

সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা প্রতিনিধি : নেত্রকোনা জেলার দশটি উপজেলায় যে কয়েকটি কাচাঁ বাজার রয়েছে সব কটি বাজারেই কয়েক মাস ধরে বাজারে প্রতিটি কাচাঁ সবজি বিক্রি হচ্ছে অনেক চড়া দামে,যা সাধারণ পরিবার থেকে শুরু করে সম্প্রান্ত পরিবারের ও হাতের নাগালের বাহিরে। নতুন সবজির বাজারে আসার পর দাম কমবে এমন আভাস দিয়েছিলেন বিক্রেতারা। কিন্তু খুব বেশি কমেনি সবজির দাম। শীত পড়তে শুরু করলেও এখনও বেশিরভাগ সবজির দাম আগের মতোই রয়ে গেছে। তবে কয়েক মাস ধরে যেমন চড়া দামে সবজি বিক্রি হয়েছে তার চেয়ে হালকা কিছুটা কমেছে বতর্মান সবজির দাম।
রবিবার (৫ ডিসেম্বর) নেত্রকোনা জেলার বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আগের চেয়ে সবজির দাম কিছুটা কমলেও এখনও রয়েছে চড়া সবজির বাজার।
প্রতিটি বাজারে সিম প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজিতে, গাঁজর ৮০ টাকায়, করলা ৬০ টাকায়, বাঁধা কপি ৪০ থেকে ৫০ টাকায়, ফুলকপি ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, মূলা ৩০ টাকায়, নতুন আলু ৮০ টাকায়, সাধারণ আলু ২৫ থেকে ৩০ টাকায়, বরবটি ৬০ টাকায়, বেগুন ৪০ টাকায়, টমেটো ১০০ টাকায়, ঢেঁড়স ৬০ টাকায়, শসা ৪০ টাকায়, পেঁপে ৩০ টাকায়, শালগম ৬০ টাকায়, পটল ৫০ টাকায়, পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় এবং ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১০৫ টাকায়।
নেত্রকোনা জেলা শহরের মাছুয়া বাজারে রবিবার (৫ ডিসেম্বর ) দিন বাজার করতে এসেছিলেন বেসরকারি চাকরিজীবী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি বলেন, শীত প্রায় চলে এসেছে তবু বাজারে সবজির দাম কমেনি। দুই-একটা ছাড়া বেশিরভাগ সবজির দাম এখনও ৫০ টাকার বেশি। অন্য বছরগুলোতে এ সময় সবজির দাম বলতে গেলে প্রায় অর্ধেক ছিল। গত পাঁচ/ছয় মাস ধরে অতিরিক্ত দামে সবজি কিনতে হচ্ছে আমাদের। সবাই বলেছিল শীত পড়তে শুরু করলে এবং নতুন সবজি উঠলেই দাম কমে যাবে। কিন্তু এখনও চড়া দামেই সবজি বিক্রি হচ্ছে। আগের চেয়ে কিছুটা দাম কমেছে এ কথা ঠিক, তবে তা খুব বেশি কমেনি। অন্য বছরের তুলনায় এখনও বেশি দামেই সবজি বিক্রি হচ্ছে বাজারে।
একই অভিযোগ করলেন বাজার করতে আসা ব্যাংক কর্মকর্তা সজিবুর রহমান। তিনি বলেন, শীতের সবজি ফুলকপির পিস এখনও ৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। পটল, বরবটি, ঢেঁড়স এখনও ৬০ টাকা কেজিতে কিনতে হচ্ছে। তাহলে সবজির দাম কমল কোথায়, শীতের সময় শুরু হয়ে গেছে। এ সময় সবজি অর্ধেক দামে বিক্রি হওয়ার কথা। তবুও দাম চড়া। অন্যবার এ সময় এসে ঠিকই কম দামে সবজি পাওয়া গেছে। এ বছর সেই তুলনায় সবজির দাম কমেনি। শুরুতে সিম বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকা কেজিতে। সেই হিসেব করলে সিমের দাম এখন কমে ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কিন্তু শীতের এ সবজি এখন ৩০/৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হলে স্বাভাবিক বা দাম কম আছে বলে মনে হতো। কিন্তু এটি আমাদের কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকায়। যা আমাদের মতো নিম্নআয়ের মানুষের জন্য চড়া বলতে হবে।
সাতপাই রেল ক্রসিং সংলগ্ন একটি কাঁচা বাজারের সবজি বিক্রেতা এরশাদ আলীর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাঁচ/ছয় মাস ধরে সবজির যে দাম গেছে সেই তুলনায় সব সবজির দামই কিছুটা কমেছে। তবে অন্য বছরে শীতের শুরুতে যেমন বাজার থাকে সেই তুলনায় এখনও সবজির দাম একটু বেশি। পাইকারি বাজারে আমাদের বেশি দামে কেনা পড়ছে তাই খুচরা বাজারে আমাদেরও একটু বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। নতুন সবজি উঠলে দাম আরও কমে যাবে।
এই দাম তখন আর থাকবে না। তখন আর কোনো অসুবিধা হবেনা কারোই।
এ বিষয়ে নেত্রকোনা জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোঃ শাহ আলম জানান, আমরা প্রতিদিনেই জেলার সব গুলো বাজার মনিট্রনিং করছি এবং যেখান থেকেই খবর পাচ্ছি সেখানেই ছুটে যাচ্ছি এবং প্রমাণ পেলে তাৎক্ষণিক মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে তাদের জরিমানা করছি।
নেত্রকোনা জেলা প্রশাসক কাজি আবদুর রহমান এই প্রতিনিধিকে বলেন, নেত্রকোনার সকল বাজারেই প্রতিদিন আমাদের জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা মনিট্রনিং করছে, এবং প্রতিটি বাজারের কাচাঁ বাজার সহ সব কিছুরেই দাম যাতে শিথিল থাকে তার জন্যে আমাদের প্রশাসনের কর্মকর্তারা মাঠে কাজ করছে। এবং মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে যারা চড়া দামে দ্রব্যমূল বিক্রি করছে তাদের শাস্তি ও জরিমানার ব্যবস্হা করছে। এবং প্রতিটি বাজারেই আমাদের প্রশাসনের নজর ধারি রয়েছে।