নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে ১৬ বছরে শত শত কোটি টাকার লুটপাট
সোহেল খান দূর্জয় নেত্রকোনা : নেত্রকোনায় আওয়ামী লীগের নাম ব্যবহার করে ১৬ বছরে শত শত কোটি টাকার লুটপাট করেছে আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা, করেছে ক্ষমতার অপব্যবহার, বিশেষ রিপোর্টে উঠে এসেছে তাদের ১৬ বছরের নানান ইতিহাস, এদিকে নেত্রকোনা জেলার পাঁচটি আসনের সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, নেত্রকোনা জেলার পাঁচটি সংসদীয় আসন ২০০৮ থেকে আওয়ামী লীগের দখলে চলে যায়, তখন থেকেই এই জেলার পাঁচটি আসনে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে করেছে লুটপাট, চোরাকারবারি,জমি দখল সহ বিভিন্ন অপকর্ম, আরও জানা গেছে,২০০৮ সালে নেত্রকোনা-১(কলমাকান্দা ও দূর্গাপুর) আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পান মোস্তাক আহমেদ রুহি, এবং বিপুল ভোটে জয়ী হন, তার আমলে নেত্রকোনা-১ কলমাকান্দা ও দূর্গাপুর উপজেলায় কিছু উন্নয়ন হলেও তার নাম বিক্রি করে এই অঞ্চলে হয়েছে ব্যাপক চোরাচালান, ও বিভিন্ন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শত শত কোটি টাকার লুটপাট, তাই তিনি ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন, তার পরিবর্তে এই আসনে তখন আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান কেন্দ্রীয় কৃষক লীগের সহ-সভাপতি ছবি বিশ্বাস, এবং তিনি ও বিপুল ভোটে জয়ী হন, এবং তিনি ও এই আসনে চোরাচালানের রাজত্ব কায়েম করেন, এবং সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে শত শত কোটি টাকা আত্মসাৎ করেন, তখন তার বিরুদ্ধে নেত্রকোনা থেকে প্রকাশিত স্হানীয় একটি পত্রিকায়, ছবি আছে বিশ্বাস নেই এই শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তখন থেকেই তার বাটা পরে এবং তিনি ও ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন, এবং তার পরিবর্তে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান তারেই ভগ্নিপতি শেখ হাসিনার ভ্যানগার্ড মানু মজুমদার, তিনি ও ব্যতিক্রম কিছু নয়, তিনি এই আসনে তার সমর্থনকারীদের সহযোগিতায় সরকারের শত শত কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে হাতিয়ে নেন, এবং২ ২০২৪ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন, এবং এই আসনে আবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান সাবেক এমপি মোস্তাক আহমেদ রুহি।
অন্যদিকে নেত্রকোনা-২(নেত্রকোনা সদর-বারহাট্টা) আসনের চিত্র একেই রকম এই আসনে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান আশরাফ আলী খান খসরু এমপি, তখন তিনি তার নির্বাচনী এলাকায় দৃশ্যমাণ তেমন কিছু করতে না পারলে ও তার কর্মী বাহিনী ও তার স্ত্রীর বেপরোয়া অর্থ বাণিজ্য এবং লুটপাট চরম আকার ধারণ করায় তিনি ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হন, এবং সেখানে তার পরিবর্তে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক আরিফ খান জয়, তিনি ও তার কর্মী বাহিনী ও তার ভাইদের অপকর্মের জন্য তিনি ও আবার ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন থেকে বঞ্চিত হন এবং এই আসনে আবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান সাবেক এমপি আশরাফ আলী খান খসরু, এবং তিনি এমপি নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী এবং সমাজ কল্যাণ প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন,এরেই ধারাবাহিকতায় ২০২৪ সালে আবার তিনি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান এবং সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এদিকে নেত্রকোনা-৩(আটপাড়া ও কেন্দুয়া) আসনে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান মঞ্জুর কাদের কোরাইশী এমপি, তিনি ও একেই রকম ভাবে করেছেন এই আসনে একক আধিপত্য বিস্তার যা নিয়ে তার বিরুদ্ধে বারবার বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে,যার কারণে তিনি ও ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হন, এবং সেখানে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ইফতেখার উদ্দিন পিন্টু এমপি, তার আমলে এই আসনে কিছু উন্নয়ন হলেও ২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিলের দাপটে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বঞ্চিত হন, এবং সেখানে অসীম কুমার উকিল মনোনয়ন পান, আর তখন থেকেই তিনি এই আসনে উন্নয়নের নামে লুটপাট করে নিয়ে যান শত শত কোটি টাকা, তার পরও তার বিরুদ্ধে কোনো নেতাকর্মীকে মুখ খুলতে দেখা যায়নি। এই আসনে ২০২৪ সালে আবার তিনিই এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পান, এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবেক এমপি ইফতেখার উদ্দিন পিন্টুর কাছে নৌকা নিয়ে হেরে যান, এবং সেখানে সতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ২০২৪ সালের নির্বাচনে এমপি নির্বাচিত হন ট্রাক প্রতীক নিয়ে ইফতেখার উদ্দিন পিন্টু এমপি, জানা গেছে অসীম কুমার উকিলের দাপটে এই আসনে ত্যাগী আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা পদ বঞ্চিত হয়েছেন।দলে জায়গা করে নিয়েছেন হাইব্রিড আওয়ামী লীগ। আরো জানা গেছে, আওয়ামী লীগের যুব ও মহিলা লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিল এই আসনে উন্নয়নের নামে লুটপাট করে নিয়ে গেছেন শত শত কোটি টাকা।যা এখন মুখ খুলতে শুরু করেছেন এই আসনের সকল জনসাধারণ।