পাবনায় প্রসবের সময় নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন

Share the post

রোগীর পরিবার ও হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, পাবনার আতাইকুলা গ্রামের দুবাই প্রবাসী মো. রমজান খাঁর স্ত্রী মোছা. শিউলী খাতুন (৩৫) তৃতীয় সন্তান গর্ভে ধারণ করেছিলেন। গর্ভবতী নারী প্রথম থেকেই পাবনার গাইনি চিকিৎসক শাহীন ফেরদৌস শানুর নিয়মিত রোগী। মঙ্গলবার ভোরে হঠাৎ ব্যথা উঠলে পরিবারের সদস্যরা তাকে দ্রুত ডা. শানুর শহরের বাসার চেম্বারে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক তাকে দেখে অবস্থা জটিল মনে করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেন।

এ সময় রোগীর স্বজনরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে ভর্তির পরে চিকিৎসক দীপা মর্জিনা রোগীকে প্রাথমিক পরীক্ষা করে পেটের বাচ্চা ‘মৃত’ বলে জানিয়েছিলেন। তবে পরিবারের সদস্যদের দাবি, প্রসবের সময় নবজাতকের মাথা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর তাদের জানানো হয়েছে বাচ্চাটি পেটে মৃত অবস্থায় ছিল।এ ঘটনায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালের গাইনি বিভাগের জ্যৈষ্ঠ চিকিৎসক নারগিস সুলতালাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অন্য দুই সদস্য হলেন- হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক (আরএমও) জাহিদ ইসলাম ও গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. ফাতেমা মাসুর।

তদন্ত কমিটির প্রধান গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. নারগিস সুলতালা বলেন, ‘বিষয়টি শোনার সঙ্গে সঙ্গেই আমরা ওই মায়ের পরিপূর্ণ সেবার ব্যবস্থা করছি। ওই নারীর পেটে যে বাচ্চা ছিল, সেটি মৃত অবস্থায় ছিল। মৃত বাচ্চা নিয়েই তিনি এখানে ভর্তি হয়েছিলেন। তার পেটের বাচ্চার বয়স পরিপূর্ণ ছিল না। সবেমাত্র সাত মাসে পড়েছে। ওই নারী গর্ভকালীন থেকেই ডায়াবেটিক, থাইরয়েডের সমস্যায় ভুগছিলেন। তিনি নিয়মিত ইনসুলিন ব্যবহার করতেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘ভুক্তভোগী নারীর পেটে পানির পরিমাণ খুবই কম ছিল। এটি একটি বিরল ঘটনা। পেটে থাকা মৃত শিশুটির বয়স কম হওয়ায় তার শরীরের কোনো কিছুই শক্ত ছিল না। এমনকি ওই শিশুটির মাথার অংশ পেটের ওপরে ও পা নিচের দিকে ছিল। নরমাল প্রসব করানোর সময় সেবিকারা জোরে টান দিলে ঘাড় থেকে মাথা ছিঁড়ে যায়। পরে সিজার করে তার পেট থেকে মৃত শিশুর অবশিষ্ট অংশ বের করা হয়েছে। তবে অসাবধানতায় এটি হয়েছে কিনা তা তদন্ত করে দেখছি আমরা।’

এ ঘটনায় পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. মো. রফিকুল হাসান বলেন, ‘রোগীর অবস্থা এখন ভালো আছে। গাইনি চিকিৎসক নারগিস সুলতানাকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা সাত কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবেন। এরপরে প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’ 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।