পাবিপ্রবি হোক প্রযুক্তি উদ্ভাবনের কেন্দ্র। গবেষণায় আরও সুযোগ-সুবিধা পেলে আমরা আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশের মুখ উজ্জ্বল করতে পারব।”
পাবিপ্রবি দিবসকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর ক্যাম্পাসে সৃষ্টি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। ব্যানার, ফেস্টুন, র্যালি, ও আলোচনায় মুখর থাকে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকা। বাংলা বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘এ দিনটি শুধু উদযাপনের নয়, বরং এটি তাঁদের আত্মপরিচয়ের দিন। কিন্তু এ বছর কোরবানি ঈদের ছুটি থাকার কারণে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে অবস্থান করছে না। ‘
কিন্তু প্রত্যেকেই তাদের নিজ নিজ জায়গা থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজের বিশ্ববিদ্যালয় সম্পর্কে বিভিন্নভাবে তাদের ভাবনা প্রকাশ করছে।
অর্থনীতি বিভাগের এক শিক্ষার্থী বলেন, “এই দিনটিতে ক্যাম্পাসের প্রতিটি মুখে থাকে হাসি। ডিপার্টমেন্টের সবাই মিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রাঙ্গনে একসাথে মজা করি। বন্ধুরা মিলে সবাই মিলে স্মৃতির জগতে হারিয়ে যাই। এটি আমাদের ভালোবাসার দিন। তবে আমরা চাই, পাবিপ্রবির ১৭ বছরে পদার্পণ উপলক্ষে খুব শীঘ্রই যাতে আমাদের সমাবর্তন এর আয়োজন করা হয়। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের এটি মন থেকে চাওয়া যেন আমরা আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠান দেখে যেতে পারি ”
সমাজকর্ম বিভাগের নবীন শিক্ষার্থী হাসিব মিয়া বলেন, পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে এই বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে আমার চাওয়া গুলো থাকবে যে
” শিক্ষা,গবেষণা, নৈতিকতা ও নেতৃত্ব” এই চার স্তম্ভের ওপর দাড়িয়ে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় দেশের বুকে একটি শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠবে। ১৭ বছর হয়ে গেলেও কোনো সমাবর্তন হয়নি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে, খুব দ্রুত একটি সমাবর্তন হোক এই মিনতি।
গরমের দিনে প্রচন্ড গরমে একটু স্বস্তির ঠাই খোঁজার মতো তেমন গাছ নেই তাই দাবি থাকবে গাছ লাগিয়ে পরিবেশ শীতল থাকে যাতে
যেহেতু এগুলো তৎক্ষনাৎ হবে না তাই আপাতত কিছু ছাউনির ব্যবস্থা করা যেতে পারে যাতে শিক্ষার্থীরা গরম থেকে বাঁচতে পারে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটের কাজ দ্রুত সময়ের মধ্যে সম্পন্ন হোক।
আশা করি এসব সংকট কাটিয়ে উঠে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হয়ে উঠবে বাংলাদেশের অনন্য ও অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের দিন হোক সুন্দর ও সাফল্যমন্ডিত।”
তবে শিক্ষার্থীদের মধ্যে কিছু বাস্তব প্রত্যাশাও রয়েছে—বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিক গবেষণাগার, প্রযুক্তিনির্ভর পাঠদান, আন্তর্জাতিক সংযোগ এবং নিয়োগপ্রাপ্ত শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিও তুলেছেন অনেকে।
শিক্ষার্থীরা মনে করেন, পাবিপ্রবিকে আরও এগিয়ে নিতে প্রয়োজন দায়িত্ববান প্রশাসন, একনিষ্ঠ শিক্ষকগণ ও সচেতন শিক্ষার্থী সমাজ।
এই দিনটি শিক্ষার্থীদের মনে নতুন উদ্যম ও অনুপ্রেরণা জোগায়—নিজেকে গড়ার, সমাজে অবদান রাখার, আর একটি সমৃদ্ধ পাবিপ্রবি গঠনের শপথ নেওয়ার দিন হিসেবেই তারা দেখে ‘৫ জুন’ কে।